Daily Frontier News
Daily Frontier News

ভুঁয়া সাংবাদিক আর চাঁদাবাজেরা একাকার , বিপাকে পেশাদার সাংবাদিক

 

-ঃমন্তব্য কলামঃ- ________________________________________________সারাদেশে “ভুঁয়া মানবাধিকার কর্মী আর ভুঁয়া সাংবাদিকদের দৌরাত্ম্য অতিতের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করে চরমে পৌঁছেছে। তারা নমিনেশন পাইয়ে দেওয়ার জরিপে নেমে হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা আর তার সাথে যোগ হয়েছে মানবাধিকার কর্মী ও সাংবাদিক ।
সাংবাদিক পরিচয়ে এরা ছিনতাই , চাঁদাবাজি , জমি দখল , দোকানপাট দখল , ধর্ষণ , মাদক ব্যবসা , মাদক সেবন , মারামারি থানার দালালি রাজনৈতিক দলের দালালি প্রশাসনের দালালি সহ নানা অপকর্মের সাথে জড়িত হয়ে পড়েছে। নাম সম্বল পত্রিকায় , অনিবন্ধিত অনলাইনে এবং ফেইসবুকে বিভিন্ন দালালির লেখালেখি করেন , এই চক্রে বিতর্কিত নারী সদস্যও থাকেন গলায় চটকদার মোটা প্রেস লেখা ফিতা , বিভিন্ন রং-বেরংয়ের আইডি কার্ড , হাতে বোম ( চুঙ্গা ) কাঁধে দামি ব্যাগ এবং হাতে দুই চারটা পত্রিকা থাকে এবং তারা ভালো দামি গাড়িও ব্যবহার করে এমন-কি ২/৩ টা মোটর সাইকেল যোগেও আসে অথবা সিএনজি যোগে আসে। গাড়ি , মোটর সাইকেল ও সিএনজিতে প্রেস লেখা থাকে। মোটর সাইকেলের বহর দেখে এবং এর শব্দ শুনে মানুষ আতঙ্কিত হয়ে যায়।
ভুঁয়া সাংবাদিকদের প্রতারণার দিক নির্দেশনা স্বরূপ ছড়াকার লিখেছেনঃ- “হঠাৎ করে এই শহরে
এলো কিছু সাংবাদিক, কথায় কথায় তোলে ছবি
ভাবখানা তার সাংঘাতিক” তিলকে তাল বানিয়ে ফেইসবুকে দেয় স্ট্যাটাস।সত্য মিথ্যা দেখার ফুসরত যেন নাই। তাদের লক্ষ্য নিজেদের প্রতাপ দেখিয়ে এবং পেশী শক্তি ব্যবহার করে , আতংক ছড়িয়ে টু’পাইস কামিয়ে নেয়া। টাকা পকেটে না আসা পর্যন্ত চিল্লাপাল্লা করে নিজেকে জাহির করে। চড়ুই-কে সে পেঁচা বানায়
বলে লোকটা নাকি
সাংবাদিক। রাজধানী ও জেলা শহরে কে কাকে চিনে সবাই নিজেকে বড় মাপের জানে পুলিশ দেখে মুখ লুকিয়ে কেটে পড়ে দূরে পেশাদার সাংবাদিকরা পরিচয় দিতে পাচ্ছে না লজ্জায় , এটা আবার কেমন দেশ ?
সারাদেশে সাংবাদিকদের প্রতি এবং মানবাধিকার কর্মীদের প্রতি মানুষের আস্থা গেছে কমে। পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন , ভুঁয়া সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মীদের বিরুদ্ধে পুলিশ মাঝে মধ্যেই অভিযান চালাচ্ছে একাধিক ভুঁয়া সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী গ্রেফতার হয়েছে । তাদের কাছ থেকে টেলিভিশন চ্যানেল এবং পত্রিকার অনলাইন নিউজ পোর্টাল এবং আইপি টিভির পরিচয়পত্র উদ্ধার
করা হয়েছে। নরসিংদীতে গ্রেপ্তার হয়েছে ২ জন নামধারী সাংবাদিক, কটিয়াদীতে মহিলা সহ ৩ সাংবাদিক গ্রেপ্তার হয়েছে, মহিলা সাংবাদিক সহ কালীগঞ্জে গ্রেফতার হয়েছে চার জন, সিরাজগঞ্জে গ্রেফতার হয়েছে মানবাধিকার কর্মী, এ ছাড়া তাদের মোটরবাইকে , গাড়িতে , এবং সিএনজিতে টেলিভিশন চ্যানেল ও পত্রিকার স্টিকার এবং আইপি টিভির নিউজ পোর্টালের স্টিকার লাগানো আছে। স্টিকার ক্যামেরায় লাগিয়ে নেয় এটা কোন টেলিভিশন চ্যানেলের
