কাউছার মিয়াঃ-
নরসিংদী জেলা মনোহরদীর চালাকচর বাজারে হয়রত আলীর ছেলে সাজ্জাদ আলী (বাহার) ২০১৯ সালে ২ বছরের জন্য দোকানঘর ভারা দেয় জাকির হোসেন ও তার স্ত্রী রোকেয়া আক্তারের কাছে । সময় শেষ হলে ভারার ডিড এবং এডভান্স এর টাকা বুজে পেয়েও তিন বছর যাবৎ জোরপূর্বক দোকানঘর দখলে রেখেছে জাকির হোসেন ও তার স্ত্রী রোকেয়া আক্তার।
জানাযায়, চন্দনপুর গ্রামের হযরত আলীর ছেলে সাজ্জাদ আলী (বাহার) (৫৩), চালাকচর বাজারে পৈতৃক সম্পত্তির ৪ শতাংশ ভূমিতে টিন সেট মার্কেট আছে। মার্কেটের একটি দোকান একই উপজেলার হাবিজপুর গ্রামের জাকির হোসেন ও তার স্ত্রী রোকেয়া আক্তার ২,৫০,০০০ (আড়াই লক্ষ) টাকা জামানত এবং মাসিক ৭০০০ হাজার টাকা ভাড়া ধার্য্য করে ২০১৯ সালে ২ বছরের জন্য ১০০ টাকার নন জুডিশিয়াল ৩ টি স্ট্যাম্পে ডিট করে ভারা নেয়। চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার তিন মাস আগেই বাহার তার ডিডের টাকা ফেরত দিয়ে ভাড়াটিয়া জাকির ও রোকেয়াকে সময়মত ঘর ছেড়ে দেওয়ার কথা বলে, কিন্তু চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও বিভিন্ন অজুহাতে জাকির গং ঘর ছাড়তে রাজি হয় না বরং বিভিন্ন ভাবে দোকান মালিক বাহারকে হয়রানি করে আসছে।
সরেজমিনে গিয়ে জানাযায়, চালাকচর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের মূল গেইটের সামনে রাস্তার দক্ষিণ পাশে জাকির মিষ্টান্ন ভান্ডার সাইনবোর্ড লাগানো দোকান ও সাথে কেসিগেইট লাগানো ফার্নিচারের দোকান গুলোতে তালা লাগানো। পাশের দোকানদারদের কাছে এই মার্কেটে তালা লাগানো কেন জানতে চাইলে কেউ মুখ খোলেনি। এতে বুঝা যায় রোকেয়া মেম্বারনী ঐ বাজারে কতটা প্রভাবশালী। উল্লেখ্য জাকিরের স্ত্রী রোকেয়া চালাকচর ইউনিয়ন পরিষদের ৭,৮,৯ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য। তার বাড়ি চালাকচর বাজারে হওয়ার কারনে স্থানীয় প্রভাব খাটায়। তার ভয়ে বাজারের কোন দোকানদার তার বিরুদ্ধে কথা বলতে রাজি হয়নি।
এ বিষয়ে সাজ্জাদ আলী (বাহার) বলেন,আমি জাকির ও তার স্ত্রী রোকেয়া আক্তার কে ভাল মানুষ মনে করে একটি দোকান ভারা দিছি কিন্তু তারা এত লোভী লোক জানতাম না। ২০২১ সালে দোকানঘর ছেড়ে দেওয়ার ডিড থাকলেও আজ পর্যন্ত ছাড়ছে না এবং কোন ভারাও দেয় না, শুধু এখানেই শেষ নয় সে ৫ লক্ষ টাকার একটি জাল জামানত ষ্টেম্প বানিয়ে প্রচার করছে আমার কাছে টাকা পায়। আমি স্ব পরিবারে ঢাকায় বসবাস করি, তাদেরকে একটি দোকান ভারা দিয়ে বাকি দোকানে আমার ফার্নিচারের ব্যবসা আছে যা দেখাশোনা করার জন্য সজীব নামের একজন লোক রাখা আছে। রোকেয়া আমাকে হয়রানি করার জন্য গত ২৭/৩/২০২৪ ইং তারিখে আলামিন নামের একজনকে দিয়ে আমার দোকানে গাঁজা রেখে আসতে বলে।আলামিন দোকানে গাঁজার পুটলি রাখতে গিয়ে চালাকচর ইউনিয়ন পরিষদের চৌকিদারের কাছে ধরা পরে। রোকেয়া আক্তার তার লোকজন নিয়ে এসে আলামিন কে ছাড়াইয়া নেয়।এ বিষয়ে আমি চেয়ারম্যান কে অবহিত করলেও তারা কোন সুরাহা দিতে পারেনি। আমি অপারক হয়ে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করি।এতে রোকেয়া ক্ষিপ্ত হয়ে তার ভাই আরিফুল সহ ১০/১২ জন লোক নিয়ে আমার দোকানে ঢুকে আমাকে ও আমার ম্যানেজাররে উপর অতর্কিত হামলা চালায় এবং আমার মাথায় আঘাত করে। শুধু তাই নয় আমাকে টেনে হেঁচড়ে চালাকচর ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে আটকে রাখে। আমি কোন উপায়ান্তর না দেখে ৯৯৯ এ ফোন দিলে পুলিশ এসে আমাকে উদ্ধার করে। পরবর্তীতে আমি ঢাকায় গিয়ে চিকিৎসা গ্রহণ করি। ন্যায় বিচারের আশায় আমি নরসিংদী জর্জ কোর্টে একটি সি আর মামলা দায়ের করি। মামলা নং (২৭৭/২৪) এবং স্থানীয় সরকার বিভাগের মাননীয় সচিব বরাবর একটি অভিযোগ দায়ের করি।
এ বিষয়ে রোকেয়া আক্তার বলেন, আমি সাজ্জাদ আলী বাহারের কাছে লক্ষ লক্ষ টাকা পাই এবং তার ফার্নিচারের ব্যবসার পার্টনার । সে বিভিন্ন সময় আমার কাছ থেকে মোট ১৮ লক্ষ টাকা নিছে তাই পুরো মার্কেটে তালা দিছি টাকা দিলে তালা খুলে দিব।
এ প্রতিবেদক তার কাছে টাকার কোন ডকুমেন্টস আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন শুধু ৫ লক্ষ টাকার ডকুমেন্টস আছে।
এ বিষয়ে চালাকচর ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নং ওয়ার্ড সদস্য কাশেম বলেন,সাজ্জাদ আলী বাহার তার মার্কেটের অর্ধেক গোপনে বিক্রি করে দেয়।
চালাকচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও বাজার কমিটির সভাপতি ফখরুল মান্নান মুক্ত বলেন,যেদিন ঘটনা ঘটেছে সেই দিন আমার খালা ইন্তেকাল করেন, শত ব্যস্ততার মাঝেও আমি পরিষদে এসে সমাধান করার চেষ্টা করি কিন্ত তারা সময় নিয়ে গিয়ে আদালতে মামলা করে,তার পর আমি আর কিছু জানিনা।
Copyright © 2024 Daily Frontier News | Design & Developed By: ZamZam Graphics