Daily Frontier News
Daily Frontier News

কোরআন প্রতিযোগিতায় নাম দেয়ার কথা বলে—-

 

নবীগঞ্জে মাদ্রাসার শিক্ষক কর্তৃক ১১ বছরের ছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্ট! থানায় অভিযোগ- এলাকার টানটান উত্তেজনা

 

বুলবুল আহমেদ, নবীগঞ্জ হবিগঞ্জ প্রতিনিধি:-

 

 

.     হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলায় কালিয়ার ভাঙ্গাঁ ইউনিয়নের মান্দারকান্দি গ্রামে সকাল বেলায় মক্তবে হুজুরের নিকট কোরআন শিক্ষা দিতে গিয়ে অলিউডর রহমান নামের এক মাদরাসার শিক্ষক কর্তৃক  ১১ বছরের কিশোরীকে ধর্ষণের চেষ্ট ও শ্লীলতাহানির গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। জনৈক মোছাঃ শাহ প্রমি আক্তার বুশরা ভক্তারপুর আবুল খায়ের উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী।

জানাযায়, গত সোমবার (২৬ জানুয়ারি) সকালে প্রতিদিনের ন্যায় জনৈকা (১১) বছরের কিশোরী ও তার বোন সহ সহপাঠীদের সাথে মক্তবে যায় কোরআন শিক্ষা নিতে৷ ঐ কিশোরী লম্পট হুজুর নামের শিক্ষকের কু-নজরে পড়ে। এতে সু-কৌশলে লম্পট ধর্মীয় শিক্ষক অলিউর রহমান কিশোরী মেয়েটিকে পাশ্ববর্তী মান্দারকান্দি গ্রামের পশ্চিম পাড়া পুরাতন জামে মসজিদের ইমাম সাহেবের খালি কক্ষে নিয়ে মেয়েটির পড়নের কাপড় খোলে অমানুষিক শিশু নির্যাতন ও ধর্ষণের চেষ্টা চালায়! এতে মেয়েটি চিৎকার করলে তাকে হত্যা করে ফেলবে বলেও হুমকি দেয় লম্পট শিক্ষক। একপর্যায়ে ভাগ্যক্রমে মেয়েটির বড় বোন মসজিদে তার খোঁজে এসে ইমামনের দরজা খোলা মাত্রই সু-চতুর হুজুর নামের শিক্ষক পালিয়ে যায়!

সে নবীগঞ্জ উপজেলার কালিয়াভাঙ্গা ইউনিয়নের মান্দারকান্দি গ্রামের আব্দুস শহিদের পুত্র অলিউডর রহমান। সে বানিয়াচং উপজেলায় একটি কওমী মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করছে বলে জানান গ্রামবাসী।

ধর্ষণের চেষ্টার শিকার ঐ মেয়েটি একই গ্রামের দিনমজুর হাবিবুর রহমান এর  মেয়ে জনৈকা কিশোরী (১১)।

এ ব্যাপারে গ্রামবাসী আরো জানান, এই ধর্ষণের চেষ্টাকারী লম্পট অলিউর রহমান কদুপুর একটি মহিলা মাদ্রাসার শিক্ষক।

এ ব্যাপারে কিশোরীর পরিবারের কাছ থেকে আরো জানা যায়, গত (২৪ জানুয়ারি) শুক্রবার রাত ৮টার দিকে ঐ কিশোরী মেয়ের মায়ের মোবাইল ফোনে শিক্ষক অলিউডর রহমান কল দিয়ে মেয়ের মাকে বলেন, তোমার মেয়েকে আমি কোরআন তেওয়াতে নাম দিতে চাচ্ছি। এর জন্য তার জন্ম নিবন্ধন লাগবে। এমন কথা শুনে মেয়ের মা তার মেয়ের কাছে ফোন দিয়ে বলেন, তর হুজুরের সাথে কথা বল। মেয়েটি ফোন যখন কথা বলে তখন তার হুজুর বলেন- তোমার ও তোমার চাচাতো বোনের জন্ম নিবন্ধন আগামীকাল সকালে নিয়ে আসিও। যেখানে তুমাদেরকে কোরআন শিক্ষা দেই সেখানে। মেয়েটি বলে ঠিক আছে হুজুর।

এতে পর দিন সকালে কিশোরী ও তার চাচাতো বোন কোরআন শিক্ষা জন্য ওই বাড়িতে যায়। তখন হুজুর বলে তোমরা কি জন্ম নিবন্ধন আনছো? তখন ঐ কিশোরী মেয়েটি বলে হুজুর আমি আনছি। তার সাথে থাকা চাচাতো বোন উমিকে জিজ্ঞেস করে তুমি কি তুমার

