Daily Frontier News
Daily Frontier News

দেশ প্রেম ছিল,আন্তরিকতায় দায়িত্ব পালনে, ডাকাত ধরে পুলিশ কাঁধে করে নিয়ে আসা —-ওসি সোহাগ রানা নাসিরনগর থানা

 

ফ্রন্টিয়ার.নিউজ রিপোর্টঃ-

নাসিরনগর হরিপুরের কুখ্যাত ডাকাত ও মাদক ব্যবসায়ী জীবন কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ।

.   জেলা ব্রাহ্মণবাড়িয়া নাসিরনগর উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের হরিপুর গ্রামের কুখ্যাত ডাকাত ও মাদক ব্যবসায়ী হুসন আলীর ছেলে জীবন (৩৫) কে ২২শে মার্চ ২০২৪ইং রোজ শুক্রবার বিকাল প্রায় ৫ ঘটিকার হরিপুরের ধানি জমির মাঠ থেকে গ্রেপ্তার করেছে নাসিরনগর থানা পুলিশ, এস আই রূপন দেবনাথ এর নেতৃত্বে এ এস আই কামরুল হোসেন সহ সঙ্গীয় ফোর্স জাফর ও রানা দাস, সিভিলটিম টিকটক এর অভিনয় করে।আদালতের গ্রেপ্তারী পরোয়ানা মুলে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জীবন ডাকাত দীর্ঘদিন যাবৎ পলাতক ছিল।কোন মতেই তাকে গ্রেফতার করা যাচ্ছিল না।
.    কুখ্যাত ডাকাত জীবন কে গ্রেপ্তারের পর কোন মতেই তাকে আনা সম্ভব ছিল না। পুলিশের হাতে কামড়, দৌড়ে পালানোর চেষ্টা, মাটিতে শুয়ে গড়াগড়ি, ডাকাত জীবন এর আত্মীয়-স্বজন পুরুষ মহিলার জড়ো হয়ে উশৃঙ্খলতা, মোট কথা অবস্থা বেগতিক ছিল । যে কোন মূল্যে জীবন ডাকাতকে থানায় নিয়ে যেতে হবে। তাৎক্ষণিক পুলিশি কায়দা কানুন ব্যবহার করে এস আই রূপন দেবনাথ এর নেতৃত্বে,ফোর্স জাফর ও রানা দাস এর সহযোগিতায়, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে, এ এস আই কামরুল হোসেন, কুখ্যাত সন্ত্রাসী ডাকাত একাধিক মামলার আসামি জীবন কে এক কিলোমিটার পথ কাঁধে তুলে নিয়ে আসে।

.    ফোর্স জাফর যা বলেন –আমরা আসলে কোন রকম ভাইরাল হওয়ার জন্য করি নাই। দায়িত্ব পালনে গিয়েছি। তৎ সময়ে কামরুল স্যার যদি সেই সময় কাঁধে করে নিয়ে না আসতো, তাহলে ডাকাত জীবন কে কোন ভাবেই থানায় আনা সম্ভব ছিল না। তাই বাধ্য হয়ে কাঁধে করে নিয়ে আসা হয়। ভালো লাগলো মানুষের অনুপ্রেরণা দেখে ।

.    ফোর্স রানা দাস যা বলেন—- আমার হাতে কামড় দিয়েছে। আমি আহত হয়েছি,চিকিৎসা নিয়েছি এখন একটু ভালো। আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ পুরস্কার ঘোষণা করেছে। আমরা চাই আমাদেরকে এভাবে অনুপ্রাণিত করা হওক। জনগণের প্রতি আমাদের একটি কথা, পুলিশকে তথ্য দিন আর সেবা নিন। জনগণের সেবা নিশ্চিত করার জন্য সর্বদা সচেষ্ট থাকব।

