Daily Frontier News
Daily Frontier News

শর্ত সাপেক্ষে খোলা হল সেবা ডায়াগনস্টিক সেন্টার, অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ সেবা ক্লিনিক

 

মিশুক চন্দ্র ভুইয়া
নিজস্ব প্রতিবেদক।

পটুয়াখালী জেলা বাউল উপজেলা শর্ত সাপেক্ষে সাময়িক ভাবে খোলা হল পটুয়াখালীর বাউফল সরকারি হাসপাতালের সামনে অবস্থিত সেবা ডায়াগনস্টিক সেন্টার। তবে অনির্দিষ্টকালের জন্য সেবা ক্লিনিক বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন জেলা সিভিল সার্জন।

বুধবার (৭ই জুন) সকাল থেকে সেবা ডায়াগনস্টিক সেন্টার খোলা দেখে প্রতিবেদক জেলা সিভিল সার্জন কর্মকর্তা এসএম কবির হাচানের কাছে এব্যাপারে জানতে তার মুঠোফোনে কল দিলে তিনি রিসিভ করে বলেন, একাধিক তদবির আসলে শর্ত সাপেক্ষে সাময়িক ভাবে সেবা ডায়াগনস্টিক সেন্টার খোলার নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। তবে সেবা ক্লিনিক অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেবা ক্লিনিকের বিরুদ্ধে আমাদের ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

এপ্রসঙ্গে বাউফল সরকারি হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ পিকে সাহা বলেন, সিভিল সার্জন স্যারের নির্দেশে শর্ত সাপেক্ষে সাময়িক ভাবে শুধু সেবা ডায়াগনস্টিক সেন্টার খোলার নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। আর সেবা ক্লিনিক অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখার নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। তবে যেহেতু সেবা ক্লিনিকের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও কাগজপত্রে সমস্যা রয়েছে এবং তদন্তের রিপোর্ট পেলেই স্যারের নির্দেশে একেবারেই সেবা ক্লিনিক বন্ধ সহ ডায়াগনস্টিক সেন্টারও বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হবে।

এদিকে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মোটা অংকের টাকা দিয়ে পায়ে হাতে ধরে একাধিক তদবির করে সেবা ডায়াগনস্টিক সেন্টার খোলার নির্দেশ নিয়ে এসেছেন কর্তৃপক্ষ।

তবে এব্যাপারে জানতে সেবা ডায়াগনস্টিক সেন্টার এন্ড ক্লিনিক পরিচালক মোঃ মিলন হোসেনের মুঠোফোনে একাধিকবার প্রতিবেদক কল করলেও তিনি রিসিভ করে কথা না বলায় কোনও মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য: উপজেলার কালাইয়া ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের বাহাদুর বয়াতির স্ত্রী ও দাসপাড়া ইউনিয়নের দাসপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মোঃ জালাল প্যাদার মেয়ে আখিনুরকে প্রসবজনিত কারনে গত রোববার (১৪ই মে) বাউফল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। কর্তব্যরত নার্স নরমাল ডেলিভারী করার উদ্যোগ নেন। এরই মধ্যে এক দালাল ও হাসপাতালের নার্স আখিনুর ও তার স্বজনকে ভয় দেখিয়ে দ্রুত সেবা ক্লিনিকে নিয়ে সিজার করার নির্দেশ দেন। ওই দিন সন্ধ্যার পর সেবা ক্লিনিকের অপারেশন থিয়েটারে ডা. সোলায়মান নামের এক চিকিৎসক আখিনুরের সিজার করে একটি কন্যা সন্তানের জম্ম দেন। দীর্ঘক্ষণ পরেও আখিনুরের জ্ঞান ফিরে না আসায় অপারেশন থিয়েটারে থাকা টিম নিশ্চিত হন তার মৃত্যু হয়েছে। পরে তড়িঘড়ি করে সেবা ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ অখিনুরের লাশ উন্নত চিকিৎসার নামে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। এরই ফাঁকে চিকিৎসক ও ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ গা ঢাকা দেন। পরে আখিনুরকে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসকরা স্বজনদের জানান অনেক আগেই তার মৃত্যু হয়েছে।

এদিকে সেবা ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ একদিন ক্লিনিক বন্ধ রাখার পর অলৌকিক ক্ষমতার বলে প্রশাসন কে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে মঙ্গলবার (১৬ই মে) সকাল থেকে পুনরায় ব্যবসা করার জন্য খুলে বসলে উপজেলা প্রশাসন দুপুরের দিকে অভিযান চালিয়ে জরিমানা সহ অনির্দিষ্টকালের জন্য সিলগালা করে দেন।

গত বুধবার (২৪শে মে) দুপুরের দিকে পটুয়াখালী সিভিল সার্জন কর্তৃক ৪ সদস্য বিশিষ্ট একটি টিম তদন্ত করতে এসে প্রথমে সেবা ক্লিনিকে সার্চ চালান। এসময় সিজার অপারেশন কাজে ব্যবহার করার ৫টি ইনজেকশন সহ একাধিক ঔষধ ডেট ওভার পাওয়া যায়। এবং ফ্রিজে রাখা গরুর পচা মাংশ ও মাছ পাওয়া যায়। যা তদন্ত পরিচালনা ও তদন্তকারী প্রধান ডাক্তার কেননং বিষয়টি জানান।

Daily Frontier News