Daily Frontier News
Daily Frontier News

ছাতকে পিতা-পুত্রের হরিলুট

 

ছাতক প্রতিনিধিঃ-

সুনামগঞ্জের ছাতকে দীর্ঘদিন যাবত সড়ক ও জনপথের ভূমিতে লুটপাটের অভিযোগ থাকলেও কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণে তা বন্ধ হচ্ছেনা।

সরকারী ভূমিতে বিভিন্ন কৌশলে মাটি পাথর ও গাছ বিক্রি করার দৃশ্যপাঠ এলাকাবাসির চোখের সামনে দেখা গেলেও এটি অপেন সেক্রেট হিসেবে পরিনত হয়েছে।

এসব বিষয়ে সড়ক ও পনপথ কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা না নিলেও গত ২৭ ডিসেম্বর সুরমা নদীর তীর থেকে অবৈধ ভাবে মাটি বিক্রির সময় যৌথ বাহিনির হাতে আটক হয় ১ ট্টাক চালক ও মাটি ক্রয়দাতা।

এসময় তারা জানায় সাজ্জাদ মাহমুদ মনির ওরফে ইয়াবা মনির টাকার বিনিময়ে তাদের নিকট বিক্রি করছে এসব মাটি। যা আরও পুর্বেও নিয়েছেন তারা।

এ ঘটনার পর বিষয়টি ব্যাপক আকারে প্রচার হয় বিভিন্ন গনমাধ্যমে এরপর প্রকাশ্যে উটে আসে মাটি খেকো চক্রের প্রধান হোতা সাজ্জাদ মনিরের নাম।

এ বিষয়ে সাজ্জাদ মনির সহ ৫ জনকে আসামি করে ছাতক থানায় মাটি ব্যবস্থাপনা আইনে দায়ের করা হয় মামলা। এ মামলায় সাজ্জাদ মাহমুদ মনির কয়েক দিন পালিয়ে বেড়ালেও জামিনে এসে আবারও শুরু করেছে এসব কর্মকান্ড।

ঘটনার দিন সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় সুরমা নদীর তীর ছাড়াও চোখের সামনেই সড়ক ও জনপথের ভূমি থেকে মাটি নেওয়ার দৃশ্য। মাটি নেওয়ার কারণেই উফরে পরেছে বড় বড় গাছ।

২০২৩ সাল থেকে এভাবেই শতশত গাছ কর্তন করা হয়েছে এ ভূমি থেকে। এত কিছুর পরও চোখের সামনে পরে থাকা গাছটিও নিয়ে গেছেন মনির ও তার পিতা আবুল বাশার।

মাটিখেকোদের এমন কর্মকান্ডে হুমকীতে পড়েছে এলাকার পরিবেশ। ২০২৩ সাল থেকে গাছ কাটার এমন দৃশ্য ক্যামেরাবন্ধী করে রেখেছেন স্থানীয়রা। তবে এসব বিষয়ে কোনো তথ্য নেই সড়ক ও জনপথ বিভাগের কাছে।

পুর্বের এসব দৃশ্য বাদ দিলেও ঘটনারদিন দেখা সেই গাছটি কোথায় তা জানতে ছেয়েছিলাম অবৈধভাবে সরকারী বাসায় বসবাসকারী অবশরপ্রাত্ব ফেরী চালক আবুল বাশারের কাছে।

তিনি জানান গাছটি তুফানে ফেলে দিয়োছিল। গাছটি বর্তমানে আছে কোথায় এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন সেটা আপনাকে বলব কেন। যাকে বলার তাকে বলেছি।সরকারী এ গাছটির বিষয়েও কোনো তথ্যও নেই সড়ক ও জনপথের কাছে।

আবুল বাশার নোয়াখালী জেলার চাটখালী উপজেলার বানশা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি সড়ক ও জনপথ থেকে অনেক আগে অবশর নিলেও বর্তমানে চুক্তি বিত্তিতে কাজ করছেন দোয়াবাজার ফেরী চালক হিসেবে।

