Daily Frontier News
Daily Frontier News

১২০ টাকা দিয়ে কি হয় পরিবার চলে, প্রশ্ন চা শ্রমিকদের ?

 

মোঃ ফারুক মিয়া, সিলেট:-

 

এক কেজি চালের দাম এখন ৭০ টাকা। পেট্রলের লিটার ১৩০ টাকা। অথচ আমরা সারাদিন খেটে মাত্র ১২০ টাকা পাই। ১২০ টাকা দিয়ে কি হয় পরিবার চলে, প্রশ্ন করেন চা শ্রমিকরা। বললেন সিলেটের গুলনী চা বাগানের সভাপতি মৃত্যুঞ্জয় কুর্মী।

তিনি আরও বলেন বর্তমান তেল-গ্যাস-বিদ্যুত ও দ্রব্যমূল্যের উর্ধগতির বাজারে ১২০ টাকা দৈনিক মজুরিতে কাজ করতে বাধ্য হচ্ছেন চা শ্রমিকেরা।

চা শ্রমিকরা তাদের বক্তব্যে বলেন দারিদ্র্যের চক্রে আবদ্ধ হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা। ছেলেমেয়েদের ভরণ পোষণ ও লেখাপড়ার খরচ চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। নেই ভাল মেডিক্যালের ব্যবস্থা, নেই ভাল শৌচাগার, নেই ভাল রাস্তাঘাট, নেই একটি এম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা, একজন গর্ভবতী মহিলাকে চেক আপের জন্য হেঁটে যেতে হয় অনেক দূরে, না হয় যেতে হয় সিলেটে। আজ টাকার অভাবে আমাদের ছেলে মেয়েদের লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। সরকার সবকিছুতে উন্নয়ন করলেউ হচ্ছে না চা শ্রমিকদের ভাগ্য উন্নয়ন।

দ্বিত্তী সাঁওতাল নামে এক চা শ্রমিক অশ্রু সিক্ত চোখে বলেন, আমার পরিবারে বৃদ্ধ মা বাবা আছে, একজন ছোট ভাই ও ছোট বোন আছে এবং আমার নিজের একটি সন্তান রয়েছে। ছয়জনের পরিবারে আমি একমাত্র আয় করি আমার ভাই বোনের লেখাপড়ার খরচ রয়েছে, নিজের সন্তানের খরচ পরিবারের খরচ রয়েছে আর কত দিন কঠোর পরিশ্রম করে পরিবার চালাব। নিজের সন্তানের হাতে আমি দশটি টাকা দিতে পারি নি অথচ এই চা শিল্প আমরা শ্রমিকরা চালাই। সারাদিন কাজ করে ১২০ টাকা নিয়ে বাড়ি ফিরতে হয় তাই আমাদের দাবি ৩০০ টাকা মজুরি করতে হবে।

চা শ্রমিকের একজন সন্তান জতিন সিং বলেন আজ আমার লেখাপড়া বন্ধ মালিক পক্ষ যদি বেতন না বাড়ায় তাহলে আমাদেরকে ইঁদুরের বিষ কিনে দিতে পারে আমরা সব শ্রমিকরা ইঁদুরের বিষ খেয়ে মরে যাই আর না হয় ৩০০ টাকা করুক শ্রমিকের বেতন।

সকাল ৬টা থেকে ধর্মঘট শুরু করেন চা-শ্রমিকরা। ফলে সবগুলো বাগানেই বন্ধ রয়েছে পাতা তোলাসহ সবধরণের কার্যক্রম। ইতি মধ্যে চা শ্রমিক নেতারা হুঁসিয়ারী দিয়েছেন তাদের দাবি না মানা পর্যন্ত সকল কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।

এ সময় বিক্ষোভ মিছিলে উপস্থিত ছিলেন গুলনি চা বাগানের সভাপতি মৃত্যুঞ্জয় কুর্মী, জতিন সিংহ, নিরেন সাঁওতাল, সমর কুর্মী, লিটন সাঁওতাল, সহদেব কুর্মী, বিনা মুদি, সুখি উরাং, খুখুমনি বিশ্বাস, অনিতা, মুন্নী কুর্মী, নাজমিন বেগম সহ গুলনি বাগানের সকল চা শ্রমিকরা।

Daily Frontier News