Daily Frontier News
Daily Frontier News

প্রচন্ড তাপদাহে ফসল উৎপাদনে খতির শংখা প্রতিরোধে কৃষি অফিসারের পরামর্শ

 

শাহীন বিশ্বাস পাটকেলঘাটা প্রতিনিধি॥

.       ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রা এবং আবহাওয়ার পরিবর্তন প্রায়ই খরা তাপ প্রবাহ এবং বন্যার কারণে সৃষ্ট পানির সংকটের কারনে। ফসলের উৎপাদন কমে যাচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের এই প্রভাব গুলো বর্তমানে প্রায় একই সাথে বিভিন্ন অঞ্চলে হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যাচ্ছে। যা বৈশ্বিক খাদ্য সরবরাহের জন্য উল্লেখযোগ্য বিপর্যয় বয়ে আনতে পারে। বর্তমানে সারা দেশের উপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে তীব্রতাপ প্রবাহ বর্তমানে খুলনা বিভাগের কয়েকটি জেলার ৪২ ডিগ্রীর উপরে তাপমাত্রা বিরাজ করছে।

.      আর গরমে প্রাণীকুলে অসহনীয় অবস্থা বিরাজ করছে। মানুষের পাশাপাশি ক্ষতি সম্মুখীন হচ্ছে। কৃষকের সোনালী ফসল, ধান পাট লিচুসহ নানা ধরনের ফসল। বর্তমানে এখন মাঠে রয়েছে কৃষকের স্বপ্নের ফসল বোরো ধান। তীব্র রোদের তাপে কৃষকের কাঙ্ক্ষিত ফসল ঘরে তুলতে কাকডাকা ভোরে কৃষকেরা রোদের উত্তাপ ছড়ানোর আগেই ধান কেটে বাড়ি ফিরছেন। বিকালে সূর্যের প্রখর তাপ নেমে গেলে কাঁচি নিয়ে ছুটছে কৃষকরা মাঠে ধাঁন কাটার জন্য।
.      গতকাল পাটকেলঘাটার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, চোমর খালি গ্রামের মনিরুল ইসলাম মনি বলেন, প্রখর রোদের তাপে হিট স্ট্রোকের ভয়ে কৃষককরা ভোর বেলা এবং রাতে ধান কাটছেন তাতেও সুফণ মিলছে না। রোদের তাপে ধানের শিষ শুকিয়ে শিষ থেকে ধান ঝরে পড়ছে। যে কারণে কৃষকের লক্ষমাত্রার চেয়ে কাংখিত ফসল কম উৎপাদন হচ্ছে। যুগীপুকুর গ্রামে আমচাষী কামরুল ইসলাম বলেন, রোদের তীব্রতায় গাছ থেকে আম ঝরে পড়ছে।

.     এ অবস্থা চলতে থাকলে আমরা আমচাষীরা ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হব সেই সাথে আমরা নিঃস্ব হয়ে যাব। তৈলকুপি গ্রামের টমেটো চাষী শাহীন গাজী জানান, প্রচন্ড রোদে আমার গাছের পাতা শুকিয়ে গাছ মরে যাচ্ছে । আমি সমিতি থেকে ঋণ নিয়ে ফসল করেছি। এখন আমি কি করব বুঝে উঠতে পারছি না। খলিষখালী ইউপির বাগমারা গ্রামের মোসলেম মোল্যা জানান, আমার এ বছর ৪ বিঘা জমিতে করলা, ভেন্টি, মিষ্টি কুমড়া, বরবটি, খিরাই সহ অন্যান্য ফসল অতিরিক্ত গরমের ফলে গাছ শুকিয়ে পানির অভাবে মারা যাচ্ছে। তাতে করে প্রায় এক লক্ষ টাকার ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। তেঁতুলিয়া ইউপির আড়ংপাড়া গ্রামের অমল দাশ জানান, অতিরিক্ত তাপদাহে আমার জমির ভুট্টা গাছ পুড়ে গাছ শুকিয়ে মারা যাচ্ছে। তীব্র গরমে কৃষকের ফসল রক্ষার জন্য তালা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাজেরা বেগমের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, চলমান তীব্র তাপপ্রবাহে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী আগামী আরও কিছুদিন তীব্র তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে। এসময় বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম।

.     এমতাবস্থায় বাংলাদেশ কৃষি গবেষনা কেন্দ্র ইনস্টিটিটিউট কর্তৃক চাষিদের জন্য কিছু পরামর্শ দিয়েছেন। মাটির বৈশিষ্ঠের উপর ভিত্তি করে ফলন্ত আম গাছে ৭-১০ দিন অন্তর সেচ প্রয়োগ করতে হবে। এছাড়া অন্যান্য ফল যেমন, লিচু, জামরুল, জাম, কাঁঠাল ইত্যাদি ফলন্ত গাছেও ৭-১০ দিন অন্তর সেচ প্রদান করা প্রয়োজন। পরিবর্তিত বেচিন পদ্ধতিতে গাছের ৪ পাশে রিং করে সেচ প্রদান করা উত্তম। তবে প্লাবন পদ্ধতিতেও সেচ দেওয়া যাবে। তাপ প্রদাহ কমলেও ফল পরিপক্ক পর্যন্ত ১৫ দিন অন্তর সেচ অব্যাহত রাখা প্রয়োজন। এতে ফল ঝরে পড়া কমবে ও ফসল বৃদ্ধি পাবে। মাটিতে পর্যাপ্ত রস ধরে রাখার জন্য গাছের গোড়ায় খালচিং করে পানি দেওয়ার প্রয়োজন।

Daily Frontier News