মাসুদ পারভেজ বিভাগীয় ব্যুরোচীফ
চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম ওয়াসার পানির সিস্টেম লস কমাতে বিল পরিশোধ প্রক্রিয়াকে অটোমেশনের আওতায় আনতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম ওয়াসা কর্তৃপক্ষ। এতে দীর্ঘদিনের সংকট নিরসনের পাশাপাশি পানির অপচয় রোধ করা যাবে।
পাইলট প্রকল্প হিসেবে নগরে চান্দগাঁও এলাকায় বসানো হবে ৩ হাজার পিওর আল্ট্রাসনিক ডিজিটাল মিটার।
প্রকল্পের জন্য চলতি বছরের ১১ জানুয়ারি দরপত্র আহ্বান করা হয়।
অটোমেটেড মিটার রিডিং ফিচারের স্মার্ট ওয়াটার মিটার সরবরাহের পাশাপাশি স্থাপন ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বও পালন করবে চুক্তিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানটি। পাইলট প্রকল্পটির প্রাথমিক ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৫ কোটি ৮০ লাখ টাকা।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) স্মার্ট মিটার পাঠিয়ে পরীক্ষা করা হয়েছে। বুয়েটের টেস্ট রিপোর্ট পাওয়া গেছে।
অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর লোরা গেটওয়েভিত্তিক মিটারের কার্যকারিতায় সফলতা পাওয়া গেছে। লিথুয়ানিয়ার তৈরি এক্সিওমা কোম্পানির মেশিনটির লোকাল এজেন্ট পদ্মা স্মার্ট টেকনোলজি মিটার বসানোর কাজ করবে। পাইলট প্রকল্পটি সফলভাবে বাস্তবায়ন হলে পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমে সবগুলো সংযোগকে এর আওতায় আনা হবে।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, যে এলাকায় স্মার্ট মিটার বসানো হবে সেই এলাকার আবাসিক ও বাণিজ্যিক গ্রাহকদের বিলের হিসাব হবে এই ডিজিটাল মিটারে। এছাড়া, অনলাইনে বিল প্রদানের জন্য পেমেন্ট গেটওয়ে থাকবে ডিজিটাল এই সিস্টেমে।
চট্টগ্রাম ওয়াসার স্মার্ট মিটার স্থাপন প্রকল্পের পরিচালক ও আইসিটি সার্কেলের সিস্টেম অ্যানালিস্ট প্রকৌশলী শফিকুল বাসার বলেন, পাইলট প্রকল্পের আওতায় নগরীতে প্রথম ধাপে ৩ হাজার স্মার্ট মিটার বসানোর কাজ শুরু হবে শীঘ্রই। প্রথম ধাপে চান্দগাঁও এলাকাসহ আশপাশের এলাকায় বসানোর পরিকল্পনা আছে। মিটার পরিদর্শকের কারণে গ্রাহকদের ভোগান্তি কমানোর জন্য এ ডিজিটালাইজেশনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যে এলাকায় স্মার্ট মিটারগুলো বসানো হবে ওই এলাকার আবাসিক ও বাণিজ্যিক গ্রাহকদের বিলের হিসাব হবে ডিজিটাল মিটারে। এজন্য কোনো মিটার পরিদর্শকের প্রয়োজন হবে না। মনুষ্য সংস্পর্শ ছাড়াই মিটারের রিডিং অটো চলে যাবে সেন্ট্রাল সার্ভারে। এটা চালু করা গেলে পানি চুরি বন্ধ হয়ে যাবে। কমবে পানির অপচয়ও।
ওয়াসার প্রধান প্রকৌশলী মাকসুদ আলম বলেন, নন-রেভেনিউ ওয়াটারের ২০-২৫ শতাংশ পানি মানুষ সৃষ্ট ভুল অথবা মিটার রিডিংয়ের কারণে হয়ে থাকে। একজন মিটার পরিদর্শক দুই থেকে আড়াই হাজার মিটারের তথ্য সংগ্রহের দায়িত্বে থাকেন। কিন্তু বাস্তবিক বিবেচনায় একজনের পক্ষে এ কাজ করা প্রায় অসম্ভব। আশা করছি, প্রকল্পটি সফলভাবে বাস্তবায়ন হলে পানির অপচয় রোধ হবে। ওয়াসার রাজস্বও বাড়বে।
বর্তমানে চট্টগ্রাম ওয়াসার চারটি প্রকল্প ও গ্রাউন্ড ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টে দৈনিক গড়ে পানি উৎপাদিত হয় প্রায় ৪৫ কোটি লিটার। এর মধ্যে শেখ রাসেল পানি সরবরাহ প্রকল্প থেকে দৈনিক ৯ কোটি লিটার, শেখ হাসিনা পানি শোধনাগার (প্রকল্প-১) থেকে ১৪ কোটি লিটার, শেখ হাসিনা পানি শোধনাগার (প্রকল্প-২) থেকে ৯ কোটি লিটার, মোহরা পানি সরবরাহ প্রকল্প থেকে ৯ কোটি লিটার পানি উৎপাদন করা হয়। এছাড়াও গ্রাউন্ড ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট থেকে ৪ কোটি লিটার পানি উৎপাদিত হয়।
Copyright © 2025 Daily Frontier News | Design & Developed By: ZamZam Graphics