শিবলী সাদিক খানঃ-
ময়মনসিংহে কোতোয়ালী পুলিশের জব্দকৃত প্রাইভেট কারের সিটের নীচে থাকা অস্ত্রের রহস্য উম্মোচন করতে নানা জল্পনাকল্পনা ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। গণমাধ্যমে জড়িত মেহেদী হাসান নাদিমের প্রাইভেট কার বিজ্ঞ আদালতের আদেশে ১৬ এপ্রিল সোয়া এগারোটায় ময়মনসিংহ কোতোয়ালী মডেল থানায়
জিম্মায় নিতে আসেন, সাথে নিয়ে আসেন ১২/১৪ জন কথিত সংবাদকর্মী। মামলার তদন্তকারী অফিসার এস আই আনোয়ার হোসেন জিম্মানামার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তৈরি করে মালখানার হেফাজতে থাকা চাবি নাদিমকে বুঝিয়ে দিলে তিনি সঙ্গীয়দের গাড়ীর সকল অংশ চেক করতে বলেন এবং সহকর্মীদের নিয়ে প্রাইভেট কারের সামনের অংশে ব্যাটারী পানি চেক করে দরজা খুলে দিলে গাড়ির সামনে পেছনে দরজা খুলে দিলে একাধিক ব্যাক্তি পর্যায় ক্রমে ভিতরে প্রবেশ করতে এবং বাহির হতে দেখা যায়। এক পর্যায়ে ভেতরের সিট উঠানামা করে সিটে নিচে অস্ত্র আছে বলে জানান দেয়। দুরে দাড়িয়ে থাকা পুলিশ কর্মকর্তা অবাক বিষ্ময়ে এগিয়ে এসে আস্ত্রটি কিভাবে এখানে এলো জানতে চাইলে, উপস্থিত গণমাধ্যম কর্মীদের মধ্যে কেউবা বলছেন এটা ষড়যন্ত্র, কেউবা বলছেন পুলিশকে বিভ্রান্ত করতে নাটক তৈরি করা হয়েছে। কেউবা বলছেন পুলিশকে ফাঁসাতে গভীর চক্রান্ত, প্রকৃত রহস্য উদঘাটন করতে থানা পুলিশ অস্ত্রটি জব্দ করে আইনী পরীক্ষা নিরীক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ এবং তদন্তের জন্য সকলের গতিবিধি নিবির পর্যবেক্ষণ ও জিজ্ঞাস্যবাদ করা হবে বলে সূত্রে জানা গেছে।
প্রাইভেটকার সংক্রান্তে জানা যায় যে গত ২৫ ডিসেম্বর/২০২৪ যৌথবাহিনীর অভিযানে বিপুল দেশীয় অস্ত্র-গুলি ও মাদকসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরমধ্যে একজন মেহেদী হাসান নাদিম স্থানীয় দৈনিক জাহান পত্রিকার সম্পাদক এবং বাকি দুইজন তার সহযোগী শামীম মিয়া (২৫) ও আলমগীর কবির (৪৮)।
মাসকান্দা এলাকার বিসিক শিল্পনগরীতে নাদিমের বাসায় অভিযান চালায় যৌথবাহিনী। এ সময় নাদিমের বাসা থেকে এয়ারগানের গুলি, ৭০০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ বিভিন্ন মাদক, অবৈধ পামওয়েল তেলের ৯৯টি ড্রাম, চাপাতি, চাকু, ছুরি, ক্যামেরা, প্রাইভেটকার ও মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়।
একাধিক সূত্রে প্রকাশ পায় যে হাফ ডজনের অধিক মামলার আসামী দফায় দফায় তার হেফাজত থেকে বিপুল পরিমান অস্ত্র ও মাদক উদ্ধারে গ্রেফতার হওয়া মেহেদী হাসান নাদিমের সাজানো নাটকে পুলিশ প্রশাসনকে বিতর্কের মূখে দ্বার করিয়ে দিয়েছে কিনা তা তদন্তের প্রয়োজন। সর্বশেষ মামলায় জামিনে মুক্তি পেয়ে কোর্টের নির্দেশে জব্দকৃত গাড়ী বুঝে নেয়ার প্রায় ঘন্টাখানিক সময় পর ফের তার গাড়ীতে ঝক ঝকে অস্র পাওয়া গেছে। পুলিশকে বিতর্কের মূখে ফেলতে কাঁচা হাতের নাটকিয়তা ফের আসামী হতে পারেন নাদিম ও তার সহযোগীদের কেউ কেউ।
মেহেদী হাসান নাদিম কোর্টের অনুমতি সাপেক্ষে ১২/১৪ জন কথিত সাংবাদিক নিয়ে ১৬ এপ্রিল সোয়া এগারোটায় ময়মনসিংহ কোতোয়ালী মডেল থানায় যান। পরে মামলার তদন্তকারী অফিসারের কাছ থেকে গাড়ীটি বুঝে নেন। এর পরে আধা ঘন্টা খানেক সময় তারা ১০/১২ জন দফায় দফায় কানাঘুষা করে ও গাড়ীর দরজা খোলাখুলি করার পর হঠাৎ একটি ঝকঝকে পিস্তল সীটের নিচে দেখা মিলে। সিসি ফুটেজ পর্যালোচনা করে দেখা যায় নাদিম ও হলুদ রংয়ের গেঞ্জি পরিহিত এক ব্যক্তি একাধিক বার গাড়ীর ভেতরে প্রবেশ করেছে। ধারনা করা হচ্ছে পূর্ববর্তী মামলা থেকে রেহাই পেতেই নাদিমের এই নাটকিয়তা। পুলিশ তাৎক্ষনিক অস্ত্রটি জব্দ করেন এবং সন্দিগ্ধকে আটকের চেস্টা করেন। কিন্তু ততক্ষনে তারা সটকে পড়েন।
পুলিশের একটি সুত্র জানায়, অস্ত্রটি জব্দ করে আইনী প্রকৃয়ায় তা পরিক্ষা নিরিক্ষার জন্য ব্যবস্থা নিয়েছেন।
মেহেদী হাসান নাদিম ময়মনসিংহে স্থানীয় দৈনিক জাহান পত্রিকার সম্পাদক। তার বিরুদ্ধে মাদক ও অস্র আইনে ৭ মামলা রয়েছে।
এর আগে, ২০১৬ সালের ১৭ জানুয়ারি মেহেদী হাসান নাদিম ও তার দুই সহযোগী পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। ওই সময় তার বাসা থেকে পিস্তল, গুলি এবং অস্ত্র তৈরির সরঞ্জাম, বিপুল দেশি অস্ত্র উদ্ধার করে ডিবি পুলিশ। এ ঘটনায় করা মামলা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।
Copyright © 2025 Daily Frontier News | Design & Developed By: ZamZam Graphics