.   এ এস আই কামরুল হোসেন যা বলেন —-   জীবন দুর্ধর্ষ ডাকাত তাকে গ্রেপ্তার করা প্রয়োজন।বিশেষ করে এলাকার মানুষের শান্তির জন্য ভালোর জন্য। আমার স্যার জানে জীবন ডাকাত এখানে আছে। জীবনকে গ্রেফতারের পর ওইখানের পারিপার্শ্বিক অবস্থা ভালো ছিল না,তাই কাঁধে করে নিয়ে আসা ছাড়া,
তখন বিকল্প কোন ব্যবস্থা ছিল না, যে কোন মূল্যে ডাকাত জীবনকে নিয়ে আসতে হবে। জীবন ডাকাত কে এখনই এখান থেকে না নিয়ে গেলে পরিবেশ পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাচ্ছে। তাই জীবন ডাকাতকে কাঁধে করে নিয়ে আসি।
আমরা দায়িত্ব পালনে অটল ছিলাম। ডাকাত জীবন সঙ্গীয়দের আহত করে, অনেক চেষ্টা করেছে পালিয়ে যাওয়ার জন্য। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি ডাকাত জীবনের,পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা ব্যর্থ ।

.    নাসিরনগর থানায় কর্মরত এস আই রুপন দেবনাথ যা বলেন—– আদালতের মাধ্যমে একাধিক মামলার আসামি কুখ্যাত ডাকাত ও মাদক ব্যবসায়ী জীবন কে কোর্টে সোপর্দ করা হয়। জীবন ডাকাত প্রেপ্তারের ফলে নাসিরনগর থানা এলাকায় স্বস্তির নিশ্বাস বইছে।২৩শে মার্চ শুক্রবার তথ্য ছিল যে, হরিপুর ইউনিয়নের দুর্ধর্ষ ডাকাত মাদক ব্যবসায়ী জীবন দীর্ঘদিন যাবৎ পলাতক রহিয়াছে। তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি আছে। পরবর্তীতে তথ্য সংগ্রহ করে জানতে পারি যে,হরিপুর ইউনিয়নে ধানি জমি বন্দে পানিসেচ পাম্পে আছে । আমি তাৎক্ষণিক এএসআই কামরুল হোসেন, সঙ্গীয় ফোর্স জাফর ও রানা দাস কে সাথে নিয়ে সবাই সাধারণ পোশাকে ঘটনাস্থলে যাই এবং গতিবিধি লক্ষ্য করি । রানা দাস কে টিক টক এর অভিনয় করে ডাকাত জীবনের কাছে যাওয়ার জন্য বলি এবং সে যায়। তাৎক্ষণিক ডাকাত জীবন কে সনাক্ত করে পুলিশি কায়দা কানুন ব্যবহার করে হাতকড়া লাগালো।কিন্তু ডাকাত জীবন রানার হাতে কামড় দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার জন্য হাতকড়া পড়া অবস্থায় চলে যাওয়ার চেষ্টা করছিল।এরই মধ্যে সঙ্গীয় এ এস আই কামরুল হোসেন, জাফর ঘটনা স্থলে গিয়ে জীবন কে ধরার চেষ্টা করিলে এর এক পর্যায়ে দস্তা-দস্তি হয়। জীবন হাত-কড়া পরা অবস্থায় দৌড়ে যায়। এতে করে জীবন ডাকাত ক্লান্ত হয়ে যায় । এলাকার প্রতিবেশী মহিলারা আত্মীয়-স্বজনরা খুব ভিড় করতে ছিল, যার কারনে কৌশলে জীবন ডাকাত কে আনা সম্ভব হচ্ছিল না। তৎক্ষণাৎ এ এস আই কামরুল হোসেন কে আমি জানাই,যে কোন মূল্যে, জীবন ডাকাতকে নিয়ে যেতে হবে। তখন কামরুল হোসেন জানায়,স্যার কৌশলে নিয়ে যাওয়া সম্ভব না। ডাকাত জীবন কে কাঁধে করে নিয়ে যাই। তখন প্রায় এক কিলোমিটার রাস্তা ডাকাত জীবন কে কাঁধে করে নিয়ে আসে এএসআই কামরুল হোসেন সিএনজিতে উঠায় । এ বিষয়ে স্থানীয় হয়তোবা কেউ না কেউ দেখে ছবি তুলে ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়। আসলে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আদেশ পালন করতে যাই। আমরা যতটুকু সরকারের দায়িত্ব পালন করার । আমরা আমাদের দায়িত্ব পালন করিতেছি। নাসিরনগর থানা অফিসার ইনচার্জ যোগদানের পর থেকেই যখন ডাকাতি, ছিনতাই,চুরি বেড়ে যাচ্ছিল তখন আমাদেরকে একটা সিভিল টীম গঠন করে দেয়। উদ্দেশ্য ছিল ডাকাতি,ছিনতাই চুরি করে, এদের কে আইনের আওতায় আনা। আমরা এপর্যন্ত ১৬-১৭ জন ডাকাত এবং ৬/৭ চোর গ্রেপ্তার করেছি। জীবন ডাকাত ছিল সবচেয়ে দুর্ধর্ষ ডাকাত। হরিপুর ও মাধবপুরের বড় ডাকাত। বাড়ি তার হরিপুর হলেও সে অবস্থান করে বেশি ভাগ সময় মাধবপুর এলাকা। সে আত্মগোপনে ছিল দীর্ঘদিন। সে পালিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা ছিল। তাকে গ্রেপ্তারের পর আনা যাচ্ছিল না বিধায় আমরা সে দিন বাধ্য হয়েই জীবন ডাকাত কে কাঁধে করে নিয়ে আসছি ।
.   সরকারি বৈধ আদেশ পালন করতে গিয়ে অনেক সময় অনেক রকম কৌশল কায়দা কানুন পালন করতে হয়। নিজেদেরকে উৎসাহিত মনে করছি। আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষরা আমাদেরকে উৎসাহিত করছে। এজন্য আমাদের মনোবল ভালো। ভবিষ্যতে আমরা আরো এ কার্যক্রমে অগ্রসর হবো। চাকুরী জীবনে আমরা যখন চাকুরীতে যোগদান করি তখন আমরা সরকারের নিকট প্রতিজ্ঞাবদ্ধ বিদায়,জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আমরা আমাদের দায়িত্ব পালনে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।

