Daily Frontier News
Daily Frontier News

৬ই নভেম্বর ২০২৩ উদ্বোধন হচ্ছে নওয়াব ফয়জুন্নেছা জমিদার বাড়ী যাদুঘর

 

 

কুমিল্লা প্রতিনিধি 

.    তারিখ যতই ঘনিয়ে আসছে,ভূমিদস্যু, অবৈধ দখলদার ও ষড়যন্ত্রকারী হতাশা,উদ্বেগ, উ্যকন্ঠা,ষড়যন্ত্র ততই বেড়ে চলছে।

ইতিমধ্যে জাতীয় জাদুঘরের তত্বাবধানে নতুনরূপে সেজে ওঠেছে উপমহাদেশের প্রথম মুসলিম মহিলা নবাব ফয়জুন্নেছা চৌধুরাণীর জমিদার বাড়ী। ৬ নভেম্বর অনুষ্ঠানিকভাবে যাদুঘর উদ্বোধনের জন্য দিনরাত চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি।

স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো: তাজুল ইসলাম ও সাংস্কৃতিক বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে.এম.খালিদের উপস্থিতির মাধ্যমে এই যাদুঘর উদ্বোধনের সময় সুচী সাজানো হয়েছে।

উল্লেখ্য,দীর্ঘদিন বিভিন্ন জটিলতার কারনে সংস্কার, অযত্ন ও অবহেলার কারনে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে নওয়াব ফয়জুন্নেসার স্মৃতিবিজড়িত পশ্চিমগাঁয়ের বাড়িটি। অধিকাংশ দরজা জানালা উধাও। ১০বছর যাবত পুর্ব দিকের প্রবেশ গেট বন্ধ করে দেয় ভুমিদস্যুরা। বেদখল হয়ে গেছে ওয়াকফ এস্টেটের অনেক জায়গা। লুটপাট হয়েছে অনেক ঐতিহাসিক ও মুল্যবান নিদর্শন। ধীরে বাড়ির ইট বালু খুলে নেওয়ার প্রস্তুতি চলছিলো।
যা স্হানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলামের হস্তক্ষেপে এখন জাদুঘরে রুপান্তিত হচ্ছে।

সরকারের সংস্কৃতিক মন্ত্রনালয়, জাতীয় যাদুঘর, প্রত্বতত্ব অধিতপ্তর এলজিআরডি মন্তীর আহব্বানে সড়া দিয়ে এ ব্যপারে জরুরী পদক্ষেপ নেয়। উন্নয়ন কাজের আগ্রগতি পরিদর্শনে ২৬ অক্টোবর জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ কামরুজ্জামান পশ্চিমগাও নওয়াব বাড়ি পরিদর্শন করেন। পৌর মেয়র আধ্যাপক আবুল খায়ের, বিশিষ্ট সাংবাদিক এম এস দোহা, স্হানীয় ওয়্যার্ড কাউন্সিলর আবু ছায়েদ বচ্চু এ সময় উপস্থিত ছিলেন। নওয়াব
বাড়ির দোতলায় বসবাসরত সৈয়দা রেহেনা হকের পরিবারের সাথেও মহাপরিচালক ও স্হানীয় জনপ্রতিনিধিরা কথা বলেন ।

উল্লেখ্য,গত ৭ অক্টোবর ২০২৩ জাতীয় যাদুঘরের কনফারেন্স রুমে অনুষ্ঠিত হয়। নওয়াব ফয়জুন্নেসার বংশধরদের জন্য উম্মুক্ত আলোচনা। মোতওয়াল্লী সৈয়দ মাসুদুল হক ফোনে ও ১ অক্টোবর তার ফেইসবুক একাউন্ট থেকে স্টাটাসের মাধ্যমে বংশধরদের জাদুঘরের ব্যাপারে অবগত করেন ও বৈঠকে উপস্থিতির অনুরোধ করেন।

মহাপরিচালক মোহাম্মদ কামরুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত মতবিনিময় সভায় নওয়াব ফয়জুন্নেছার ৫ম, ৬ষ্ঠ ও ৭ম জেনারেলের ২৪ জন সদস্য উপস্থিত ছিলেন।

সভায় উপস্থিত র্ছিলেন নওয়াব ফয়জুন্নেছা ওয়াকফ এস্টেটের মোতাওয়াল্লী সৈয়দ মাসুদুল হক, সৈয়দ কামরুল হক, এস এম মাহফুজুল হক, ওসমান আলী চৌধুরী, আয়াজ আলী চৌধুরী, কাজী মোহাম্মদ হোসেন শিপু, কাজী ইকবাল হোসেন খালেদ, সৈয়দা রেহানা হক, সৈয়দ গাজীউল হক, আইনুন নিশত তাজোয়ার, সৈয়দ নাসির উদ্দিন হায়দার, সৈয়দ এনামুল হক, মনজুর আলম চৌধুরী ছোটন, সৈয়দ তানজিলা হক তান্নি, সৈয়দ তাওয়াজ আহমেদ, সৈয়দ আসফাকুল হক, সৈয়দ রাকিবুল হক, মাহমুদা হায়দার, আমীর সেলিম, সৈয়দ আজাদুল হক, কাজী সাজ্জাদ হোসেন, সৈয়দ কামরুন্নেছা হক, সৈয়দ তানজিনা হক, সৈয়দ সামসিয়া হক,প্রমুখ।
এছাড়াও বিশিষ্ট লেখক গবেষক ডক্টর এস এম ইলিয়াস, সংবাদিক এম এস দোহা ও জাতীয় জাদুঘরের উর্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

