Daily Frontier News
Daily Frontier News

সাতক্ষীরার দেবহাটায় পুলিশের উপর হামলা ওয়ারেন্টভুক্ত আসামী ছিনতাই।

 

শাহিন হোসেন

সাতক্ষীরা জেলা প্রতিনিধি।।

 

সাতক্ষীরার দেবহাটায় গ্রেফতারের পর পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে ডাকাতি ও অস্ত্র মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি শরিফুল ইসলাম ওরফে কালুকে (৪০) ছিনিয়ে নিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এসময় সন্ত্রাসীদের হামলায় দেবহাটা থানার এসআই শরিফুল ইসলাম, এসআই শোভন দাশ, এএসআই আব্দুর রহিম গাজী, কনষ্টেবল ফরহাদ হোসেন ও কনষ্টেবল শাহজান আহত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ঘটনাস্থলে ৮ রাউন্ড গুলিবর্ষণ করে।

সোমবার (৭ নভেম্বর) ভোর রাত ৩টার দিকে উপজেলার সন্ত্রাসী অধ্যুষিত খলিশাখালিতে এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় কালুসহ ৯ জনের নাম উল্লেখ করে আরও ৫০-৬০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে এসআই শরিফুল ইসলাম বাদী হয়ে দেবহাটা থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।

মামলার আসামিরা হলেন—খলিশাখালিতে অবস্থানরত দেবহাটা উপজেল নাংলা গ্রামের কালু গাজীর ছেলে গফুর মাস্তান (৪৭), নোড়ারচকের মৃত আকরাম গাজীর ছেলে ইসমাইল মেম্বর (৪০), তার অপর দুই ভাই মারুফ (৩২) ও মুজাহিদ (২৭), বর্তমানে খলিশাখালিতে অবস্থানরত নাংলার আয়ুব আলী গাজীর ছেলে শরিফুল ইসলাম ওরফে কালু (৪০), বাবুরাবাদের মৃত রুহুল আমিনের ছেলে আকরাম (৪৫), নোড়ারচকের মৃত মৃত আছেল উদ্দীনের ছেলে আবুল হোসেন গাজী (৪৭), কালাবাড়িয়ার মৃত আবু জাফরের ছেলে আসাদুল ইসলাম (৪০) এবং খলিশাখালীর মৃত বাক্কার গাজীর ছেলে মুদি সাইফুল (৪২)।

বিষয়টি নিশ্চিত করে দেবহাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ ওবায়দুল্যাহ জানান, সম্প্রতি দেবহাটা উপজেলার দেবীশহর এলাকা থেকে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে কাটা রাইফেল, সাত রাউন্ড গুলি, দুটি রামদা, রাউডি ও লাঠিসহ তিন ডাকাতকে গ্রেফতার করা হয়। ওইসময় ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় কালুসহ বেশ কয়েকজন সন্ত্রাসী।

এঘটনায় ডাকাতি ও অস্ত্র আইনে পৃথক দুটি মামলা হলে পলাতক আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে আদালত। রোববার ভোররাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উপজেলার খলিশাখালিতে ওই অস্ত্র ও ডাকাতি মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত পলাতক কালুর অবস্থান নিশ্চিত করে পুলিশ। রাত আড়াইটার দিকে পুলিশের একটি দল খলিশাখালিতে অভিযান চালিয়ে কালু ডাকাতকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসছিল। খলিশাখালির গফুর মাস্তানের বাড়ির কাছাকাছি পৌঁছালেই গফুর মাস্তান ও ইসমাইল মেম্বরের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী পুলিশের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়।

এসময় তারা পুলিশকে মারধর করে আটক কালু ডাকাতকে ছিনিয়ে নেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ৫ রাউন্ড রাবার বুলেট ও ৩ রাউন্ড শর্টগানের গুলিবর্ষণ করে সন্ত্রাসীদের ছত্রভঙ্গ করে পুলিশ। পরে থানা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে আহতদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে চিকিৎসা দেন।

পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে উল্লেখ করে ওসি আরও বলেন, গত বছরের ১০ সেপ্টেম্বর ভোররাতে মুহুর্মহু গুলি ও বোমা ফাঁটিয়ে খলিশাখালি নামক ১৩ শ বিঘা ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি জবরদখলে নেয় কয়েক শ ভূমিদস্যু, ডাকাত এবং সন্ত্রাসী। এরপর থেকে ওই ঘেরটি অপরাধীদের অভয়াশ্রম হয়ে উঠেছে।

তিনি জানান, সংঘবদ্ধ এ অস্ত্রধারীদের আবাসস্থল মূলত খলিশাখালি। তারা দিনের বেলায় খলিশাখালিতে আত্মগোপনে থাকে। রাত নামলেই বিভিন্ন এলাকায় ডাকাতি করে বেড়ায়। এসব সন্ত্রাসীদের অস্ত্রের মুখে ওই জনপদের সাধারণ মানুষ জিম্মি হয়ে পড়েছে।

তাদের গ্রেফতার করতে গেলে পুলিশের ওপর হামলা চালাতেও এসব সন্ত্রাসীরা পিছপা হচ্ছে না বলে জানান ওসি।

Daily Frontier News