উপজেলা প্রতিনিধি সরাইল
মেয়ের সুখের চিন্তা করে নিজের বাড়ি নির্মাণের জমা টাকা দিয়ে মেয়ের জামাইসহ দেবরকে ৯ লক্ষ টাকা ফেরত মূলে সহযোগিতা করেন উপজেলার চুন্টা ইউনিয়নের বড়বল্লা গ্রামের আব্দুল আজিজ মিয়ার ছেলে আবুল হোসেন।
.
স্থানীয় সূত্রে জানাযায়: ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরাইল উপজেলার চুন্টা ইউনিয়নের বড়বল্লা গ্রামের আবুল হোসেনের মেয়ে ঝুমার সঙ্গে একই গ্রামের নুর ইসলাম এর ছেলে তোফাজ্জল এর ২২/১১/২০২০ইং তারিখে বিবাহ হয়। মেয়ের সুখ শান্তি ও উজ্জ্বল ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে প্রায়ই আবুল হোসেন উদারতা দেখাতেন। মেয়ের শ্বশুর (নুর ইসলাম) তার বেয়াই (আবুল হোসেন) কে হঠাৎ একদিন জানাই আবুল হোসেনের জামাতা সহ মেয়ের দেবরকে একসঙ্গে বিদেশ পাঠাতে চায়, এর জন্য ১২লক্ষ টাকা প্রয়োজন ৩ লক্ষ টাকা ক্যাশ থাকলেও ৯ লক্ষ টাকা জোগাড় হচ্ছে না তাই বেয়াই আবুল হোসেনের সহযোগিতা প্রয়োজন।
.
আবুল হোসেনের দুই ছেলে তানভির/তুমান দীর্ঘদিন যাবত বিদেশে অবস্থান করছে, নিজেদের দালান ঘর নির্মাণের জন্য তাদের বাবা আবুল হোসেনের নিকট প্রায় ১০ লক্ষ টাকা জমা করে। পরবর্তীতে মেয়ের শ্বশুর (নুর ইসলাম) এর কথা শুনে ছেলেদের কষ্টার্জিত টাকা নতুন ঘর নির্মাণ না করে মেয়ের সুখের চিন্তা করে তার বেয়াই নুর ইসলাম এর হাতে বৃহস্পতিবার ১৮ আগস্ট ২০২২খ্রিঃ বিকাল আনুমানিক ৩ ঘটিকার সময় নগদ ৫ লক্ষ এবং একই সময়ে নুর ইসলামের দ্বিতীয় ছেলে মোয়াজ্জেম হোসেনের হাতে ৪ লক্ষ, মোট ৯ লক্ষ টাকা তুলে দেন। দুই ছেলেকে বিদেশে পাঠানোর পরবর্তী এক বছরের মধ্যে নুর ইসলাম জমি বিক্রি করে হাওলাত নেওয়া ৯ লক্ষ টাকা ফেরত দিবে মর্মে অলিখিত মৌখিক অঙ্গীকার করেন। টাকা লেনদেনের সময় হাজী রমজান আলীর ছেলে কাদির মিয়া, মৃত আরু মিয়ার ছেলে খোকন মিয়া,এবং আবুল হোসেনের স্ত্রী মনোয়ারা বেগম সর্ব সাং চুন্টা, বড়বল্লা, সরাইল উপস্থিত ছিলেন।
.
পাওনা টাকা ফেরতের মেয়াদকাল এক বছর পার হলেও আবুল হোসেনের বেয়াই নুর ইসলাম যেন কিছুই জানেন না গাছাড়া ভাব, মেয়ের সুখের চিন্তা করে আবুল হোসেন দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করে আবারও পাওনা টাকার জন্য তাগিদ দেয় তাতেও আশানুরূপ ফলাফল পাওয়া যায়নি, পরবর্তীতে সাক্ষী গণের দারস্থ হোন আবুল হোসেন সাক্ষী গণের তাগিদে নুর ইসলাম পাওনা টাকা ফেরত দিতে আরো কিছু সময় নেন, দ্বিতীয় দফায় আবারও টাকা ফেরত দিতে ব্যর্থ হয় নুর ইসলাম সাক্ষীগণ আবারো তাগিদ দিলে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে বিশ্বাস ভঙ্গ করে পাওনা টাকা আত্মসাৎ করার লক্ষ্যে লেনদেনের বিষয় অস্বীকার করেন।
.
পরবর্তীতে বাদী হয়ে আবুল হোসেন বিজ্ঞ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নুর ইসলাম এবং তার ছেলে মোয়াজ্জেম হোসেন কে আসামি করে ২০/০২/২০২৫ইং তারিখে (যাহার নং- ১৮৫/২০২৫ ( ক্রমিক নং ০২২৯১০৮) ৪০৬/৪২০ ধারা মামলা দায়ের করেন।
.
মামলা দায়ের হওয়ার পর গ্রামের সালিশ কারক সানু মিয়ার মাধ্যমে নুর ইসলাম বিষয়টি আপোষ করতে প্রস্তাব করে এতে সাড়া দিয়ে ০১/০৩/২০২৫ইং তারিখে সালিশ কারক জয়নাল আবেদীন এর সভাপতিত্বে আবুল হোসেনের বাড়িতে দুপুর ২ ঘটিকার সময় এক সালিশ সভার আয়োজন করেন সেখানে পুরো ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে নুর ইসলাম পাওনা টাকা ফেরত দেওয়ার অঙ্গীকার করে এবং এ বিষয়ে তিন দিনের মধ্যে অঙ্গীকারনামা তৈরি করে আনবে বলেও জানান। তবে ৩দিন পর নুর ইসলাম উক্ত সালিশের সিদ্ধান্ত মানে না, যা হবার আদালতে হবে বলে জানান বিবাদী নুর ইসলামের বড় ভাই বরজু মিয়া সহ একই গ্রামের আয়েব আলী, ইউসুফ মিয়া এবং লাল মিয়া। একথা শুনে গ্রামের সালিশ কারকরা নুর ইসলামের বিরুদ্ধে গণস্বাক্ষর প্রদান করেন।
.
এ বিষয়ে মিডিয়া প্রতিনিধিকে বিবাদী নুর ইসলাম জানান: গ্রামের রাস্তা নির্মাণ নিয়ে তার সঙ্গে আমার কথা কাটাকাটি হয় একদিন, অনেকদিন যাবত তার সঙ্গে আমার কথা হয় না, হঠাৎ একদিন জানতে পারলাম আমার নামে ৯ লক্ষ টাকার মিথ্যা মামলা দিয়েছে যার কোন ডকুমেন্ট নাই আমি এর বিচার চাই।
.
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা , নূরনবী বলেন এ বিষয়ে তদন্ত করে টাকা লেনদেনের কোন প্রমাণ পাইনি তবে জানা গেছে তারা একে অপরের আত্মীয় (বেয়াই) রাস্তার মাটিকাটা নিয়ে দুজনের মধ্যে মনোমালিন্য চলছে।
Copyright © 2025 Daily Frontier News | Design & Developed By: ZamZam Graphics