উপস্থিত সকলেই উম্মুক্ত মতামত ও আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন। সর্বসম্মতিক্রমে যাদুঘর প্রতিষ্ঠায় সম্মতি প্রকাশ ও সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে গেজেট ও প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে সংস্কৃতিক মন্ত্রনালয়ের প্রত্বতত্ব অধিদপ্তর লাকসাম পশ্চিমগাওঁ নওয়াব বাড়ী ও তার সংলগ্ন ৪:৫৫ একর জায়গার অধিগ্রহন করেন।

কিন্তু বিভিন্ন জটিলতার কারনে বিগত ৬ বছর কোন উন্নয়ন সম্ভব হয়নি। বরং ভূমিদস্যু ও অসাধু মহলের কারসাজিতে নওয়াববাড়ীর অনেক মূল্যবান ঐতিয্য ও স্থাপনা এখন ধ্বংস ও বিলিপ্তর দ্বারপ্রান্তে।

স্থানীয় সংসদ সদস্য ও এলজিআরডি মন্ত্রী মো:তাজুল ইসলামের হস্তক্ষেপে এই জটিরতা নিরসন ও উন্নয়ন কর্মকান্ড এ বছর প্রথম দিকে পুনরায় শুরু হয়।

এলজিআরডি মন্ত্রী এই কাজটি সমন্বয়েরর জন্য বিশিষ্ঠ সাংবাদিক এম.এস. দোহাকে দায়িত্ব দেন।

মন্ত্রী জনাব মো:তাজুল ইসলামের আহবানে সাড়া দিয়ে সাংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে.এম.খালিদ গত ২জুন ২০২৩ নওয়াব ফয়জুন্নেছার বাড়ী পরির্দশন করেন এবং যাদুঘর প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেন।

গত ২০সেপ্টেম্বর সচিবালয়ে সাংস্কৃতিক মন্ত্রনালয়ের সচিব খলিল আহমেদের উপস্থিতিতে প্রত্বতত্ব অধিদপ্তর মহাপরিচালক ও জাতীয় যাদুঘরের মহাপরিচালক পশ্চিমগাঁও নওয়াব বাড়িতে যাদুঘর প্রতিষ্ঠায় সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর করেন।

লাকসাম নওয়াব বাড়ীতে যাদুঘর প্রতিষ্ঠার ব্যপারে কাজের অগ্রগতি ও সমস্যা সমাধানের লক্ষে স্হানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম গত ২৭ সেপ্টে¤¦র সচিবালয়ে তার দপ্তরে যাদুঘরের মহাপরিচালক প্রত্বতত্ব অধিদপ্তরের মহাপরিচালক,নওয়াব ফয়জুন্নেছা ওয়াকফ এস্টেটের মোতাওয়ল্লী সৈয়দ মাসুদুল হক, সৈয়দ কামরুল হক ও সাংবাদিক এম.এস দোহার সাথে আলোচনা করেন। সেই সাথে যাদুঘর দ্রুত চালু করার দিক নির্দেশনা দেন তিনি।

এলজিআরডি মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম নওয়াব ফয়জুন্নেছার বাড়ীর আশেপাশে সৌন্দর্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে ১কোটি টাকা বরাদ্দ দেন। লাকসাম পৌরসভার তত্ববধান উক্ত উন্নয়ন কাজ চলমান।

উল্লেখ্য, জাতীয় জাদুঘর আইন ১৭ ধারা মতে ঐতিহাসিক স্হাবর সম্পদ ও নিদর্শন ক্ষতিসাধন করলে ২০ বছর জেল। অস্হাবর সম্পদ ও নিদর্শন ক্ষতি বা ধ্বংস করলে ৫ বছর শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

নবাব ফয়জুন্নেছার ব্যবহ্রত বিভিন্ন দ্রব্য ও সামগ্রী যা এখন ইতিহাস। এইসব নিদর্শন তার আত্মীয়-স্বজন, পশ্চিমগাঁও ও আশেপাশের এলাকার অনেকের কাছেই সংরক্ষিত আছে। এইসব ঐতিহাসিক নিদর্শন ও ব্যাবহ্ত সামগ্রী সমূহ ব্যাক্তিগত পর্যায়ে সংরক্ষণ করাটা জাতীয় জাদুঘর ও প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের নীতিমালার পরিপন্থী ।

Daily Frontier News