Daily Frontier News
Daily Frontier News

ঈশ্বরদীতে উপজেলা পরিষদে খেলা নিয়ে দফায় দফায় মারামারি ইউএনও শিক্ষার্থী আহত।

 

পাবনা ঈশ্বরদী মোঃ রাকিব বিশ্বাস

 

পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলা পরিষদ কার্যালয় মাঠে গ্রীষ্মকালীন আন্তঃউপজেলা ক্রীড়া প্রতিযোগীতার ফাইনালে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), স্কুল শিক্ষকসহ মোট ৭ জন আহত হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অপরাধে ২ জনকে আটক করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৮অক্টোবর ) দুপুরে দফায় দফায় ঈশ্বরদী উপজেলা কার্যালয় মাঠে আয়োজিত তিনদিন ব্যাপী এ প্রতিযোগীতার শেষ দিনের কাবাডি খেলাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করেন বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীরা।

এ ঘটনায় আহতরা হলেন- ঈশ্বরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুবীর কুমার দাশ, সাঁড়া ঝাউদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক আবুল কালাম, দশম শ্রেণীর ছাত্র মোঃ তৌফিক ইসলাম, মোঃ শুভ, ভাড়ইমারী রিয়াজ উদ্দীন উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর ছাত্র সালমান হোসেন, সিয়াম, রুদ্র হোসেন, নাঈম ইসলাম, স্বাধীন, নবম শ্রেণীর ছাত্র আরাফাত আলী, নাহিদ হোসেন, নূর মোহাম্মদ। খেলা দেখতে এসে হামলার শিকার হয়ে গুরুতর আহত হন ঈশ্বরদী সরকারি কলেজের এইচএসসি (১ম) বর্ষের ছাত্র মোঃ নাঈম ইসলাম।
এ ঘটনায় ধারালো চাকুসহ আটক মো:শিশির উপজেলার পিয়ারপুর এলাকার মো:শাকিল হোসেনের ছেলে।

জানা যায়, গ্রীষ্মকালীন আন্তঃউপজেলার স্কুল, মাদ্রাসা এবং কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহনে দাবা, কাবাডি এবং সাতার প্রতিযোগীতায় অংশ গ্রহনের মধ্যদিয়ে উপজেলায় তিন দিনের ক্রীড়া প্রতিযোগীতার আয়োজন করা হয়। প্রতিযোগিতার আজ শেষদিনের কাবাডি খেলার ফাইনালে অংশগ্রহন করেন উপজেলার সলিমপুর ইউনিয়নের ভাড়ইমারী রিয়াজ উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় এবং সাঁড়া ইউনিয়নের সাঁড়া ঝাউদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। খেলা চলাকালীন সময়ে সাড়া ঝাউদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে ধরে রাখা নিয়ে বিতন্ডা তৈরী হয় দুই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের মধ্যে। বিতন্ডার এক পর্যায়ে সংঘর্ষে রুপ নেয়।
এসময় সাঁড়া ঝাউদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক আবুল কালামকে মারধর করার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা উপজেলার প্রধান ফটক অবরোধ করে নানা স্লোগান দিতে থাকেন। সে সময় বহিরাগত কিছু শিক্ষার্থী লাঠিশোটা হাতে অবরোধ করতে আসলে শিক্ষার্থীরা ভয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়সহ আশপাশের বিভিন্ন ভবনে আশ্রয় নেয়। উপজেলা প্রসাশনের ভবনের কলাপসিবল গেট বন্ধ থাকায় আক্রমনকারীরা অফিসের বাইরের গ্রীল বেয়ে দোতলা এবং তিনতলায় যায় এবং শিক্ষার্থীদের মারধরসহ নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় ভাংচুর করেন। সেসময় সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে পুরো উপজেলা কার্যালয় জুড়ে। এসময় আটক শিশিরের ছুড়ির আঘাতে রিয়াজ উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হন। এর আগে প্রাণ বাঁচাতে তিনি তিন তলা থেকে লাফ দেন।
ঈশ্বরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুবীর কুমার দাশ বলেন, আন্তঃ উপজেলা কাবাডির ফাইনাল খেলায় শিক্ষার্থীদের মাঝে দ্বন্দ্ব হয়েছে। সেই জেরে তারা আমার কার্যালয়ে হামলা ওভাংচুর চালিয়েছে। ধারালো চাকুসহ বহিরাগত এক শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়েছে। তবে উষ্কানি দাতাদের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। এ ঘটনায় রিয়াজ উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক বাদী হয়ে মামলা দায়ের প্রক্রিয়াধীন বলে জানান ইউএনও।
ঈশ্বরদী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো: মনিরুল ইসলাম বলেন, উপজেলায় কাবাডি খেলাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ হয়েছিলো। বহিরাগত কয়েকজন উষ্কানি দিয়ে বিষয়টিকে ছোট থেকে বড় করার চেষ্টা করেছে। তাদের মধ্যে একজনকে ধারালো চাকুসহ আটক করা হয়েছে। এ বিষয়ে মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

Daily Frontier News