মোঃ নেওয়াজ মোর্শেদ নোমান,
জয়পুরহাট প্রতিনিধিঃ
জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার ধরঞ্জীতে পরকীয়ার জেরে “নিখোজের প্রায় পাঁচ মাস পর কলেজ ছাত্র নাঈমের মরদেহ বাড়ির টিউবওয়েল এর পাশে নতুন টয়লেটের গর্ত খুড়তে মাথার খুলিসহ হাড়গোড় উদ্ধারের পর বাড়ির মালিককে আটকরে পর হত্যাকান্ডের মুলপরিকল্পনাকারী রেজ্জাকুল ও তার স্ত্রী সাবিনাকে গ্রেফতার করেছে র্যাব।
মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় বগুড়া সদর উপজেলার পীরগাছা এলাকা থেকে তাদের স্বামী- স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-৫ ও ১২ সদস্যরা।
জয়পুরহাট র্যাব-৫ সিপিসি-৩ ক্যাম্পের অধিনায়ক সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলাম ১২ সেপ্টেম্বর গভীর রাতে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে মামলার আরেক আসামি মরদেহ পাওয়া বাড়ির মালিক সামছুল ইসলামকে পুলিশি হেফাজতে নেওয়ার পর মামলা হলে তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- রেজ্জাকুল ওরফে রাজ্জাক (৪৩) ও তার স্ত্রী সাবিনা খাতুন (৩৮)। তারা বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার গোপীনাথপুর এলাকার বাসিন্দা। গত কয়েকমাস ধরে তারা পাঁচবিবি উপজেলা ধরঞ্জী গ্রামে সামছুলের বাড়িতে ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করতেন।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জয়পুরহাট র্যাব ক্যাম্পের অধিনায়ক রফিকুল ইসলাম আরও জানান,, গত শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) পাঁচবিবি উপজেলার ধরঞ্জী গ্রামে সামছুল ইসলামের বাড়ির টিউবওয়েলের পাশে টয়লেটের মাটি খনন করতে যায় নির্মান শ্রমিক। সেসময় গর্তের স্থানে লাউ গাছ লাগিয়ে জাঙলা দেওয়া ছিল। নির্মান শ্রমিক লাউ গাছ সরানোর জন্য মাটিতে কোদালের কোপ দিলে লাউ গাছসহ মাটি নীচে দেবে গিয়ে দুর্গন্ধ বের হতে থাকে। এরপর পুলিশকে খবর দিলে সেখান থেকে মানুষের মাথার খুলি হাড়গোড় ও তার সাথে প্যান্টসহ গলিত মরদেহ পাওয়া যায়। পরে প্যান্ট দেখে মরদেহটি নাঈম হোসেনের (২৩) বলে শনাক্ত করে তার পরিবার। এ ঘটনায় থানায় বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেন নাঈম হোসেনের মা গোলাপি বানু। মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারে জয়পুরহাট র্যাব-৫ সিপিসি-৩ ও বগুড়ার র্যাব-১২ সদস্যরা যৌথ অভিযান চালিয়ে বগুড়া সদরের পীরগাছা এলাকা থেকে রেজ্জাকুল ওরফে রাজ্জাক ও তার স্ত্রী সাবিনা খাতুনকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে পাঁচবিবি থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
পাঁচবিবি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জাহিদুল হক বলেন, মরদেহের প্যান্ট, বেল্ট দেখে পরিচয় নিশ্চিত হয়ে নিহতের মা বাদী হয়ে থানায় হত্যা মামলা করেছেন। মামলায় পরকীয়ার জেরে নাঈম হোসেনকে হত্যা করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।
তিনি আরও বলেন, ভাড়াটিয়া রাজ্জাকের স্ত্রী সাবিনার সঙ্গে পরকীয়ার কারণে নাঈম হোসেনকে হত্যার পর মরদেহ গুম করতে মাটি খুঁড়ে লুকিয়ে রাখা হয়। আসামিদের আগামীকাল আদালতে পাঠানো হবে এবং রিমান্ড চাওয়া হবে।
উল্লেখ্য: চলতি বছরের ২২ এপ্রিল রাত ৮টার দিকে ধরঞ্জী বাজারে যাওয়ার কথা বলে বাইরে বের হয়ে বাড়ি ফেরেননি। অনেক খোঁজাখুঁজি করে তাকে না পেয়ে ২৫ এপ্রিল পাঁচবিবি থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন তার মামা জাহেদুল ইসলাম। জিডির পর প্রায় পাঁচ মাস ধরে নিখোঁজ নাঈমের সন্ধানে পুলিশ তৎপর থাকলেও তার সন্ধান পাননি। অবশেষে প্রায় পাঁচ মাস পর তার মরদেহ পাওয়া।
Copyright © 2025 Daily Frontier News | Design & Developed By: ZamZam Graphics