Daily Frontier News
Daily Frontier News

লাকসাম থানার নাকের ডগায় বহুল আলোচিত চুরি —গ্রেপ্তারকৃত ৬ চোর জামাই আদরে !

 

জামাল উদ্দিন স্বপনঃ-
কুমিল্লার লাকসামে থানার ৩শ’ গজের মধ্যে নগদ টাকা ও মালামালসহ ৩৫ লাখ টাকার দুর্ধর্ষ চুরির ঘটনায় পুলিশ দফায় দফায় অভিযান চালিয়ে ৬ জনকে আটক করতে সক্ষম হলেও মুল পরিকল্পনাকারীরা এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গ্রেপ্তার হওয়া চোরদের রিমান্ডে আশানুরূপ তথ্য উদঘাটন করতে না পারায় প্রশ্ন উঠেছে ।
চুরির মূল পরিকল্পনাকারী সনাক্ত হলেও রহস্যজনক কারনে পুলিশে নাকের ঘুরে বেড়াচ্ছে!
ঘটনার দুই মাসেও চুরি হওয়া নগদ টাকা ও মালামাল উদ্ধার হয়নি। তবে গ্রেফতারকৃতদের একজনের নিকট থেকে ১৫ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে বলে পুলিশ নিশ্চিত করেছে। অবশিষ্ট টাকা উদ্ধারে পুলিশের গড়িমশী লক্ষনীয়।
থানায় দায়েরকৃত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২৯ মার্চ (মঙ্গলবার) রাতে লাকসাম দৌলতগঞ্জ উত্তর বাজারস্থ লাকসাম থানার ৩শ’ গজের মধ্যে দেশের সুনামধন্য শিল্প প্রতিষ্ঠান ‘ভাইয়া গ্রুপ’ এর মালিকাধীন ‘মাসুম টেলিকমে’ এক দুর্ধর্ষ চুরির ঘটনা ঘটে। চোর চক্র অভিনব কায়দায় জানালার লোহার গ্রীল কেটে ভবনের দ্বিতীয় তলায় মাসুম টেলিকম, তৃতীয় তলায় সাফওয়ান সেন্টার ক্যাশ এবং চতুর্থ তলায় ভাইয়া গ্রুপের কর্পোরেট শাখার বিভিন্ন অফিসের মালামাল তছনছ করে নগদ ২১ লাখ ২ হাজার ৫২০ টাকাসহ প্রায় ৩৫ লাখ টাকার মালামাল চুরি করে নিয়ে যায়। চুরিকৃত মালামালের মধ্যে রয়েছে, নগদ ২১ লাখ ২ হাজার ৫২০ টাকা, গ্রামীনফোনের ১০, ১১, ১৯, ২০, ২৪, ২৯ টাকা মূল্যের ১৪ লাখ ১৩ হাজার ৭০৩ টাকার ডাটা ও ভয়েস কার্ড।

এ ঘটনায় ৭ এপ্রিল প্রতিষ্ঠানের হিসাবরক্ষক মাকছুদুর রহমান বাদী হয়ে অজ্ঞাত দূর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে লাকসাম থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। ২৪ এপ্রিল লাকসাম থানায় অভিযোগটি মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হয়। যার নং- ১১/৫০, ধারা ৪৬১/৩৮০, পেনাল কোর্ট।
মামলা দায়েরের পর দুর্বৃত্তদের শনাক্ত করতে পুলিশের একাধিক টিম কাজ শুরু করে।

রিপোর্টটি লিখা পর্যন্ত পুলিশ দফায় দফায় অভিযান চালিয়ে ৬ জনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে কয়েকজন পরিকল্পনাকারীর নাম উঠে আসে। পুলিশ ইতোমধ্যে আদালতের নির্দেশে মন্টি নামক একজনকে একদিনের রিমান্ড শেষে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করছে। তবে ঘটনার পরিকল্পনাকারীরা এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছে বলে প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ অভিযোগ করেছে।

লাকসাম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মেজবাহ উদ্দিন ভূঁইয়া জানান, এ ঘটনার পর ইতোমধ্যে মোট ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে মন্টি নামক একজনকে আদালতের নির্দেশে একদিনের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে একজনের নিকট থেকে ১৫ হাজার টাকার উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের দেয়া তথ্য যাছাই-বাছাই চলছে। মামলাটি তদন্তাধীন বলে তিনি জানান।
এদিকে, লাকসাম থানার মাত্র ৩ গজের মধ্যে দুর্ধর্ষ চুরির দুই মাসেও মূল পরিকল্পনাকারীদের সকলে গ্রেফতার না হওয়ায় এবং চুরি হওয়া নগদ টাকা ও মালামাল উদ্ধার না হওয়ায় স্থানীয় ব্যবসায়ীদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।
এ ঘটনার রহস্য উদ্ধাঘাটন ও প্রকৃত অপরাধীদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি না হলে অন্যান্য ব্যবসায়ীদেরও এমন অনাকাঙ্খিত ঘটনার শিকার হতে পারে বলে তারা জানান।
লাকসাম দৌলতগঞ্জ বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি তাবারক উল্লাহ কায়েস বিষয়টি অবগত আছে জানিয়ে বলেন, ব্যবসায়ী সমিতির নেতৃবৃন্দ ও ব্যবসায়ীদের সাথে আলোচনা করে চুরি-ডাকাতি রোধকল্পে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Daily Frontier News