তার ছেলে সাজ্জাদ মাহমুদ মনিরের জন্মগত নাম মতিউর রহমান হলেও রহস্য জনক কারনে ২০১৬ সালে এভিডেভিডের মাধ্যমে সাজ্জাদ মাহমুদ মনির নাম ধারন করে এখানের ভোটার হয়েছেন। পিতা আবুল বাশারের চাকুরীর সুবাদেই সরকারী বাসায় বসবাস করে আসছিল সে। পিতার চাকুরীর অবশর হলেও এখনো তাদের দখলেই রয়েছে সরকারী বাসা ও ভূমি।

আর এই সুবাদে পিতা আবুল বাশারের প্রকাশ্যে সহযেগিতায় সাজ্জাদ মাহমুদ মনির বিভিন্ন কৌশলে লুটপাট করছে সড়ক ও জনপথ বিভাগের সরকারী সম্পত্তি।

কাগজপত্র ঘাটাঘাটি করে দেখা যায় ছাতকের লাফার্জ ফেরীঘাট সংলগ্ন এলাকায় ২.৩০ একর ভূমি রয়েছে সড়ক ও জনপথ বিভাগের।
সামাজিক বনায়ন বৃক্ষরোপণের জন্য ২০০৬ সালে ভূমিটি লিজ দেওয়া হয় সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মচারীদের ১৪ জন স্ত্রী সন্তানের নামে।

যার মধ্যে বেশির ভাগই আবুল বশরের আত্মীয়স্বজন বলে জানাগেছে। আব্দুল্লা নামের একজন সিলেটের জালালাবাদ এলাকার হলেও তিনি অনেক আগেই মৃত্যুবরন করেছেন। আর লিজের অংশিদার আছেন ছাতক উপজেলায় মাত্র তিনজন।

তাদের সন্তানদের নামে লিজ নেওয়া এই ভূমিতে ৫০ভাগ শেয়ার রয়েছে সড়ক ও জনপথ কর্তৃপক্ষ। অনুসন্ধানে দেখা যায় সড়ক ও জনপথ বিভাগের দেওয়া ৩০টি শর্ত ভঙ্গ করে পিতা-পুত্র চালাচ্ছেন এমন কর্মকান্ড।

লিজ গ্রহিতা অবশরপ্রাপ্ত শ্রমিক উপজেলার দীঘলি গ্রামের বাসিন্দা নুর উদ্দিন ও মন্ডলিভোগ গ্রামের বাসিন্ধা জাহিদ হোসেন জানিয়েছেন মনির ও আবুল বাশার একক নেতৃত্বে করছেন এসব কাজ। এসবের সাথে তাদের কোনো সংক্ষিপ্ততা নেই। বরং লিজ বাতিল করলে তারা খুশি হবেন।

একই কথা বলেছেন উপজেলার জাতুয়া গ্রামের আছাব আলী নামের আরেক অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিক। লিজ গ্রহিতা তার স্ত্রী আফিয়া বেগম বলেছেন তারা পিতাপুত্র এসব লুটপাট করছে। অনেক আগেই তাদের হুমকীতে এটি ছেড়ে চলে আসছেন তারা।

ভূমিটিতে বৃক্ষরোপণ বেতীত হস্থান্তর যোগ্য না হলেও দেখাশুনার নামে একটি ক্ষমতাপত্র হাতিয়ে নিয়েছেন আবুল বাশারের ছেলে মতিউর রহমান নামে এক ব্যাক্তি কিন্তু সেটিও ভুয়া বলেও দাবী করেছেন নুর উদ্দিন,আফিয়া বেগম ও জাহিদ হোসেন।