বুঝা বড় দায় ,
ইউটিউব টেলিভিশন চ্যানেল বের হয়েছে তা কোনটা আসল আর কোনটা নকল বুঝা বড় দায়।
এ সব ভুঁয়া সাংবাদিক এত চতুর তাদেরকে সাধারণ
..মানুষ সহজে ধরতে পারেন না।
এমনকি পেশাদার সাংবাদিকরাও
তাদের দেখে মাঝে মধ্যে বিব্রত বোধ করে , কারণ তারা বেশির ভাগই মাদক সেবনকারী ও এলাকার জোরদার মস্তান টাইপের লোক , তারা দামি গাড়ি মোটর সাইকেল সিএনজি দিয়ে চলাফেরা করে। সারাদেশে বিভিন্ন প্রেসক্লাব , রিপোর্টার্স ক্লাব , সাংবাদিক ইউনিয়ন , ক্রাইম রিপোর্টার্স ইউনিটির এ সকল ভুঁয়া সাংবাদিক চিহ্নিত করার দায়িত্ব নিতে হবে। বর্তমানে রেন্ট-এ কার ড্রাইভার , ট্রাক ড্রাইভার , সিকিউরিটি গার্ড ব্যবসায়ী , বিভিন্ন ঔষধ কোম্পানীর রিপ্রেজেন্টেটিভ , নরসুন্দর , দারোয়ান , পান দোকানদার , চা দোকানদার , বিউটি পার্লারের বিউটিশিয়ান মহিলা , কিছু মহিলা মেম্বার, মহিলা এনজিও কর্মী , ইন্সুরেন্সের মহিলা ,বিভিন্ন অফিসের পিয়ন , হকার , কবিরাজ , নৌকার মাঝি , বিদেশ ফের, সাংবাদিকের আইডি কার্ড টাকার বিনিময়ে এনে গলায় কার্ড ও ফিতা ঝুলিয়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ।
এ ব্যাপারে সিনিয়র সাংবাদিকদের এবং মূল ধারার সাংবাদিকদের সোচ্চার হতে হবে। এ ব্যাপারে নরসিংদী প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক, সাপ্তাহিক সময় পত্রিকার প্রকাশক সম্পাদক হুমায়ুন কবির শাহ নরসিংদী ক্রাইম রিপোর্টার্স ইউনিটির এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য বলেন দুঃখের বিষয় সাংবাদিকদের সংগঠন বেড়েই চলছে কিন্তু সাংবাদিকতার মান উন্নয়ন হচ্ছে না । শুধু টু_পাইস ইনকামের জন্য এবং নিজেকে নেতা জাহির করার জন্য একের পর এক সাংবাদিক সংগঠন প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে ।পাশাপাশি বাংলাদেশের যে ১২৭০ টি পত্রিকা , প্রত্যেক জেলায় যতগুলো পত্রিকা আছে তাদের প্রকাশক সম্পাদক এবং বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দের ভেদাভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে । অনেক জায়গায় দেখা যায় দু’জন মিলেই একটি সাংবাদিক সংগঠন , অথবা মানবাধিকার সংগঠন গড়ে তোলে। তাদের কোন অফিস নাই , তাদের কোন কোরাম নেই , কোন কাগজপত্র নেই , নিজেদের নাম জাহির করায়ই শুধু তাদের কাজ এবং সভাপতি সাধারণ সম্পাদক হওয়া তাদের নেশা। আমি কাউকে ছোট করার জন্য এবং কারো বিরুদ্ধে এই লেখাটা লেখি-নি। আমি চাই যারা প্রকৃত সাংবাদিক অথবা গণমাধ্যম কর্মী তারা থাকুক বিভিন্ন পেশার মানুষ টাউট বাটপার, মাদক ব্যবসায়ী মাদক সেবী সন্ত্রাসী গ্রুপ ইন্সুরেন্সের লোক, মাদ্রাসার, রাজনৈতিক কর্মী অথবা নেতা এ পেশা ছেড়ে নিজ নিজ কাজ করে ভালো থাকুক।

লেখকঃ-

মাসুদ রানা বাবুল
সাধারণ সম্পাদক
নরসিংদী সদর প্রেস ক্লাব সভাপতি, নরসিংদী ক্রাইম রিপোর্টার্স ইউনিটি স্পেশাল ক্রসপন্ডেন্ট ,ক্রাইম ম্যাগাজিন অপরাধ জগত

====================================

Daily Frontier News