জন্ম নিবন্ধন কার্ড আনছো? তখন উমি বলে না হুজুর, আমি তো আনি নাই। তখন তাদের হুজুর বলে তুমি বাড়িতে গিয়ে কার্ড নিয়ে আসো। তখন সে বলে, হুজুর আমার সাথে আমার বোন প্রমিকে নিয়ে যাই। এ সময় তাদের হুজুর বলে তুমি একা যাও। তখন সে একা বাড়িতে চলে যায়। তাকে বাড়িতে পাটিয়ে এই সুযোগটি লম্পট আলিউর তার কিশোরী ছাত্রী প্রমিকে ফুসলিয়ে পাশে থাকা মসজিদের ইমামের কক্ষে নিয়ে গিয়ে অনৈতিকভাবে জোরপূর্বক ধর্ষণ করার চেষ্টা করে। তার কাপড় ছোপড় খোলার নানান চেষ্টা চালায়। এতে সে বাহির হয়ে চলে যেতে চাইলে তার হুজুর তাকে জোরপূর্বক বুকে জড়িয়ে ধরে। রাখে আল্লাহ মারে কে? ইজ্জত দেয়া- নেয়ার মালিক আল্লাহ। এর কিছুক্ষন পর তার বোন উমি এসে হাজির হয়ে দেখে যে, হুজুর তার বোনকে জড়িয়ে ধরে আছে। এসব দেখে চিৎকার করলে লম্পট হুজুরের কাছ থেকে ছুটে দৌড়ে পালিয়ে বাড়ি গিয়ে তারা দুইজন তাদের পিতা- মাতা সহ আত্মীয় স্বজনদের কাছে সব কিছু খুলে বলে।

এমন ঘটনার কথা শুনে তাদের পরিবারের লোকজন তাৎক্ষণিক নবীগঞ্জ থানায় এসে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগে অলিউর রহমানকে আসামী করে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন, কিশোরীর বাবা শাহ হাবিবুর রহমান।

এ ব্যাপারে কিশোরীর বাবা বলেন, শিক্ষক ও হুজুর নামের কলংক লম্পট অলিউর। সে কোরআন শিক্ষার নামে যে কু-কর্ম আমার মেয়ের সাথে করলো তা ধর্য্য ধরার মতো নয়। দুঃখজনক হলেও সত্য যে, একজন মাদ্রাসার শিক্ষক ও মক্তবের হুজুর হয়ে যদি একটি কিশোরী মেয়ের সাথে এমন করতে পারে, তাহলে আমরা আমাদের ছেলে- মেয়েদের কার কাছে শিক্ষা গ্রহন করার জন্য দেব? আর কাকে বিশ্বাস করবো? ঐ লম্পটের সাথে কিছু নারী লিপ্সু প্রভাবশালী সাথে তার সম্পর্ক থাকার কারণে এখন পর্যন্ত এর কোন সুষ্ঠু বিচার সালিশ হয়নি! কেউ এর উপরোক্ত বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে, বুঝে,  শুনেও না শুনার বাহানা করে এড়িয়ে যাচ্ছেন! সে এতো বড় অপরাধ করেও গ্রাম, সমাজ ও আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বিরদর্পে চলাফিরা করছে! এ নিয়ে এলাকায় সমালোচনার পাশাপাশি টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে।

এ ব্যাপারে কিশোরী মেয়ের বাবা নবীগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন বা তাকে আইনের আওতায় না আনায় পুলিশের প্রতি স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়।

এতে উল্টো কিশোরীর বাবা সহ তাদের পরিবারের লোকজন নানান আতংকে রয়েছেন।

এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ থানার কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ কামাল হোসেন পিপিএম-

ধর্ষণের চেষ্টা ও শ্লীলতাহানির  অভিযোগের বিষয়টি সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ধর্ষণের চেষ্টার একটা অভিযোগ আমরা পেয়েছি। অপরাধীর  বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

অবশেষে গতকাল (২৯ জানুয়ারি) দুপুরে থানার এস. আই তরিকুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন৷

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ধর্ম শিক্ষক ও মক্তবের হুজুর অলিউডর রহমানের মোবাইল ফোন 01760268588 এই নাম্বারে বারবার কল দিলেও তিনি ফোন রিসিভ না করে ফোনটি বন্ধ করে দেন। এতে তার কোন মন্তব্য পাওয়া যায় নি।

 

Daily Frontier News