তাদের সন্তান বা স্ত্রীদের নামে ভূমিটি লিজ হলেও তারা কখনো তারা আসেন না এই এলাকায়। তারা জানান ভূমিটি রক্ষার জন্যই লিজ নেওয়া হয়েছিল,
এতেই সরিষা ক্ষেতে ঢুকেছে ভূত,আর এককভাবেই লুটপাট করছেন আবুল বাশার ও তার ছেলে সাজ্জাদ মনির ওরফে মতিউর রহমান। যার জন্য লীজ বাতিল হলেও কোনো বাধা নেই জাহিদ হোসেন ও নুর উদ্দিনের।

ভূমিটির লিজ গ্রহিতা মোট ১৪ জনের মধ্যে ৫ জনই আবুল বাশারের আত্মীয় স্বজন ও একই গ্রামের বাসিন্দা। ছাতকে তিনজন পাওয়া গেলেও বাকী ৭জনই আবুলবাশারের জেলা নোয়াখালী ও চাদপুরের বাসিন্দা। তাই তাদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

লীজকৃত ভূমিতে সড়ক ও জনপথ বিভাগের ৫০% ভাগ শিয়ার থাকলেও দেখাশুনার ক্ষমতাপত্রে কোনো সাক্ষর নেই সড়ক ও জনপথ বিভাগের। যে কারনে বাকী ১৩ জন কর্তৃক ক্ষমতাপত্র দিলেও অবগত নয় সড়ক ও জনপথ বিভাগ। তাহলে সন্দেহে বলা যায় ক্ষমতাপত্রটিও বৈধ নয়। আর দেখাশুনার দায়ীত্ব নিলেও মাটি পাথর গাছ ও সরকারী যন্ত্রপাতি চুরি বা বিক্রি করার প্রশ্নই উটেনা। বরং চুরি হলে তারাই নিবেন আইনি ব্যবস্থা। গত ২০ বছর যাবত তাদের পক্ষ থেকে এমন কোনো আইনি প্রক্রিয়া লক্ষ করা যায়নি।

প্রশ্ন হল সড়ক ও জনপথ বিভাগের চোখ ফাকি দিয়ে কি লুটপাট করা সম্ভব সরকারী এসব সম্পত্তি।

সাজ্জাদ মাহমুদ মনির কখনো গায়ক,কখনো নায়ক,কখনো ঠিকটকার,আবার কখনো মানব প্রাচারকারী কখনো রাজনিতিবীদ,আবার কখনো সাংবাদিক,সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এভাবেই নিজেকে ভিন্ন ভিন্ন রুপে উপস্থাপন করার তথ্য মিলেছে তার ফেইসবুক প্রফাইলে।

এছাড়াও নিজেকে বিএনপিনপি নেতা দাবী করে পোষ্ট করেন ফেইসবুক প্রফাইলে। কিন্তু আওয়ামীলীগের অধীনে গত জাতীয় সংসদ নির্বাচন বিএনপি ভয়কট করলেও আওয়ামীলীগ নেতাদের সাথেই ছিল তার সখ্যতা।

গত ৫ আগষ্ট সরকার পতনের পর নিজের প্রফাইল থেকে এরখম একাদিক পোষ্ট ডিলেট করে নিজেকে এখন যুবদল নেতা হিসেবে জাহিল করতে সেসব নেতাদের বিরুদ্ধেই করছেন লেখালেখি।

বিএনপির নাম ভাঙ্গিয়ে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার আসামী ছাত্রলীগ নেতা আবুবক্কর কে নিয়ে প্রকাশ্যে ঘুরেন বিভিন্ন দপ্তরে।

আবার ছাতকের একমাত্র সাংবাদিক পরিচয়ে হুমকী ধামকীও দিচ্ছেন বিভিন্ন কর্মকর্তাদের। বিভিন্ন ব্যবসায়ী ও সরকারী কর্মচারীদেরকে ফোন করে তার সাথে যোগাযোগ রাখার ইঙ্গিতও দিয়ে যাচ্ছে মনির। তার এমন কার্যকলাপে বিরক্ত হয়ে উটেছেন উপজেলার বিভিন্ন শ্রেণী প্রেশার মানুষ। মোবাইল ফোনে অনেকেই এমন তথ্য নিশ্চিত করেছেন তাদের নাম প্রকাশ না করার শর্তে।

