নাঙ্গলকোট (কুমিল্লা) প্রতিনিধি:-
কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলার ১টি পৌরসভা ও ১৬টি ইউনিয়নে নির্বিচারে কৃষিজমি ও সরকারি খালের মাটি কেটে ইটভাটা, বিভিন্ন স্থাপনা ও নতুন বাড়ি নির্মাণকারীদের কাছে বিক্রি করা হচ্ছে। ফলে কৃষি জমি ধ্বংস, সড়ক গুলো নষ্ট ও ধুলাবালির কারণে শিশু-সহ বিভিন্ন বয়সের মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ছে।
অবৈধ ট্রাক্টরের বেপরোয়া গতির কারণে ধুলাবালিতে উপজেলার প্রায় সকল সড়কে দিনেও রাতের অন্ধকার নেমে আসে। প্রশাসন কিছু স্থানে অভিযান পরিচালনা করলেও ফলাফল শুন্য। ফলে ফসলি জমিকে পুকুর বানাচ্ছে মাটিসন্ত্রাসীরা।
অনুসন্ধানে জানা যায়, উপজেলার বাঙ্গড্ডা ইউনিয়নের কাদবা, সোনাবেরী, করের ভোমরা, ছোট স্বাঙ্গীশ্বর, পেরিয়া ইউনিয়নের আশারকোটা, উত্তর শাকতলী, শ্রীফলিয়া, কাজী জোড়পুকুরিয়া, চেহরিয়া, শিবপুর, মক্রবপুর ইউনিয়নের তুলাগাঁও, বাতড়া, রায়কোট উত্তর ইউনিয়নের ছুপুয়া, রায়কোট,অলিপুর, রায়কোট দক্ষিণ ইউনিয়নের শ্যামিরখিল, ঝাটিয়াপাড়া, মৌকরা ইউনিয়নের তেতৈয়া, কেশতলা,
চান্দাইশ, করাকোট, পৌঁছির, বটতলী ইউনিয়নের কাশিপুর, উল্লাখালি, ঢালুয়া ইউনিয়নের বদরপুর,বায়েরা, মগুয়া, মন্নারা, বক্সগঞ্জ ইউনিয়নের শুভপুর, কদমতলী, বড়কালী, কোকালী, জোড্ডা পশ্চিম ইউনিয়নের মান্দ্রা, গোহারুয়া, মানিকমুড়া, জোড্ডা পূর্ব ইউনিয়নের দক্ষিণ শ্রীহাস্য, তালতলা, বাইয়ারা, পৌরসভার অশ্বদিয়া-সহ উপজেলার একটি পৌরসভা ও ১৬টি ইউনিয়নের অন্তত ১শ’ স্থানে মাটি কাটা হচ্ছে। ফলে ট্রাক্টরের দখলে চলে গেছে উপজেলার অধিকাংশ সড়ক। ট্রাক্টর গুলোর ধুলাবালির কারণে সড়কে চলাচলকারীরা চরম বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে। সড়কের পাশের বাড়ি ঘরে ধুলাবালি প্রবেশ করার বাড়িতে বসবাস মুশকিল হয়ে পড়ছে।
বিভিন্নস্থাবে গিয়ে দেখা যায়, মাটি কেটে কৃষিজমি পুকুর বানিয়ে ফেলা হয়েছে। মাটি গুলো ভ্যাকু মেশিনে কেটে ট্রাক্টরে করে ইটভাটায় ও নতুন বাড়ি ভরাট করতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
জানা যায়, ভ্যাকু ৫ হাজার ও প্রতিটি ট্রাক্টর সড়কে চলাচলের জন্য ২ হাজার টাকা দিয়ে মালতী কার্ড নিতে হয় উপজেলার পৌর মেয়রের ভাই খোরশেদের কাছ থেকে। মালতী কার্ড থাকলে কোন সমস্যা হয় না। পাশাপাশি প্রশাসন ও কথিত সাংবাদিক ম্যানেজ করার জন্য রয়েছে খোরশেদ ও তার দল।
নাঙ্গলকোট থানা অফিসার ইনচার্জ দেবাশীষ চৌধুরী বলেন, মালতী কার্ডের বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা।নাঙ্গলকোট উপজেলা কৃষি অফিসার নজরুল ইসলাম বলেন, কৃষি আবাদি জমির ৬ থেকে ১০ ইঞ্চি মাটি যদি কেটে নেয়া হয় তাহলে এই জমির যে ক্ষতি হবে সেই ক্ষতি পূরণ হতে ৮০/১০০ বছর সময় লাগবে। এ অপূরণীয় ক্ষতি থেকে বাঁচতে আমরা কৃষকদেরকে নিয়ে করা প্রত্যেকটি সভা সেমিনারে উদ্বুদ্ধ করে থাকি।
নাঙ্গলকোট উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইসমাইল হোসেন বলেন, আমরা বিষয়টি নিয়ে কাজ করছি এবং বেশ কিছু অভিযান পরিচালনা করে তাদেরকে শাস্তির আওতায় এনেছি। আমাদের অভিযান চলমান আছে এবং থাকবে।
Copyright © 2025 Daily Frontier News | Design & Developed By: ZamZam Graphics