Daily Frontier News
Daily Frontier News

আজ আখেরি চাহার শোম্বা কি এবং কেন

 

গাজী মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম জাবির।।

আজ বুধবার (১৩ সেপ্টেম্বর) আখেরি চাহার শোম্বা । সফর মাসের শেষ বুধবার শেষ নবী ও রাসূল হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু তা’য়ালা আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর দীর্ঘ অসুস্থতার পর সাময়িক সুস্থ হয়ে ওঠার দিন। এদিনকে স্মরণ করে মুসলিম উম্মাহর মধ্যে যে ইবাদত ও উৎসব প্রচলিত তাকেই ‘আখেরি চাহার শোম্বা বলে।বাংলাদেশসহ বিশ্বের অনেক দেশের মুসলিম উম্মাহ রাষ্ট্রীয় ও ব্যক্তিগত উদ্যোগে এ দিনটি যথাযথ ধর্মীয় ভাবগম্ভীর্যের মাধ্যমে পালন করে থাকেন।

আখেরি চাহার শোম্বা মূলত আরবি ও ফার্সি বাক্য। মুসলিম বিশ্বের জন্য আজকের দিনটি আনন্দের ও বেদনার। সফর মাসের শেষ বুধবার মহানবী সাল্লাল্লাহু তা’য়ালা আলাইহি ওয়া সাল্লাম রোগমুক্ত হয়েছিলেন ।

তাই মুসলিম বিশ্বে অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ দিবস হিসাবে এই দিনটি পালিত হয়। পবিত্র আখেরি চাহার শোম্বা উপলক্ষ আজ ইসলামিক ফাউন্ডেশনসহ বিভিন্ন দরবার,খানকা, আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, গাউছিয়া ইসলামিক মিশন, তরিকতপন্থী সুন্নী-সুফি ঘরানার আশেকে রাসূলদের উদ্যোগে সারাদেশে আলোচনা সভা,মিলাদ ও দোয়া মাহফিল এবং বিশেষ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে।

আখেরি চাহার শোম্বা মূলত আরবি ও ফার্সি পরিভাষা। আরবি শব্দ আখেরি অর্থ শেষ। চাহার শোম্বা ফার্সি যার অর্থ বুধবার। অর্থাৎ সফর মাসের শেষ বুধবার মুহাম্মদ (সা.)-এর সাময়িক সুস্থতাকে স্মরণ করে মুসলমানরা যে ইবাদত করেন, তাই আখেরি চাহার শোম্বা।

২৩ হিজরির শুরুতে রাসূলুল্লাহ (সা.) গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। ক্রমেই তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। তিনি এতটাই অসুস্থ হয়ে পড়েন যে, নামাজে ইমামতি পর্যন্ত করতে পারছিলেন না। ২৮ সফর বুধবার মহানবী (সা.) সুস্থ হয়ে ওঠেন।

নবী করিম (সা.)-এর এই দিনের গোসলই জীবনের শেষ গোসল ছিল। এরপর তিনি পুনরায় অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং এই অসুস্থতাতেই তিনি ইহজগৎ ত্যআগ করেন। এ জন্যই এই দিনে তাঁর সর্বশেষ সুস্থতা ও গোসলস্মৃতি পালন করা হয়ে থাকে। এই দিনে অজু-গোসল করে ইবাদত–বন্দেগি করা হয় এবং নবী করিম (সা.)-এর প্রতি দরুদ শরিফ পাঠ করে সওয়াব রেছানি করা হয়। বিশেষত, নবীজি (সা.)-এর সুস্থতার খুশির স্মরণে সাহাবিগণের নীতি অনুসরণ ও অনুকরণে দান-খয়রাত ও খাদ্য বিতরণ করা হয়ে থাকে।

নবীয়ে আকরাম (সা.)-এর জীবনে অনেক আনন্দের দিন বা মুহূর্ত এসেছে, যখন তিনি অত্যন্ত আনন্দিত হয়েছেন, শুকরিয়া জ্ঞাপনের জন্য আল্লাহ তায়ালার দরবারে সিজদাবনত হয়েছেন। কোনো কোনো ঘটনায় তাঁর পরিবারবর্গ ও সাহাবিগণও বিভিন্নভাবে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। নবীজি (সা.)-এর সুস্থতার খুশিতে অনেক সাহাবি অনেক দান-খয়রাতও করেছিলেন বলে জানা যায়। ধর্মীয় উপলক্ষগুলো শুধু দিবস পালনেই সীমাবদ্ধ রাখলে হবে না, জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে নবীজি (সা.)-এর আদর্শ অনুকরণ ও অনুসরণ করতে হবে, তবেই ঈমান পরিপূর্ণ হবে। রাসুলে আকরাম (সা.) আরও বলেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর জন্য মহব্বত করে ও আল্লাহর জন্য ঘৃণা করে এবং আল্লাহর জন্য দান করে ও আল্লাহর জন্য বিরত থাকে; অবশ্যই তার ঈমান পূর্ণ হলো।’ (আবু দাউদ: ৪০৬৪)। প্রিয় নবীজি (সা.)-এর ভালোবাসায় আখেরি চাহার শোম্বা অত্যন্ত তাজিমের সঙ্গে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মাধ্যমে পালন করা হয়, যা আমাদের আমলে ইতিবাচক প্রতিফলন ঘটায়। নবীজি সাল্লাল্লাহু তা’য়ালা আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর জীবনের ব্যবহারিক ও প্রায়োগিক দিকগুলো এবং তাঁর অনুপম আদর্শ সামনে নিয়ে এলে তা আমাদের সমাজ ও সভ্যতার জন্য পরম উপকারী হবে। মানুষ দুনিয়ার শান্তি ও পরকালে মুক্তির দিশা খুঁজে পাবে- ইনশাআল্লাহ। সেই কামনা এবং বাসনা আমিসহ প্রত্যেক ঈমানদার নর- নারীর।

Daily Frontier News