Daily Frontier News
Daily Frontier News

ঋণ জালিয়াতির বিশাল সিন্ডিকেট; সহযোগিতায় বাংলাদেশ ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তারা।

 

 

ক্রাইম রিপোর্টার ঃ

 

ঋণ জালিয়াতির বিশাল সিন্ডিকেট; সহযোগিতায় বাংলাদেশ ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তারা।
বিনা পুঁজিতে দেশের সেরা শিল্পপতিদের একজন। বড়লোক হয়েছেন রাতারাতি। নিজেই বলে বেড়ান ব্যবসা করে অবস্থান তৈরী করেছেন আবদুল কাদির মোল্লা। কিন্তু কি ব্যবসা করে কিভাবে এ পর্যায়ে এলেন সেই কাহিনি কখনো বলেন না। কাদির মোল্লার শিল্পপতি হওয়ার গল্প অজনা অন্য সবার কাছেও। কাদির মোল্লার রাতারাতি বড়লোক হওয়ার রহস্য খুজেছে দুর্নীতির খবর ২৪ ডটকম। এক সময় ছিলেন তিতাসের মিটার রিডার। ছোটপদে থেকেই নানা অনিয়ম দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল পরিমান বিত্তভৈবের মালিক হন। এরপর নিজ এলাকা নরসিংদীতে গড়ে তোলেন শিল্প। তাকে উদার হস্তে ঋণ দেওয়ার শুরু করে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বিভিন্ন ব্যাংক। এভাবে ব্যাংক ঋণ নিয়ে গড়ে তোলেন থার্মেক্স গ্রুপ। একের পর এক কোম্পানি গড়ে নিতে থাকেন ঋণ। শুধু সরকারি চার ব্যাংক থেকেই হাতিয়ে নিয়েছেন প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা ঋণ। এখন পাচ্ছেন সরকারের প্রনোদনা। মালিক হয়েছেন বেসরকারি একটি ব্যাংকের। সংশ্লিষ্টরা জানান, একের পর এক কোম্পানি গড়ে তুলে ঋণের পাহাড় গড়ছে থার্মেক্স গ্রুপ। সরকারি ব্যাংকের কাছ থেকে অল্প অল্প করে ঋণ নিয়ে শুরু করেছেন শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা। প্রথমে তার ঋণ গ্রহণ ধীরে ধীরে চললেও ২০১৫ সালের পর তা বাড়তে থাকে দ্রুতগতিতে। ইতোমধ্যে সরকারি ব্যাংকের ঋণের টাকায় মালিক হয়েছেন বেসরকারি ব্যাংকের। এখন সরকারি-বেসরকারি সব ব্যাংক থেকেই নিচ্ছেন বিপুল পরিমান ঋণ। ইতোমধ্যে তার ঋণের পরিমান ৩ হাজার ৪০০ কোটি টাকা অতিক্রম করেছে।
বিভিন্ন ব্যাংক থেকে প্রাপ্ত থেকে তথ্যে দেখা যায়, তাকে সবচাইতে বেশি ঋণ দিয়েছে জনতা ব্যাংক। আব্দুল কাদির মোল্লার থার্মেক্স গ্রুপের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে জনতা ব্যাংক দিয়েছে ১ হাজার ৩৩২ কোটি টাকা। ব্যাংকটি একক ঋণগ্রহীতা সীমা লঙ্ঘন করে তাকে ঋণ দেয়। নানা সুবিধা নিয়েও তিনি ঋণখেলাপি হয়ে যান। পরে বিশেষ সুবিধায় সেই খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিল করে কাদির মোল্লা।
আব্দুল কাদির মোল্লার ঋণ নিয়ে সর্বপ্রথম আলোচনায় আসে ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে। ওই বছর ৫০০কোটি টাকা বা তার চেয়ে বেশি অঙ্কের খেলাপি ঋণকে বিশেষ ছাড় দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। মাত্র ২ শতাংশ ডাউনপেমেন্ট দিয়ে ১২ ও ১৮ বছরের জন্য ঋণ পুনর্গঠনের সুযোগ পায় গ্রুপটি। ৬৬৭কোটি টাকা পুনর্গঠন করে। ওই সুবিধার শর্ত ছিল আর কোন সুবিধা দেওয়া হবে না। কিন্তু ২০১৯ সালের জুনে খেলাাপি হয়ে যায়। পরে আবার বিশেষ ছাড়ে পুনঃতফসিল করে জনতা ব্যাংক। থার্মেক্স গ্রুপের চেয়ারম্যান আব্দুল কাদির মোল্লার সাথে বারবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি কথা বলতে রাজি হননি। বিষয়টি ব্যাংকের বলে তিনি ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।