এখানেই শেষ নয় পিআইসি সহ বিভিন্ন কাজ নেওয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হওয়ায় অনিয়ম দুর্নিতির পোষ্ট করেন ফেইসবুকে এসব বিষয়ে সংবাদ আসছে বল্লেও কখনো আসেনা এমন সংবাদ।

ফেইসবুকে সাংবাদিকতা শিকানো,মানুষের পেশাকে ছোট করে লেখালেখি ছাড়া নিরোপেক্ষ কোনো পোষ্ট লক্ষ করা যায়নি তার প্রফাইলে। ছাতক উপজেলায় কয়েক যোগ ধরে বিভিন্ন মিডিয়ায় কাজ করেন অসংখ্য সিনিয়র গণমাধ্যম কর্মীরা। তার এমন কর্মকান্ডে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পরেছেন তারাও। অনেকেই জানিয়েছেন প্রকৃত সংবাদ কর্মীর এধরণের আছড়ন হতেই পারে না। একই বক্তব্য দিয়েছেন সাজ্জাদ মনিরের আপন কয়েকজন সহকর্মীও যা সংরিক্ষিত আছে প্রতিবেদকের কাছে।

শুধু তাই নয় মদ গাজা ও ইয়াবা সেবনেও সে পারদর্শী। সাংবাদিকতার অফিসের নামে ছাতক শহরেই গড়ে তুলেছেন নিরাপদ ইয়াবা সেবনের আস্তানা। ইতিপুর্বেই অফিসে বসে তার ইয়াবা সেবনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক সারা ফেলেছে।

মাসখানেক আগে তার অফিসের পাশ থেকে বিপুল পরিমান চোরাচালান আটক করেছে সেনাবাহিনী। এতে ধারনা করা হচ্ছে এসবের সাথেও জরিত থাকতে পারে সাজ্জাদ মনির। গুন্জন আছে ইয়াবা সেবন করে মটরসাইকেল দুর্ঘটনায় পঙ্গু হবার। যে কারনে মজার চলে অনেকেই তাকে ইয়াবা মনির বা লেংড়া মনির নামেও ডাকেন।

ডেস্টিনি ২০০০ লিমিডেটের আবেদন ফরম ও সড়ক ও জনপথ বিভাগের বিভিন্ন কাগজ পত্রে তার জন্মগত নাম মতিউর রহমান হলেও ২০১৬ সালে রহস্য জনক কারনে এভিডেভিড মাধয়মে নাম পরিবর্তন করেছে সাজ্জাদ মাহমুদ মনির রেখেছেন। এছাড়া চোরাচালান আটক করে ১৬ বস্থা ভারতীয় শাড়ী গায়েব করার গুন্জনও আছে এই মনির বিরুদ্ধে । এত কিছুর পরও থেমে নেই তার অবৈধ কর্মকান্ড। বরং বহাল তবিয়েতে ঘুরছেন উপজেলাজুরে,তার এমন কর্মকান্ডের জন্য বদনাম ছড়াচ্ছে গোটা ছাতক বাসির। তার বিরুদ্ধে আইনি বয়বস্থা নেওয়ার জোর দাবী জানিয়েছেন ছাতকের সচেতন মহল।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সড়ক ও জনপথ বিভাগের এক কর্মকর্তা মাটি গাছ বিক্রির বিষয়ে নিশ্চিত করেছেন।

তবে সড়ক জনপথ বিভাগের ভূমিতে এমন কর্মকান্ডের বিষয়ে জানতে চাইলে, বিভাগীয় উপ প্রকৌশলি শাদাত হোসেন বলেন আমি এই এলাকায় একদম নতুন আসছি। তবে এসব বিষয় শুনা যাচ্ছে।শিগ্রই এ বিষয়ে যাচাই বাচাই করে উপর মহলকে অবগত করবেন তিনি।

Daily Frontier News