খুলনা ব্যুরো।।
খুলনার ডুমুরিয়ার রংপুর ইউনিয়ন বিএনপির আহবায়ক শেখ আব্দুস সালামের বিরুদ্ধে বিধবা ভাতা’র কার্ড করে দেওয়ার কথা বলে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ তুলেছেন এক নারী। ঘটনাটি উপজেলার ১২ নং রংপুর ইউনিয়নের রামকৃষ্ণপুর শান্তি নগর গ্রামে ঘটেছে।
ভুক্তভোগী তিন সন্তানের জননী বিধবা ওই নারী জানান, গত রমজান মাসে তার স্বামীর মৃত্যু হওয়ায় অভাব অনাটনের মধ্যদিয়ে কোনরকম তিন সন্তানকে নিয়ে দিনাতিপাত করছিলেন তিনি। এমতবস্থায় কয়েকমাস আগে বিধবা ভাতার কার্ডের জন্য উপজেলার ১২ নং রংপুর ইউনিয়ন বিএনপির আহবায়ক শেখ আব্দুস সালামের দারস্থ হন তিনি। এর পর থেকেই বিভিন্ন সময় আব্দুস সালাম ঐ বিধবা নারীকে বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গি ও আকার ইঙ্গিতে কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন।
সর্বশেষ বিধবা ভাতার কার্ডের জন্য ছবি ও ন্যাশনাল আইডি কার্ডের ফটোকপি চেয়ে নেন বিএনপি নেতা আব্দুস সালাম। এর পর কয়েকমাস কেটে যায়। সর্বশেষ গত অক্টোবর মাসের ২৯ তারিখ তাকে কার্ড প্রস্তুতের কথা বলে বাড়ি থেকে ডেকে নেন। এরপর কার্ডের বিষয়ে তার সাথে খুলনায় গিয়ে তার পরিচিত এক অফিসারের সাথে দেখা করতে হবে বলে জানান। এরপর সকাল ১১ টার দিকে তাকে সাথে নিয়ে ইজিবাইক যোগে খুলনার উদ্দেশ্য রওনা হন। তারপর ঐ নারীকে খুলনায় পৌছে শেখ পাড়া মোড়স্থ সঙ্গীতা সিনেমা হলের দ্বিতীয় তলায় নিয়ে যান ঐ নারীকে। তবে সেখানে কাউকে না দেখতে পেয়ে সালামের কাছে জানতে চাইলে তিনি কোন উত্তর না দিয়ে লম্পট সালাম তাকে আকষ্মিক জাপটে ধরেন।
এসময় ভুক্তভোগী ওই নারী সালামের খারাপ উদ্দেশ্য বুঝতে পেরে কৌশলে টয়লেটে যাওয়ার কথা বলে সেখান থেকে নেমে এসে পাশের একটি হোটেলে আশ্রয় নেন। এসময় সালামও নিচে নেমে তাকে খুঁজতে থাকেন। অনেকক্ষণ খুঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে নিজের বিপদ আঁচ করতে পেরে সুকৌশলে সেখান থেকে পালিয়ে যায়।
এরপর ভুক্তভোগী ওই নারী বিপদের আশংকা মুক্ত ভেবে তার বড় ছেলে ইস্রাফিলকে মুঠোফোনে ঘটনার বিস্তারিত জানান। খবর পেয়ে মাকে বাঁচতে বড়ছেলে তাৎক্ষণিক খুলনার উদ্দেশ্য রওনা দেন। তারপর খুলনার জোড়াগেট এলাকা থেকে তার মাকে উদ্ধার করে বাড়িতে আসেন। তবে লোকলজ্বার ভয়ে বিষয়টি গোপন রাখেন তারা।
এরপরও অভিযুক্ত সালাম দমে যাননি। সে তার খারাপ উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য গত শুক্রবার (১ নভেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে আবারও ছবি ও আইডি কার্ডের কপি চেয়ে বাড়ির সামনে ডাকেন। এরপর ভুক্তভোগী ওই নারী কৌশলে তাকে বাড়ির সামনের মনিরুল ইসলামের চায়ের দোকানে ডেকে নিয়ে সকলের সামনে ঘটনার বিস্তারিত জানিয়ে লম্পট সালামকে জুতাপেটা করেন। সর্বশেষ এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ওই নারীর পরিবারের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন।
ঘটনার বিষয়ে বিএনপি নেতা আব্দুস সালামের কাছে জানতে চাইলে, তিনি অভিযোগের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, স্থানীয় একটি মহল তার দীর্ঘদিনের সুনাম ক্ষুন্ন করতে ওইসব মনগড়া অভিযোগ তুলছেন বলে দাবি করেন।
এ ব্যাপারে ডুমুরিয়া উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব সরদার আব্দুল মালেক বলেন, ঘটনার বিষয়টি আমি লোকমুখে শুনেছি। ঘটনার সত্যতা প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে দলীয় সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Copyright © 2024 Daily Frontier News | Design & Developed By: ZamZam Graphics