আব্দুল জাহির মিয়া চুনারুঘাট (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি:
হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার শায়েস্তাগঞ্জ নতুনব্রিজ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ছাত্রজনতার মিছিলে হামলা চালিয়ে গুরুতর জখমের অভিযোগে হবিগঞ্জ ৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন, উপজেলা আওয়ামিলীগের সভাপতি আকবর হোসেন জিতু, সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন, সহ -সভাপতি মো: রজব আলী, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও মিরাশি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো: মানিক সরকার, সাবেক উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও রানিগাঁও ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান রিপন, ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাঁটিয়াজুরী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দালুর রহমান আব্দাল, আহম্মদাবাদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাকির হোসেন পলাশ, উপজেলা আওয়ামিলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ৪নং পাইকপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ওয়াহিদ আলী, উপজেলা আওয়ামিলীগের সদস্য ও দেওরগাছ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মুহিতুর রহমান রুমন ফরাজি সহ ৯৮ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। গত ১৬ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্রজনতার আন্দোলনের মিছিলে অংশ নিয়ে বাহুবল উপজেলার বরগাও গ্রামের ইয়াকুব আলীর ছেলে ওলিউর রহমান সহ বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী সহ সাধারণ লোকজন আহত হন।এর মধ্যে গুরুতর আহত ওলিউর রহমান দীর্ঘদিন চিকিৎসাধীন শেষে চুনারুঘাট থানায় মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর ) রাতে উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক নাসির উদ্দীন মামলাটি দায়ের করেন । চুনারুঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হিল্লোল রায় বিকেলে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, মামরা রুজু হয়েছে, জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলবে। মামলার বাদী নাসির উদ্দীন চুনারুঘাট পৌরসভার চন্দনা এলাকার বাসিন্দা । তিনি বলেন, শানিন্তপূর্ণ মিছিলে তারা সাধারণ ছাত্রজনতার উপরে হামলা চালায় । এতে ওলিউর রহমান সহ বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী সহ সাধারণ মানুষ আহত হয়েছেন। আমি ন্যায়বিচারের স্বার্থে মামলা করেছি এবং অসামীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবী জানাচ্ছি । মামলায় সাবেক এমপি ব্যারিস্টার সুমন কে হুকুমদাতা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। অপর ৯৭ জন আসামির মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস ছামাদ ছাড়াও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি লুৎফুর রহমান চৌধুরী, সাবেক মেয়র মোহাম্মদ সাইফুল আলম রুবেল, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক আসাদুজ্জামান লিটন, উপজেলা তাতীলীগের সভাপতি খন্দকার কবির, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রাসেল , সাধারণ সম্পাদক মাসুম, কাউন্সিল আব্দুল হান্নান সহ আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, কৃষক লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা। এছাড়া মামলায় অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে ৭০থেকে ৮০ জনকে। তবে সরকার পতনের পর থেকে মামলায় উল্লেখিত আসামিদের মধ্যে সাবেক এমপি সুমন সহ অধিকাংশই আত্মগোপণে চলে গেছেন বলে জানা যায়। মামলায় বাদী উল্লেখ করেন, গত ১৬ জুলাই বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিছিল বের করা হয়। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ছাত্র জনতা বিভিন্ন পেশাজীবি সংগঠন সহ সর্বস্তরের মানুষ ছাত্রদের দাবীর প্রতি সমর্থন করে রাস্তায় নেমে আসে। একপর্যায়ে ঢাকা সিলেট মহাসড়কের নতুনব্রিজ একটি মিছিল বের করে।মিছিলিটি শায়েস্তাগঞ্জ নতুনব্রিজ গোলচত্বরের সামনে পৌঁছলে পূর্বপরিকল্পিতভাবে দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে উল্লেখিত আসামিরা অসংখ্য ছাত্র জনতা ও সাধারণ মানুষকে আহত এবং ক্ষত বিক্ষত করে বিভিন্ন অস্ত্র দ্বারা । এছাড়াও কোন কোন আসামীগণ পাথর ও ইট পাটকেল ছুড়িয়া মিছিলে অংশ নেওয়া ছাত্র-জনতাকে আহত ও গুরুত্বর জখম করেন। আহতদের মধ্যে ওলিউর রহমান দীর্ঘদিন চিকিৎসাধীন ছিলেন। দেশের আইন শৃঙ্খলার পরিস্থিতি স্বাভাবিক না থাকায় এবং পুলিশ কার্যক্রম স্বাভাবিক না থাকায় ঘটনার ৫৬দিন পর থানায় এ মামলা রুজু হয়। উল্লেখ্য গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর এই প্রথম চুনারুঘাট থানায় সাবেক এমপি সুমন সহ আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা রুজু হয়েছে।
Copyright © 2024 Daily Frontier News | Design & Developed By: ZamZam Graphics