.    জনগণ যেন আমাদের প্রতি সন্তুষ্ট থাকে, আমরা সার্বক্ষণিক ডাকাত ও অপরাধী গ্রেপ্তারে নাসিরনগর থানা এলাকার শান্তিপ্রিয় রাখার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করব।আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ যে আদেশ পালন করবে আমরা সেই আদেশ পালন করব।আমাদের এই কাজের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট চাইবো আমাদেরকে যেন আরো উৎসাহিত করে। আমরা যেন ভবিষ্যতে আরো ভালো অগ্রসর হইতে পারি।ডাকাত জীবনের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। বিভিন্ন আইডিতে ব্যবহার করা বিভিন্ন নাম তাই জীবনকে সনাক্ত করে গ্রেপ্তার করতে একটু সময় লেগেছে ২-৩ মাস সময় লেগেছে জীবনের অবস্থান একেক সময় একেক জায়গায় সে অবস্থান করে।এবার জীবন ডাকাত কে গ্রেপ্তার করতে পারি। কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন ইউনিয়নে আমাদের কর্মস্থল ন্যাস্হ করে প্রতিটি থানায়। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আমাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করার জন্য পাঠায়। আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বৈধ আদেশ পালনে সচেষ্ট থাকি। নাসিরনগর থানা এলাকার জনগণ যাহাতে নিরাপদে থাকতে পারে সেইজন্য আমরা সচেষ্ট আছি । কাজের সফলতা পাওয়া সিনিয়র অফিসাররা আমাদেরকে উৎসাহিত করিতেছে।

 

.    ওসি সোহাগ রানা নাসিরনগর থানা যা বলেন—– আমাদের থানায় সকল কার্যক্রমের অংশ হিসেবে নিয়মিত মূল হল আসামি এবং গ্রেফতারি পরোয়ানা ভুক্ত পলাতক আসামি ধরা। ডাকাত জীবনকে ধরা যাচ্ছিল না। পোশাক পরিহিত পুলিশ গেলে ডাকাত জীবন পালিয়ে যায়। যার কারনে সিভিল টিম করে পাঠিয়েছি। পুলিশ কৌশল অবলম্বন করে ডাকাত জীবনের কাছে যায় এবং তাহাকে ধরে হাতকঁড়া পরায়। তখন ডাকাত জীবন আসতে না চাওয়ায়,মাটিতে গড়াগড়ি করিতেছিল। পুলিশ কায়দা কানুন ব্যবহার করে কৌশলে এএসআই কামরুল হোসেন ডাকাত জীবনকে কাঁধে তুলে নেয়। সাথে ছিল ফোর্স জাফর ও রানা দাস,উক্ত টিমের নেতৃত্বে ছিল এসআই রুপন নাথ। তাহারা চার জনের টিম ডাকাত জীবনকে কাঁধে তুলে নিয়ে আসে। যথাযথ প্রক্রিয়া ডাকাত জীবন কোর্টে সোপর্দ করা হয় ।

