ব্যবস্থা নিতে শিক্ষা বোর্ডে ইউএনওর চিটি।
ছাতক প্রতিনিধিঃ-
সরকারি নীতিমালা উপেক্ষা করে ছাতক উপজেলার কালারুকা হাজী কমর আলী উচ্ছ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচন করতে প্রধান শিক্ষক আব্দুল হাই কামাল বাঁধা প্রধান করছেন। নির্বাচন সম্পন্ন হলেও নানা টালবাহানায় রেজুলেশন করছেন না তিনি। এমন অভিযোগ এনে সিলেটস্থ শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান বরাবর একটি প্রতিবেদন দাখিল করেছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার গোলাম মস্তাফা মুন্না। ইতিমধ্যে গত ২ জুন হাজী কমর আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচন সম্পন্ন হলেও প্রধান শিক্ষক আব্দুল হাই কামালের অসহযোগিতার ফলে তা অসম্পুর্ন রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে বিদ্যালয়ের অভিভাবক ও এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
জানা’যায় গত ২ জুন হাজী কমর আলী উচ্ছ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচন অনুষ্টিত হয়। এতে প্রিজাইটিং অফিসারের দায়ীত্ব পালন করেন
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার পুলিন চন্দ্র রায়। নতুন কমিটির সভাপতি নির্বাচনের লক্ষে বিধি মোতাবেক নির্বাচনে ভোট গ্রহন শেষে ২ জন সভাপতি প্রতিদ্বন্ধী প্রার্থী ৪টি করে ভোট পেয়েছেন।
এরপর ম্যানেজিং কমিটির নীতিমালার অনুচ্ছেদ ১৩ এর(৩) এর বিধান অনুযায়ী সর্বসম্মতিতে লটারীর ব্যবস্থা করেন দায়ীত্বরত প্রিজাইডিং অফিসার। লটারীতে কালারুকা ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্য মোঃ তাজউদ্দিন সভাপতি নির্বাচিত হন। পরে নির্বাচনী সভার কাজ সুন্দর ও সুস্থভাবে সমাপ্ত করায় প্রিজাইডিং অফিসারের প্রতি উপস্থিত সকলে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। পরে নির্বাচনী সকল কাগজপত্রে সাক্ষর করেন প্রধান শিক্ষক। এসময় উপস্থিত কোনো সদস্যই কোনো ধরনের আপত্তি বা অভিযোগ না করায় নির্বাচনী সভার সমাপ্তি ঘোষনা করা হয়।
নির্বাচনী কার্যক্রম শেষে রেজুলেশন লেখা শুরু করলে কিছু বহিরাগতরা স্কুলের প্রধান শিক্ষকের কার্যালয়ে প্রবেশ করে নানা অনিয়মের অভিযোগ এনে হৈ চৈ শুরু করেন। এতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক না থাকায় প্রধান শিক্ষক রেজুলেশন লেখা বন্ধ করে দেন। পরে তাকে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে গিয়ে রেজুলেশন লেখার অনুরোধ জানান প্রিজাইডিং অফিসার। পরবর্তীতে তাকে একাধিক বার তাগিদ দিলেও তিনি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে না এসে নানা কৌশলে সময় পার করতে থাকেন।
এতে প্রধান শিক্ষক আব্দুল হাই কামাল কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অবমাননা করে সরকারী বিধি বিধান লঙ্গন করেছেন বলে অভিযোগ উটেছে।
এছাড়াও তার এমন অসহযোগিতার ফলে হাজী কমর আলী উচ্ছ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নির্বাচন কার্যক্রম বিধি মোতাবেক সম্পন্ন করতে বাধাগ্রস্ত করেছেন। প্রধান শিক্ষক আব্দুল হাই কামালের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নিতে সিলেটস্থ শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান বরাবরে এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন দাখিল করেছেন ছাতক উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা গোলাম মস্তাফা মুন্না।
অন্যদিকে নির্বাচিত হয়েও প্রধান শিক্ষকের অসহযোগিতার ফলে দায়িত্ব পাচ্ছেন না নবনির্বাচিত সভাপতি মোঃ তাজ উদ্দীন।
এব্যপারে নবনির্বাচিত কমিটির সভাপতি মোঃ তাজ উদ্দীন এসব ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন বিধি মোতাবেক নির্বাচনি প্রক্রিয়া সম্পুর্ন হয়েছে। এতে
আমি বিজয়ীও হয়েছি। যেহেতু উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা প্রিজাইডিং এর দায়ীত্বে ছিলেন এবং বিধি মোতাবেক নির্বাচন সমাপ্ত হবার পর তার সামনেই এসব কান্ড ঘটেছে। বিদায় কর্তৃপক্ষ কি করেন সেই অপেক্ষায় আছি। এছাড়া প্রধান শিক্ষক কেন এমন আচরণ করছেন, তা তিনিই ভাল বলতে পারবেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা পুলিন চন্দ্র রায়,এঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন,
সরকারি নীতিমালা মতে মোঃ তাজউদ্দিন বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন। কিন্তু এতে প্রধান শিক্ষক আব্দুল হাই কামাল
নানাভাবে বাধাগ্রস্ত করছেন। এ ঘটনায় গত ১২জুন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে লিখিত প্রতিবেদন দাখিল করেছেন বলেও নিশ্চিত করেন তিনি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গোলাম মোস্তাফা মুন্না জানান,বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক
আব্দুল হাই কামালের অসহযোগিতার ফলে তা অসম্পুর্ন রয়েছে। তবে তার বিরুদ্ধে সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে
সিলেট শিক্ষা বোর্ডকে তিনি লিখিত ভাবে অবগত করেছেন।
এ ব্যপারে প্রধান শিক্ষক আব্দুল হাই কামাল জানান, তিনি দীর্ঘদিন যাবত এই বিদ্যালয়ে সুনামের সাথে দায়ীত্ব পালন করে আসছেন। কখনো এরখম সিচুয়েশনে পরেন নি। এবার নির্বাচন সম্পন্ন হবার পরে স্থানীয় কিছু মানুষ বিভিন্ন অভিযোগ তুলেছেন। বিদায় স্কুল এবং এলাকার সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে তিনি রেজুলেশন করতে পারেন নি। যেহেতু ইউএনও মহোদয় বিষয়টি শিক্ষা বোর্ডকে অবগত করেছেন এতে বোর্ড যে সিদ্ধান্ত নিবে সেটাই সবার জন্য মঙ্গল জনক হবে।
Copyright © 2024 Daily Frontier News | Design & Developed By: ZamZam Graphics