Daily Frontier News
Daily Frontier News

নবনির্মিত রেলপথ দিয়ে প্রথম পরীক্ষামূলক ট্রেন চালু হতে যাচ্ছে ১৫ অক্টোবর

 

মাসুদ পারভেজ
বিভাগীয় ব্যুরোচীফ

চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে পর্যটন নগর কক্সবাজারে নবনির্মিত রেলপথ দিয়ে প্রথম পরীক্ষামূলক ট্রেন চালু হতে যাচ্ছে আগামী ১৫ অক্টোবর। এ জন্য পটিয়া রেলস্টেশনে ছয়টি বগির একটি ট্রেন প্রস্তুত রাখা হয়েছে। কালুরঘাট সেতু মেরামতের কাজ শুরুর আগে পটিয়া রেল স্টেশনে নিয়ে রাখা হয়েছে ট্রায়াল ট্রেনটি। উদ্বোধনের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে ছয়টি বগি ও একটি ২২শ সিরিজের ইঞ্জিন। কোরিয়া থেকে আনা এসব একেকটি বগিতে যাত্রী বসতে পারবে ৬০ জন।

এই ব্যাপারে কক্সবাজার রেল লাইন প্রকল্পের অতিরিক্ত প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী মুহম্মদ আবুল কালাম চৌধুরী বলেন, দোহাজারী–কক্সবাজার রেল লাইনের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। আগামী রোববারের মধ্যে ১০২ কিলোমিটার লিকিংয়ের কাজ শেষ হবে। ১৫ অক্টোবর দোহাজারী থেকে পরীক্ষামূলক ট্রায়াল ট্রেন উদ্বোধন হবে। মন্ত্রী মহোদয় উদ্বোধন করবেন। এরমধ্যে অন্যান্য কাজ শেষ হয়ে যাবে। ট্রায়াল ট্রেন পটিয়া স্টেশনে রাখা হয়েছে। ট্রায়ালের আগের দিন পটিয়া থেকে ট্রায়াল ট্রেনটি দোহাজারী নিয়ে রাখা হবে।

অক্টোবরের শেষের দিকে দোহাজারী–কক্সবাজার রেল লাইনের উদ্বোধন হবে জানিয়ে অতিরিক্ত প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী মুহম্মদ আবুল কালাম চৌধুরী বলেন, ট্রায়াল রানের পরও বাণিজ্যিকভাবে যাত্রী পরিবহনে যেতে আরো দুই–তিন মাস লাগবে। এ বছরের মধ্যেই এই রেলপথে আমরা ট্রেন চালুর চেষ্টা করব। দোহাজারী, সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, হারবাং, চকরিয়া, ডুলাহাজরা, ইসলামাবাদ, রামু ও কক্সবাজার– এসব স্টেশনে থাকবে কম্পিউটার বেইজড ইন্টারলক সিগন্যাল সিস্টেম এবং ডিজিটাল টেলিকমিউনিকেশন সিস্টেম। দোহাজারী থেকে চকরিয়া এবং চকরিয়া থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত রেলপথে ৩৯টি ব্রিজ ও আন্ডারপাসসহ ২৫১টি কালভার্ট নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে।

রেলওয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সময় পাওয়ার উপর অক্টোবরের শেষের দিকে কক্সবাজার ট্রেন চলাচলের উদ্বোধন হবে। ইতোমধ্যে জনবল, ইঞ্জিন ও বগি সংকটের কারণে শুরুতে মাত্র এক জোড়া ট্রেন চালানোর প্রস্তাব করেছে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপকের কার্যালয়। অর্থাৎ একটি ট্রেন ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম হয়ে কক্সবাজার যাবে এবং ওই ট্রেনটিই আবার ফিরবে। দুটি বিকল্প প্রস্তাব অনুযায়ী, ট্রেনটি রাতে ঢাকা থেকে যাত্রা করে পরের দিন সকালে কক্সবাজারে পৌঁছাবে। সেই ট্রেন পরের দিন ঢাকায় ফিরবে। চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত নির্বিঘ্নে ট্রেন চলাচলের জন্য কালুরঘাট সেতুটি দ্রুত সংস্কার করা হচ্ছে। সেতুটি আরো মজবুত করা হচ্ছে। সে লক্ষ্যে আগামী ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে এ সেতুতে।

জানা গেছে, ট্রেনটি চলাচলের সময় নির্ধারণ করতে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে দুটি প্রস্তাবনা রেল ভবনে পাঠানো হয়েছে। এরমধ্যে যেকেনো একটি ধরেই ট্রেন চলাচল শুরু হবে। প্রথম প্রস্তাবনায় রয়েছে ট্রেনটি ঢাকা থেকে রাত ৮টা ১৫ মিনিটে ছেড়ে ভোর সাড়ে ৫টায় কক্সবাজার স্টেশনে পৌঁছাবে। ফিরতি পথে সকাল ১০টায় কক্সবাজার স্টেশন থেকে ছেড়ে সন্ধ্যা ৭টা ১৫ মিনিটে ঢাকায় পৌঁছবে। দ্বিতীয় প্রস্তাবনায় ঢাকা থেকে রাত ১১টা ৫০ মিনিটে ছেড়ে সকাল সাড়ে ৯টায় কক্সবাজার স্টেশনে পৌঁছাবে। ফিরতি পথে দুপুর ১২টা ৪৫ মিনিটে কক্সবাজার থেকে ছেড়ে রাত ১০টায় ঢাকার কমলাপুর রেল স্টেশনে পৌঁছাবে। তবে ভাড়া এখনো নির্ধারণ করা হয়নি।

প্রকল্পের কাজ ২০১০ সালে শুরু হয়ে শেষ হবে ২০২৪ সালের মাঝামাঝি সময়ে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যয় হচ্ছে ১৮ হাজার ৩৪ কোটি টাকার বেশি। চট্টগ্রাম থেকে ঘণ্টায় ১০০–১২০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চলাচল করবে।

Daily Frontier News