Daily Frontier News
Daily Frontier News

চুনারুঘাট নলুয়া চাবাগানে চা শ্রমিক জনগোষ্ঠীর কারাম উৎসব উদযাপন

 

আব্দুল জাহির মিয়া চুনারুঘাট প্রতিনিধি ঃ

হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলায় চা-বাগান জনগোষ্ঠীর প্রাণের উৎসব কারাম উৎসব উদযাপন করেছে নলুয়া চাবাগানের জনগোষ্ঠী।

ঢাকঢোল পিটিয়ে ও পূজা–অর্চনার মধ্যে দিয়ে তাঁরা এ উৎসবে মেতে ওঠেন এই উৎসবের বিভিন্ন আচার–অনুষ্ঠানে বাবা ও ভাইদের মঙ্গল কামনা করা হয়।

শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে চুনারুঘাট উপজেলার নলুয়া চাবাগানে কারাম উৎসব উদ্যাপনের প্রস্তুতি শুরু হয়,দুপুরে শুরু হয় মূল আয়োজন।কারাম উৎসব ভাদ্র মাসের শুক্লপক্ষের একাদশীতে অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।

নলুয়া ফুটবল খেলার মাঠে কারাম ডাল পুঁতে তাতে নানা ধরনের ফুল বেঁধে দেওয়া হয়,প্রদীপ জ্বালিয়ে নানা আয়োজনে চলে এ উৎসব,এতে অংশ নেন নানা বয়সী নারী-পুরুষ। পরে বিকেল সাড়ে ৪ টায় চুনারুঘাট উপজেলার নলুয়া চাবাগান জনগোষ্ঠীর আয়োজনে এ উৎসবে হবিগঞ্জের সুরমা, তেলিপাড়া, সাতছড়ি, বেগম খান সহ ২৪ টি বাগান সহ সকল জনগোষ্ঠীর বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন অংশ নেয়।

ঐতিহ্যবাহী কারাম পূজা উৎসবটি দেখার জন্য চা জনগোষ্ঠী ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সম্প্রদায়ের পাশাপাশি বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ সমবেত হন। উৎসবে তাদের নিজেদের ভাষা,সাংস্কৃতি ও ঐতিহ্য তুলে ধরা হয়। কারাম উৎসব উদ্যাপন কমিটির স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন অবলম্বন এ উৎসবের আয়োজন করে।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কারাম উৎসব উদ্যাপন কমিটির সভাপতি ও বাগান পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি ভুপন্দ্র উড়াং,হরেন্দ্র উরাংয়ের সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য দেন উপজেলা আওয়ামিলীগের সভাপতি এডভোকেট আকবর হোসেন জিতু নালুয়া চা বাগানের ব্যবস্থাপক ইফতেখার এনাম,চুনারুঘাট উপজেলা পরিষদের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আবু তাহের, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাকির হোসেন পলাশ,সিলেট মহানগর হাসপাতালের পরিচালক মাসুদ আহমেদ,করাম উৎসবের উপদেষ্টা কপিল উরাং সহ সাংস্কৃতিক সম্পাদক সুবাশ ঝরা প্রমুখ। কারাম উৎসব উদ্যাপন কমিটির সভাপতি বলেন, ‘কারাম একটি গাছের নাম। চাবাগান জনগোষ্ঠীর মানুষের কাছে এটি একটি পবিত্র গাছ। মঙ্গলেরও প্রতীক। প্রতিবছর বংশপরম্পরায় পালন করা হয় এই পূজা। এ উৎসব ঘিরে প্রতিবছর মুখর হয় চুনারুঘাট উপজেলার চা জনগোষ্ঠী অধ্যুষিত এলাকা। উৎসবে সম্প্রদায়ের লোকজন উপবাস করে কারামগাছের ডাল কেটে আনেন। কারামের ডাল কেটে অস্থায়ী ম-পে পুঁতে রেখে নলুয়া চাবাগানের ফুটবল মাঠে পূজা-অর্চনা আর নাচ-গান ও গল্প বলার মধ্য দিয়ে এই উৎসব শুরু হয়। স্থানীয় সুবাশ ঝরা বলেন, ‘আমরা প্রতিবছর এ উৎসব পালন করে থাকি।এ উৎসবে আমরা অনেক আনন্দ করি। আমাদের নিজের বিপদ থেকে মুক্তির জন্য ও দেশের মানুষের মঙ্গল কামনায় আমরা এ কারাম পূজাটি করে থাকি। আমরা মনে করি এ পূজার মাধ্যমে আমাদের সব বিপদ-আপদ দূর হয়ে যাবে। কারাম পূজা ও সামাজিক উৎসব নিয়ে উপজেলা আওয়ামিলীগের সভাপতি হবিগঞ্জ ৪ আসনের এমপি প্রার্থী এডভোকেট আকবর হোসেন জিতু বলেন, চা-বাগান জনগোষ্ঠীর কারাম পূজাটি ঐতিহ্যবাহী বড় একটি উৎসব। প্রতি বছরে তারা নানা আয়োজনে এ উৎসবটি পালন করে থাকেন।এসময় তিনি দশ হাজার টাকা নগদ প্রধান করেন।

Daily Frontier News