Daily Frontier News
Daily Frontier News

নজিপুরে ভূমিদস্যু মোস্তফা ও নুরুলের জালিয়াতিঃ সাপাহারে জোলেখার মৃত্যু

জামাল উদ্দিন স্বপন 

উত্তরবঙ্গের সীমান্তবর্তী নওগাঁ জেলায় জাল দলিল সিন্ডিকেট চক্রের তৎপরতা উদ্বেগজনক। সাবরেজিস্ট্রি অফিসের একটি চক্র মোটা অংকের বিনিময়ে এই কর্মকাণ্ড দীর্ঘ দিন ধরে চালিয়ে আসছে।
প্রকাশ, সাপাহার উপজেলার চৌধুরীপাড়ার বাসিন্দা জোলেখা খানম চৌধুরী এধরনের জালিয়াতি ও প্রতারণার কারণে স্ট্রোক করে মারা যায়। যা এলাকায় ব্যপকভাবে আলোচিত হয়।কিন্তু জোলেখার মৃত্যুর জন্য দায়ী ব্যাক্তিদের আইনের আওতায় আনা এখনো সম্ভব হয়নি।
অনুসন্ধানে জানা যায়, পৈত্রিক সূত্রে প্রাপ্ত জোলেখা চৌ: তার কিছু সম্পদ একমাত্র ছেলে আজিজার রহমান কে তার কন্যা দেলুয়ারার সামনে দান করে, দখলও বুঝে দেন। গত ২১/০১/১৯ তারিখে ৩০৯নং হেবার ঘোষণা দলিল রেজিস্ট্রিও তিনি করে দেন ।
মায়ের প্রদত্ত সমুদয় সম্পত্তি আজিজার রহমানের ভোগ দখলে রয়েছে। ইতিমধ্যে মুনিকুড়া-১৩২, মৌ:,খং১৭৯,০৪দাগে২১২ শতক জামি আম বাগান তৈরির জন্য এর কাছথেকে গত জুন’১৯থেকে , পোরশা থানার (দুয়ারপাল)মি:রুবেল১২বছরের লিজ নিয়ে, আমবাগান করে আছেন।
এরই মাঝে ধামইরহাট উপজেলার খেলনা গ্রামের বাসিন্দা নুরুল ইসলাম এই সম্পত্তি গ্রাসের নীল নকশা করে। তার বিরুদ্ধে এলাকায় বিভিন্ন অপরাধ ও জালিয়াতির সাথে সম্পৃক্তের বহু অভিযোগ রয়েছে। খেলনা স্কুলের শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে দুর্নীতি ও চেক জালিয়াতির অভিযোগে চাকরীচ্যুত হন। ধামুইরহাট থানায় একটি খুনের মামলাও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
নজিপুর বাজারে মাস্টার ট্রেডার্স নামক রড-সিমেন্টের দোকান খুলে সাধারণ মানুষ, এনজিও, ব্যাংক থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে দীর্ঘদিন গা-ঢাকা দিয়েছিলেন তিনি। এই ব্যবসা গুটিয়ে ম্যানেজার হিসেবে যোগ দেন তার পৌত্রা নজিপুর বাজারের গোলাম মোস্তফার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে।
তারপর তালই-পৌত্রা মিলে শুরু করেন জাল-জলিয়াতি ও ভূয়া দলিল সৃজনের সিন্ডিকেট ব্যবসা। জোলেখা চৌধুরী ও তাঁর ছেলের দুর্বলতা ও অসহায়ত্বের সুযোগে বানোয়াট দলিল মূলে রাতারাতি মাণিকুরা মৌজার ২.১২ শ: জমি প্রভাব খাটিয়ে খারিজ করে ফেলে ভূমি দস্যু গো: মোস্তফা। যার নং ৩০৩/২০। সেই সাথে আজিজার রহমানের লিজ দেওয়া ২.১২ শতক আমবাগান সন্ত্রাসী দালালদের মাধ্যমে (দখল না থাকা সত্ত্বেও)বিক্রি ও হুমকির অপচেষ্টা চালায়, এব্যাপারে আমবাগানের লিজ গ্রহীতা রুবেল আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য জিডি সহ অন্যান্য ব্যবস্হা নেন।
বিষয়টি জানাজানি হলে একমাত্র পুত্র আজিজার রহমানের চিন্তায় জোলেখা খানম অসুস্থ হয়ে পড়েন। কাগজপত্র সংগ্রহ করে দেখা যায় সৃজনকৃত ভূয়া দলিলে জুলেখার স্বাক্ষর নাই। ভোটার আইডির সাথে দলিলের ঠিকানার মিল নেই।
জোলেখা চৌধুরী তার ছেলেমেয়েসহ বিষয়টি চ্যালেঞ্জ করে ভূয়া দলিল সৃজন চক্রের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য স্বশরীরে হাজির হয়ে সাপাহার সহাকারী কমিশনার (ভূমি) বরাবর ১৬/০৩/২তাংএও ইউএনও ৬/৪/২২তা্ংএ লিখিত আবেদন করেন।এছাড়াও এই চক্রান্তের প্রতিকার পেতে,মান্যবর মি: আলম চৌধুরী:, মি:মাসুদ সেক্রে: ই: র নিকট হাত ধরে অনুরোধ করেন।
যার প্রেক্ষিতে প্রশাসনিক তদন্ত ও খারিজ (৩০৩/২০) বাতিলের জন্য মিস কেস করা হয়। সহকারী কমিশনার বিষয়টির ULAO তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন। যার স্মারক নং ৩২৩ তাং ৩১/৭/২২। সাপাহার -তিলনা ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম ২৬/১২/২২ তারিখে ৩৩০/২২ স্বারকের এক তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে। ৩০৩/২০নং খারিজ সম্পতি জেল নং ১৩২, মাকিকুড়া মৌজার আরএস ১৭৯ নং খাতিয়ানভূক্ত জমিটি হেবা দলিল মুলে মোঃ আজিজার রহমানকে ভোগ দখলদার মালিক হিসেবে উল্লেখ করা হয়। উক্ত জমিতে আজিজার রহমানের লিজ প্রদত্ত দখলদার রুবেলের আমবাগানের স্বীকৃতি প্রদান করা হয়।
ভূমি দস্যুদের তৎপরতা, জাল দলিল, খারিজ বিষয়ক টেনশন ও একমাত্র ছেলে আজিজার রহমানের হয়রানীর দুশ্চিন্তায় জোলেখা চৌধুরী স্ট্রোকের শিকার হন, উন্নত চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয় রাজশাহী মেজিকেল কলেজ হাসপাতালে। তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতালে মৃত্যুবরন করেন। যা এলাকায় হৃদয় বিদারক পরিবেশ সৃষ্টি করে।
এলাকাবাসী অবিলম্বে জাল দলিল সৃজন সিন্ডিকেট দলের গড ফাদার নুরুল ইসলাম সরকার ও গোলাম মোস্তফার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন ও ভূয়া ৩০৩/২০ নং খারিজটি দ্রুত বাতিলের যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনাকরেন।

Daily Frontier News