কাউছার মিয়াঃ-
নরসিংদী জেলার মনোহরদী থানাধীন পীর পুর গ্রামে জমি সংক্রান্ত বিরুদ্ধের জেরে ঘর পুড়া মামলার আসামি হয়ে বাড়ি ছেড়ে ফেরারি আসামি হয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে খিদির পুর ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক, সাবেক ইউপি সদস্য, কলেজ ছাত্র, নার্স ও সাধারণ কৃষক। এতে এলাকায় চাঞ্চল্যকর অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
মামলা সূত্রে জানাযায়, মনোহরদী খিদির পুর ৮ নং ওয়ার্ডের ফররুখ আহম্মেদ মুকুল গংদের সাথে একই গ্রামের ব্যবসায়ী সাজরাতুল ইসলাম গংদের সাথে দীর্ঘ দিন যাবত জমি সংক্রান্ত বিরুধ চলে আসছে।
গত ৫/১১/২০২৩ তারিখ মাগরিবের নামাজের পর সাজরাতুলদের ঘরে আগুন লাগে।এতে ঘরে থাকাএকটি খাট একটি টেবিল, তোষক ও বালিশ পুরে যায়।এই ঘটনায় মামলার আসামি করা হয় ফখরুল আহম্মেদ মুকুল (৬০) পিতা মৃত মজিবুর রহমান, স্বপন মিয়া পিতা মৃত মজিবুর রহমান (৫০),কানন মিয়া(৫৫)পিতা মৃত মোজাম্মেল হক,গোলাম কিবরিয়া (২৫) পিতা স্বপন মিয়া, গোলাম মাওলা(২০) পিতা স্বপন মিয়া,মামুন মিয়া (২৫) পিতা মৃত চাঁন মিয়া, আরমান মিয়া(৩২) পিতা মৃত জালাল উদ্দীন সর্ব সাং পীরপুর, উপজেলা মনোহরদী কে মামলার আসামি করা হয়।
সরেজমিনে জানাযায়, ফররুখ আহমদ মুকুল কৃষক, স্বপন মিয়া কৃষক, মাহমুদুল হক কানন মিয়া খিদির পুর ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক, গোলাম কিবরিয়া ঢাকায় একটি হাসপাতালে নার্সের চাকরি করে, গোলাম মাওলা কলেজে লেখা পড়া করে,মামুন চালাকচর বাজারে মুদি ব্যবসা করে,আরমান খিদির পুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক মেম্বার।
এলাকাবাসী জানায় ফখরুলদের সাথে সাজরাতুল দের জমি নিয়ে বিরুধ থাকেলও ঘরে আগুন দিবে এটা বিশ্বাস করা যায় না।
এ বিষয়ে ফররুখ আহম্মেদ মুকুল বলেন, সাজরাতুলরা আমাদের চাচা তো তাই। আমার পৈতৃক সম্পত্তি দীর্ঘদিন দখল করে আসছে। আমরা আমাদের সম্পত্তি ফেরত চাইলে তারা ঘর পুড়া মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। আমি এর সঠিক তদন্তের মাধ্যমে বিচার চাই।
স্বপন মিয়া বলেন, আমি সাধারণ কৃষক, সাজরাতুলরা আমাদের জমি জবর দখল করে আসছে।আর এর প্রতিবাদ করায় আমাকে ও আমার ছেলেদেরকে ঘর পুড়া মামলা দিয়ে হয়রানি করতেছে। আমার ছেলেরা যাতে সরকারি কোন চাকরি করতে না পারে, তাদের ভবিষ্যৎ জীবন ধ্বংস করার জন্য এই মামলা দিছে।
গোলাম কিবরিয়া বলেন,আমি ঢাকা একটি হাসপাতালে নার্সের চাকুরি করি।ঘটনার সময় আমি ঢাকায় আমার কর্মস্থলে ছিলাম।
আরমান মিয়া বলেন, আমি খিদিরপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য। গত নির্বাচনে ও আমি প্রার্থী ছিলাম। সাজরাতুলের ছোট ভাই ও সদস্য প্রার্থী ছিল।এতে সাজরাতুল আমার উপর ক্ষিপ্ত এবং আমি অসহায় কৃষক ও খেটে খাওয়া মানুষদের পক্ষে কথা বলার কারনে মামলা দিয়ে হয়রানি করছে।তারা বিভিন্ন সময় আমাকে ফোনে হুমকি দেয় আমি যেন তাদের পক্ষে না থাকি। যেদিন ঘটনা ঘটে সেদিন আমি চট্টগ্রাম ছিলাম, তারপরও আমাকে ঘরপুড়া মামলার আসামি করা হয়। সে আরও বলে,মামুনকে গ্রেফতার করার সময় তদন্ত অফিসার এসআই পরিতুষ চন্দ্র সরকার পাঁচ হাজার টাকা নেয় এবং বলে চার্সিট থেকে নাম কেটে দিবে। এখন ও সে আমাকে ফোন করে টাকা চায়।
এ বিষয়ে এসআই পরিতুষ চন্দ্র সরকার বলেন,আমি নিয়মিত মামলার আসামি গ্রেফতার করেছি। বাকি আসামিদের ও গ্রেফতার করার চেস্টা চলছে। কারো কাছ থেকে কোন টাকা নেই নি।
সাজরাতুলের মা সাবিহা সুলতানার কাছে আগুন লাগার বিষয় জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন,বাড়িতে আমি ছাড়া ছেলেমেয়েরা কেউ থাকেনা। আগুন কিভাবে লাগছে আল্লাহ জানেন।আমি কাউকে দেখিনি।আমি মাগরিবের নামাজ পড়ে ঘরে ছিলাম।আগুন দেখে বাইরে আসি। মসজিদের লোকজন এসে আগুন নিবায়।ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি আসছিল।
সাজরাতুল ইসলাম বলেন, জমি নিয়ে তাদের সাথে দীর্ঘদিন যাবত দ্বন্দ্ব। তারা আমাদের দুই বিঘা জমি খারিজ করে নেয়।আমরা এই খারিজ বাতিল করি।এখনো জমি নিয়ে দ্বন্দ্ব আছে। আগুন লাগার দিন আমি গাউছিয়া আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ছিলাম। ফোনে আগুন লাগার কথা শুনে বাড়িতে আসি।এ ঘটনায় আমি মনোহরদী থানায় মামলা করি।
Copyright © 2025 Daily Frontier News | Design & Developed By: ZamZam Graphics