.     ইহা একটি ভালো কাজ এবং প্রশংসার দাবিদার। আমরা প্রত্যেক ভাল কাজ কে অনুপ্রাণিত করি। এই কাজটি যারা করেছে তারা সত্যিই প্রশংসনীয়। এই উপলক্ষে মাননীয় পুলিশ সুপার স্যার ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আমাদের অভিভাবক, তাদেরকে আর্থিক ১০ হাজার টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছে। আমরা প্রতিনিয়ত মাননীয় পুলিশ সুপার স্যারের দিকনির্দেশনায়, অত্র নাসিরনগর থানা এলাকায় দাঙ্গা হাঙ্গামা সহ বিভিন্ন কার্যক্রম নিরসনের লক্ষ্যে প্রতিটি ইউনিয়নে বিট পুলিশের মাধ্যমে অভিযান করে দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করে আসছি। যার ফলশ্রুতিতে গত এক বছর উল্লেখযোগ্য দাঙ্গা নাই বললেই চলে।পাশাপাশি আমরা এলাকায় যারা চোর ছিনতাইকারী আছে, তাদের তালিকা করে আমরা তাদেরকে গ্রেপ্তার করে আসছি। আমাদের এ কার্যক্রম চলমান আছে এবং থাকবে।

.   যারা ভালো কাজ করে,তারা অবশ্যই প্রশংসার দাবিদার, তারা উত্তম এ ভালো কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ,আমরা তাদেরকে অনুপ্রেরণা দিয়ে যাচ্ছি।তাদেরকে বাহবা দিয়ে যাচ্ছি,আশা করি তারা তাদের এই কার্যক্রম অব্যাহত রাখবে।

.    নাসিরনগর থানা বাসী আমাদের প্রতি সর্বদা আন্তরিক,পুলিশের সকল কাজে আন্তরিক ভাবে সাহায্য সহযোগিতা করে থাকে। কারণ জনগণের সাহায্য সহযোগিতা ও তথ্য ছাড়া, একা কোন কাজ করা সম্ভব না। নাসিরনগর বাসীর সহযোগিতার মাধ্যমে আমরা এ কাজ গুলো করে আসছি। তবে নাসিরনগরবাসীকে ধন্যবাদ জানাই। তাহারা আমাদের পাশে থেকে তথ্য উপাত্ত দিয়ে সহযোগিতা করে, আমাদের কাজ করা সহজ করে দিয়েছে। আশা করি নাসিরনগর বাসি আমাদের প্রতি সহযোগিতার হাত অব্যাহত রাখবে।

.    কথা আছে স্বীকৃতি কাজের গতি বাড়িয়ে দেয়। আমরা স্বীকৃতি পেয়েছি। আমাদের মনোবল বৃদ্ধি পেয়েছে। আমরা নাসিরনগরবাসীকে একটি নিরাপদ নাসিরনগর দেওয়ার জন্য, মনে প্রাণে কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের এই প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। নাসিরনগর বাসীর পাশে আছি। সুশৃঙ্খল নাসিরনগর এবং শান্তিপ্রিয় নাসিরনগর উপহার দেওয়ার জন্য, আমাদের উপর যে কর্তব্য অর্পিত দায়িত্ব আছে,তাহা আমরা নিষ্ঠার সাথে পালন করে যাব ।

.    পদক পাওয়ার বিষয়টি আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বিষয়। উনারা বিচার বিশ্লেষণ করে। তবে তাহারা যে কাজটি করেছে, তা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয় কাজ করেছে। ভালো কাজ করেছে এবং দৃষ্টান্তমূলক কাজ করেছে। এই কাজের মধ্যে তাদের যে আন্তরিকতা ছিল, দেশ প্রেম ছিল,তাহা প্রকাশ পেয়েছে।তাহা আসলে অবশ্যই প্রশংসার দাবিদার এই কাজের জন্য।

Daily Frontier News