Daily Frontier News
Daily Frontier News

রাঙ্গাবালী-ঢাকা লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী ও বাড়তি ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ

 

সজ্ঞিব দাস, গলাচিপা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধিঃ
ঈদ উৎসব শেষ, ছুঁটিও শেষ। এখন কর্মস্থলে ফেরার তাড়া। অনেক মানুষ গ্রামে স্বজনদের সঙ্গে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করে কর্মস্থলে ফিরছেন এখনও। তাই পটুয়াখালীর নৌপথ নির্ভর রাঙ্গাবালী উপজেলার লঞ্চঘাটে ঢাকাগামী যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে।
এ সুযোগে লঞ্চ কর্তৃপক্ষ একদিকে করছে অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহণ, অন্যদিকে নিচ্ছে বাড়তি ভাড়া। যাত্রীদের অভিযোগ, ঈদ পুঁজি করে অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহণে তাদের লঞ্চযাত্রা ঝুঁকিপূর্ণ হচ্ছে। তবে লঞ্চ কর্তৃপক্ষ বলছেন, কোন অতিরিক্ত যাত্রী কিংবা বাড়তি ভাড়া নিচ্ছেন না তারা।
সরেজমিনে উপজেলার প্রধান লঞ্চঘাট ‘কোড়ালিয়া’য় গিয়ে দেখা গেছে, কার আগে কে লঞ্চে উঠবে ঘাটে চলছে সেই প্রতিযোগীতা। আগেভাগে লঞ্চে উঠে একটু জায়গা পাওয়ার আশায়ই এ তড়িঘড়ি যাত্রীদের। কিন্তু রাঙ্গাবালী-ঢাকাগামী লঞ্চে এতই যাত্রী পরিবহণ করা হয় যে তিল রাখার জায়গা নেই। যাত্রীদের অভিযোগ, ধারণ ক্ষমতার চেয়ে বেশি যাত্রী পরিবহণ করা হচ্ছে। আবার ভাড়াও নিচ্ছে বাড়তি। আগের চেয়ে প্রায় দিগুণ ভাড়া নিচ্ছেন তারা। যাত্রীদের এমন অভিযোগের সত্যতা চোখে পড়ে রোববার বিকেলে ওই ঘাটে গিয়ে। যাত্রীর চাপ বেশি থাকলেও লঞ্চ বাড়ানো হয়নি। ঘাটে গিয়ে জানা যায়, প্রতিদিনের মত যাত্রী পরিবহণের জন্য ওইদিন জাহিদ-৮ ও পূবালী-৬ নামক দুইটি লঞ্চ ছিল। তবে সবগুলোরই কেবিন ২-৩ দিন আগেই বুকিং হয়ে গেছে। এত যাত্রী পরিবহণ হয়েছে যে ডেকে তিল রাখার জায়গা নেই।
ঢাকাগামী লঞ্চের যাত্রী মাহাদী হাসান মিরাজী বলেন, ‘কেবিন পেতে হলে দালাল ধরতে হয়। তাও সোনার হরিণ পাওয়ার মত অবস্থা। এই দালাল নির্মূল করার দাবি জানাচ্ছি।’ ঘাটে লঞ্চের অপেক্ষায় থাকা ঢাকায় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত মনির হোসেন বলেন, ‘ভাই আজকে প্রচুর লোক ঘাটে। অথচ লঞ্চ দুইটা। এখন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে লঞ্চে যেতে হবে। অথচ কোন সুযোগ সুবিধাও নেই। ভাড়াও বেশি।’
জানা গেছে, রাঙ্গাবালী-ঢাকা নৌরুটের লঞ্চে আগে ডাবল কেবিন ছিল ২২০০-২৫০০। কিন্তু ঈদকে পুঁজি করে এখন ৪০০০। সিঙ্গেল কেবিন ছিল ১২০০-১৪০০, এখন ২০০০। আর ডেকের ভাড়া ছিল ৩৫০-৪৫০। এখন সেই ডেকের ভাড়া ৫০০-৫৫০ টাকা। প্রায় দিগুণ ভাড়া নিলেও যাত্রী সেবা নেই। বরংচো লঞ্চ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতা ও অসদাচরণের অভিযোগ যাত্রীদের। এদিকে লঞ্চ কর্তৃপক্ষ বলছেন, সরকার নির্ধারিত ভাড়াই নিচ্ছেন তারা। কিন্তু যাত্রীরা বলছেন, আগে নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে যদি কম নিত, তাহলে এখন বেশি নেয় কেন?
লঞ্চযাত্রীরা জানান, এ অঞ্চলের মানুষের ঢাকার সঙ্গে যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম লঞ্চ। রাঙ্গাবালীর সঙ্গে সারাদেশের সড়ক যোগাযোগ না থাকায় নৌপথ নির্ভর সেখানকার মানুষ। সারা বছরই তারা লঞ্চ নির্ভর। করোনা ভাইরাস মহামারির পর এবার ঈদে বিপুলসংখ্যক মানুষ বাড়ি এসেছে। আবার ছুঁটি শেষে গন্তব্যে ফিরছে। এ সুযোগে ভাড়া বাড়িয়েছে লঞ্চ কর্তৃপক্ষ। এনিয়ে যাত্রীদের ক্ষোভ থাকলেও তারা নিরুপায়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বৈরী আবহাওয়ার কারণে সোমবার বিকেলে রাঙ্গাবালী থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে একটি লঞ্চ ছেড়ে যাবে। এ ব্যাপারে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহণ কর্তৃপক্ষ (বিআইডাব্লিউটিএ) এর কোড়ালিয়া-বোয়ালিয়া ঘাটের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর মুহাম্মদ আব্দুস সালাম ভূইয়া (আশিক) বলেন, ‘অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহণ করলে দায়-ভাড় লঞ্চ কর্তৃপক্ষকে নিতে হবে। যাত্রী সেবার জন্য লঞ্চ বাড়াতে আমি কর্তৃপক্ষকে বলেছিলাম।’ তবে বাড়তি ভাড়া নিয়ে তিনি কোন মন্তব্য করেননি।

Daily Frontier News