কাদির মোল্লা বড় সুবিধা নিয়েছেন সোনালী ব্যাংক থেকেও। সরকারি ব্যাংকগুলো থেকেই ঋণ সুবিধা নিয়েছেন বেশি। সোনালী ব্যাংক থার্মেক্স গ্রুপের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণ দিয়েছে ১ হাজার ১১৭ কোটি টাকা। এছাড়া অগ্রণী ব্যাংক দিয়েছে ৬৫১ কোটি টাকা এবং রূপালী ব্যাংক দিয়েছে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা। তার ঋণের একটি বড় অংশ ঋণপত্রের (এলসি) বিপরীতে। যাকে ননফান্ডেড ঋণ বলা হয়। এক ব্যাংক বিল গ্যারান্টি দেয়। ওই বিল অন্য ব্যাংকে জমা দিয়ে নগদ টাকা তুলে নেন কাদির মোল্লা। এই পদ্ধতিতে সোনালী ব্যাংক থেকে সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেয় হলমার্ক গ্রুপ।
অগ্রণী ব্যাংকের এমডি বলেন, অবশ্যই নিয়ম মেনে ঋণ নিয়েছে। আমরা সরকারী ব্যাংক নিয়ম ছাড়া ঋন দিতে পারি না। থার্মেক্স গ্রুপের শুধু আমাদের সাথে ঋনের বিষয়টি নেই। তারা দেশের অন্যান্য ব্যাংক থেকেও ঋণ নিয়েছে। থার্মেক্স গ্রুপ দেশের বড় ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠান।
থার্মেক্স গ্রুপের ১৪টি প্রতিষ্ঠানের নাম জানা গেছে। এগুলো হচ্ছে থার্মেক্স টেক্সটাইল, থার্মেক্স স্পিনিং, থার্মেক্স মেলাঞ্জ স্পিনিং মিল, থার্মেক্স নিট ইয়ার্ন, থার্মেক্স ইয়ার্ন ডায়িং, থার্মেক্স ইয়ার্ন ডাইড ফেব্রিক্স, থার্মেক্স ওভেন ডায়িং, থার্মেক্স চেক ফেব্রিক্স, সিসটার ডেনিম কম্পোজিট, ইনডিগো স্পিনিং, আদুরী অ্যাপারেলস, আদুরী ফ্যাশনস, আদুরী নিট কম্পোজিট ও থার্মেক্স কালার মিল।

ব্যাংক ঋণ নিয়েছেন বেনামেও-প্রণোদনাও দেদারছে। ২০১৩ সালে রাজনৈতিক বিবেচনায় অনুমোদন পাওয়া সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার এন্ড কমার্স ব্যাংকের (এসবিএসি) উদ্যোক্তা শেয়ারহোল্ডার কাদির মোল্লা। ওই ব্যাংকের পরিচালক পদেও রয়েছেন তিনি বর্তমানে ব্যাংকের চেয়ারম্যান । অন্য পরিচালকদের সঙ্গে যোগসাজোশ করে বেনামে কোম্পানি গঠন করে ঋণ হাতিয়ে নেন কাদির মোল্লা। পরে পরিচালকদের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হলে তারা বিষয়টি ফাস হয়ে যায়। পরিচালক পদ টিকিয়ে রাখতে চলতি বছরের শুরুর বেনামে ঋণ সম্পূর্ণ পরিশোধ করে দেন।
ঋণের পর এখন সরকার ঘোষিত প্রণোদনাও দেদারছে পাচ্ছেন কাদের মোল্লা। সরকারি চার ব্যাংক থেকে পেয়েছেন ২৪০ কোটি টাকা। ইতোমধ্যে সোনালী ব্যাংক থেকে ৮৪ কোটি, অগ্রণী ব্যাংক ৫৭ কোটি ও জনতা ব্যাংক থেকে ৪৭ কোটি প্রণোদনা পেয়েছেন। রূপালী ব্যাংক তাকে ৫২ কোটি টাকা দেওয়ার জন্য অনুমোদন করেছে। অন্য ব্যাংকগুলো থার্মেক্স অন্য প্রতিষ্ঠানের নামে আরও প্রণোদনা দেওয়া প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
কাদির মোল্লার রাতারাতি বড়লোক হওয়ার পেছনের কারিগড় ডেপুটি গভর্নর কাজী সাইদুর রহমান। দু’জন মিলে গত কয়েক বছরে ব্যাংকিং খাতকে বিপদগ্রস্ত করে তুলেছেন। যা ছিল ব্যাংকিং খাতের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। ঋণের কিস্তি পরিশোধ না করায় প্রতিনিয়ত এ ঋণের পরিমাণ বাড়ছে। আবার প্রণোদনা হিসেবে থার্মেক্সকে ৫৭ কোটি টাকা দিয়েছে অগ্রণী ব্যাংক। আর এ প্রণোদনার টাকা দিতে ওই সময় অগ্রণী ব্যাংকের পরিচালনা পরিষদ থেকে সরাসরি হস্তক্ষেপ করেছেন বলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে অগ্রণী ব্যাংকের বেশ ক’জন পরিচালক জানিয়েছেন। রিজার্ভ চুরিসহ বেশ কিছু ঘটনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্ণর এস কে শুরসহ বেশ কজনের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেয়া হলেও, বহাল তবিয়তে দায়িত্ব পালন করছেন । নতুন করে তার মালিকানাসূত্র বিডিনিউজ নাগরিক টিভি, তারুণ্য টিভি,

Daily Frontier News