Daily Frontier News
Daily Frontier News

ঘাটাইল উপজেলায় আশ্রয়ন প্রকল্পের অধীনে বরাদ্দকৃত ঘরে ফাটল

 

মোঃ মশিউর রহমান, সিনিয়র রিপোর্টারঃ-

 

টাংগাইল জেলার ঘাটাইল উপজেলায় মুজিবর্ষ উপলক্ষে আশ্রয়ণ প্রকল্পের অধীনে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায়ে মাত্র ২৭৬ টি ঘর বরাদ্দ দেয়া হয়েছিলো। প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ে গৌরিশ্বর এলাকায় ভূমিহীনদের মাঝে ৪৪ টি ঘর বরাদ্দ দেয়া হয়। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান এর সু-যুগ্য কন্যা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আশ্রয়ণ প্রকল্পের বেশ কয়েকটি কয়েকটি ঘর ভূমিহীন মানুষদের মাঝে দিয়েছিলেন। কিন্তু অতি লজ্জাজনক ও দুঃখের সাথে বলতে হয় যে, বছর না যেতেই ভেঙে ফেলা হয়েছে মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া উপহার তথা আশ্রয়ণ প্রকল্পের বেশ কয়েকটি ঘর। এর আগ মুহূর্তে বড় ধরণের ফাটল, জীর্ণ দশা ও বসবাসের অযোগ্য হওয়া সহ নানা অনিয়মের সংবাদ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর সরেজমিনে পরিদর্শন করে উপজেলা প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা পুনরায় ঘরসমূহ নির্মাণের আশ্বাস দিয়েছিলো বাসিন্দাদের। আশ্বাসের কয়েক দিন পর থেকে ওই ঘরসমূহ ভেঙে পুনরায় নির্মাণের কাজ শুরু করেছে। ভুক্তভোগী বাসিন্দারা সাংবাদিকদের জানায়, ঝড় ও রোদ-বৃষ্টির মধ্যে ভেঙে ফেলা ঘরে তাদের মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে। এখনো বিভিন্ন আতঙ্কে দিন কাটছে তাদের। নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার ও নানা অনিয়মের কারণে ঘরগুলোর ওই অবস্থা তৈরি হয়েছে। এতে করে অভিযোগ উঠে নির্মাণ কাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের। মাটির সমস্যার কথা বলে পাশ কাটিয়ে যায় প্রশাসন। পরবর্তীতে তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী অফিসার আশ্রয়ন কেন্দ্র পরিদর্শন করে তা মেরামতের ব্যবস্থা করেন। কিন্তু কিছুদিন পরেই আবারো একই অবস্থার সৃষ্টি হয়। তাছাড়া দেখা দেয় বড় বড় ফাটল। খসে পড়তে থাকে পলেস্তার। সংবাদকর্মীদের কাছে দুর্দশার কথা তুলে ধরেন আশ্রয়ন কেন্দ্রের বাসিন্দারা। তখন টনক নড়ে প্রশাসনের। ছুটে যান প্রশাসনের কর্তারা। আশ্বাস দেয়া হয় ঘর পুনঃনির্মাণ ও সংস্কারের। সংবাদকর্মীদের কাছে ঘরের বিষয় তুলে ধরায় নানা ধরণে হুমকি ও বিভিন্ন রকমের ভয়ভীতি দেখানো হয়েছে বাসিন্দাদের। পরে যে সমস্ত ঘরে বড় বড় ফাটল, জীর্ণ দশা আর বসবাসের অযোগ্য সে সব ঘর কয়েকদিন আগে ভেঙে ফেলা হয়েছে। ঝড় ও রোদ-বৃষ্টির মধ্যে ভেঙে ফেলা ঘরের বাসিন্দারা মানবেতর জীবনযাপন করতেছে। কেউ আশ্রয় কেন্দ্রের পাশে কোন রকম ছাপড়া তুলে বসবাস করছে আবার কেউ অন্যের আশ্রয় কেন্দ্রের ঘরের বারান্দায় বসবাস করছে। ওই আশ্রয় কেন্দ্রের অন্যান্য ঘরগুলোতেও ফাটল থাকায় আতঙ্কে দিন কাটছে বাসিন্দাদের। পানি ও পয়ঃনিস্কাশন সমস্যাতো রয়েছেই। শরীফা বেগম ও খুকি বেগমের সাক্ষাৎকারে সাংবাদিকদের জানান, নতুন করে ঘর তৈরি করে দিবে বলে ভেঙে ফেলা হয়েছে। ভাঙার পর ঠিকমতো কাজও করতে আসে না লোকজন। অন্যের ঘরের বারান্দা ও রান্না ঘরে রইছি। পোলাপান, গরু ছাগল, হাঁস-মুরগি নিয়ে খুব কষ্টে আছি। আমাদের ঘরে বড় বড় ফাটল। আতঙ্কে রয়েছি। অফিসার আইসা খুব রাগারাগি করলো। কাউকে যেন কিছু না বলি। ঝড়ের সময় দেয়াল ভেঙে পড়লে বাঁচমুনা। ঘর ভেঙে ফেলা আশ্রয় কেন্দ্রের বাসিন্দা মাজেদা বেগম সাংবাদিকদের জানায়, মুজিববর্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পেয়ে অনেক খুশি হয়ে ছিলাম। কয়দিন পরেই বড় বড় ফাটল দেখা দেয়। খসে খসে পড়ে পলেস্তার। নতুন করে ঘর তৈরি করে দিবে বলে ঘর ভেঙে ফেলা হয়েছে। ঠিকমতো লোক কাজ করতে আসে না। ঝড়-বৃষ্টির মধ্যে গাছের তলায় ছাপড়া তুলে রইছি। খুব কষ্ট হইতাছে। মাটির কারণে কয়েকটি ঘরে সমস্যা থাকায় তা ভেঙে পুনঃনির্মাণ করা হবে বলে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা এনামুল সাহেব সাংবাদিকদের একথা জানান।

Daily Frontier News