Daily Frontier News
Daily Frontier News

ওসমানীনগরে আবাসিক হোটেল থেকে ব্যবসায়ীকে অজ্ঞান উদ্ধার হাসপাতালে নিলে মৃত ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক।এলাকায় কৌতুহল শুরু

 

কে এম রায়হান ওসমানীনগর সিলেট::

 

সিলেটের ওসমানীনগরের গোয়ালাবাজারে সম্রাট আবাসিক হোটেল থেকে রুহেল মিয়া (৩৮) নামের এক ব্যবসায়ীকে অজ্ঞান উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলে মৃত ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। সে উপজেলার বুরুঙ্গা ইউনিয়নের তিলাপাড়া গ্রামের আকল মিয়ার ছেলে এবং বুরুঙ্গা বাজারের ফ্যামিলি শপের স্বত্বাধিকারী। তার রহস্যজনক মৃত্যু নিয়ে এলাকায় ব্যাপক কৌত‚হল শুরু হয়েছে।আবাসিক হোটেল সূত্রে জানা যায়, (৩০ ডিসেম্বর) শনিবার বিকাল পৌণে ৪টায় ব্যবসায়ী রুহেল তহেনা ওরপে শাহেনা (৩৫) নামের এক মহিলাকে সাথে নিয়ে চিকিৎসার কথা বলে হোটেলের ২য় তলার ৩১১ নম্বর কক্ষ ভাড়া নেন।
হোটেলে উঠার কিছুক্ষণ পর রুহেল এর শারিরীক অবস্থা খারাপ হলে সাথে থাকা ঐ মহিলা হোটেল কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানান। তখন হোটেলের ব্যাবস্থাপক সুজন দাস (৩০) ও মার্কেটের তত্বাবধায়ক রাশেন্দ্র কুমার তালুকদার (৫৫) রুহেল এর পরিবারের সদস্যদের মোবাইল মারফতে তার শারিরিক অসুস্থতার সংবাদ দেন।বিকাল সাড়ে ৫টায় রুহেল এর সাথে থাকা মহিলার আত্মীয় জনৈক সাব্বির নামের এক যুবক এসে রুহেলকে অজ্ঞান অবস্থায় স্থানীয় তাজপুর কদমলাস্থ প্যারাডাইস ক্লিনিকে নিয়ে যান। ক্লিনিকের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে পরীক্ষা করে মৃত ঘোষণা করেন। তখন সাথে থাকা ঐ মহিলা এবং যুবক ক্লিনিকে লাশ রেখে কৌশলে পালিয়ে যান।
সন্ধ্যার পর রুহেল এর পরিবার এর লোকজন ক্লিনিকে গিয়ে লাশ বাড়িতে নিয়ে আসেন। এরপর খবর পেয়ে ওসমানীনগর থানা পুলিশ একটি দল গোয়ালাবাজারস্থ সম্রাট হোটেলে গিয়ে সকল তথ্য সংগ্রহ করে ৩১১ নম্বর কক্ষটি তালাবদ্ধ করে আসেন। রাত ১০টার পর ওসমানীনগর সার্কেল এর সহকারী পুলিশ সুপার, ওসমানীনগর থানার ওসি, বুরুঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যানসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে লাশ এর সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়না তদন্তের জন্য লাশ সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠান।সম্রাট আবাসিক হোটেল এর ব্যবস্থাপক সুজন দাস বলেন,ব্যবসায়ী রুহেল আমাদের পরিচিত তাই তার ছবি তুলিনি,আইডি কার্ড রেখেছি। মহিলার ছবি মোবাইলে তুলে রেখেছি। হোটেল রেজিস্টারে রুহেল এর ঠিকানা আছে কিন্তু মহিলার ঠিকানা নেই কেন এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, অন্য একটা খাতায় লিখে রাখছিলাম, সেটা পুলিশ নিয়ে গেছেন।
মার্কেটের তত্বাবধায়ক রাশেন্দ্র কুমার তালুকদার (৫৫) বলেন, চিকিৎসার কথা বলে সাথে থাকা মেয়েকে আত্মীয় পরিচয় দিয়ে ব্যবসায়ী রুহেল হোটেলে উঠেন। ৪০মিনিটের মাথায় অসুস্থ হয়ে পড়েন। আমরা তখন রুহেল ও তার সাথে থাকা মেয়ের পরিবারে খবর দিয়েছি।ঘটনার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই ওবাইদ উল্লাহ বলেন, আমি এখন লাশ নিয়ে মর্গে আছি। তাহেনা নামের একটি মেয়ে তার সাথে ছিল। সম্ভবত মেয়েটির বাড়ি নিজ বুরুঙ্গা বা হাজিপুর এর দিকে। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করছে।ওসমানীনগর থানার অফিসার্স ইনচার্জ রাশেদুল হক বলেন, আমরা ব্যবসায়ীর লাশের ময়না তদন্ত করিয়েছি। মেয়েটি তাদের এলাকার শুনেছি। বিষয়টি তদন্ত চলছে। হোটেল মালিককে আমরা ডেকেছি। এর একটি দৃশ্যমান রেজাল্ট পাবেন।ব্যবসায়ী রুহেল এর ছোট ভাই মাজহারুল ইসলামের মোবাইলে কল করা হলে তার স্ত্রী কল রিসিভ করে বলেন, তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েছেন, কথা বলতে পারবেন না।হোটেল এর স্বত্বাধিকারী খালেদ হোসেন করনী লিলু এর ব্যক্তিগত মোবাইল নাম্বার ০১৭৫২৫৫৬২৯৫/০১৭৪৫৯০২৩৫০ এ বার বার কল করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।
উল্লেখ্য গোয়ালাবাজার এর প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত খালেদ হোসেন করনী লিলু এর মার্কেটে তারই মালিকানায় সম্রাট আবাসিক হোটেল একসময় হোটেল নোহান নামে পরিচালিত হত। ২০০৭ সালে নোহান হোটেল এর ছাদে স্থানীয় এক লোককে গলা কেটে কে বা কারা হত্যা করে।২০১৭ হোটেল নোহান এ অসামাজিক কার্যকলাপ হচ্ছে এমন অভিযোগে ওসমানীনগর থানার তৎক্ষালিন ওসি আব্দুল আওয়াল চৌধুরী সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে অভিযান চালিয়ে একদল মহিলা উদ্ধার করে কোর্টে চালান করেন। এরপর প্রশাসন হোটেল নোহান সিলগালা করে দেয়। পরবর্তিতে হোটেল নোহান এর স্থলে লাইসেন্স নিয়ে সম্রাট আবাসিক হোটেল নামে পরিচালিত হচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে, এলাকার স্কুল কলেজ পড়ুয়া ছেলে-মেয়েরা দিনে ঘন্টা হিসেবে ভাড়া নিয়ে এ আবাসিক হোটেলে অসামাজিক কার্যকলাপ করে থাকে ।

Daily Frontier News