সুজিত চক্রবর্তী নাসিরনগর ( ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধিঃ-
. ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলা মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে পেশ ইমাম নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
. এ ঘটনায় গোলাম মোস্তফা নামের নিয়োগ বঞ্চিত এক প্রার্থী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও নিয়োগ পাওয়া মো. যুবায়ের আহাম্মদসহ চার জনকে বিবাদী করে আদালতে একটি মামলা করেছেন।
. গোলাম মোস্তফা নাসিরনগর উপজেলার কুলিকুন্ডা গ্রামের বাসিন্দা। গত ২ মার্চ মডেল মসজিদের ইমাম নিয়ােগ বাতিলের জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত আবেদন করেন তিনি। পরের দিন গত ৩ মার্চ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে তিনি এই মামলা দায়ের করেন।
. মামলায় উপজেলা মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সংস্কৃতিক কেন্দ্র পরিচালনা কমিটি সভাপতি ও নাসিরনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও জেলা প্রশাসক, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহা পরিচালক ও উপজেলার জেঠা গ্রামের মো. যুবায়ের আহাম্মদ নামের এক জনকে বিবাদী করা হয়। যুবায়ের পেশ ইমাম নিয়োগ পরীক্ষায় প্রথম হয়েছেন।
. মামলা সূত্রে জানা গেছে, নাসিরনগর উপজেলা মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের জন্য পেশ ইমাম, মুয়াজ্জিম ও খাদেম পদে ১১ ফেব্রুয়ারি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। গত ২৭শে ফেব্রুয়ারি পেশা ইমাম পদে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কক্ষে মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। একইদিন পেশ ইমাম পদের ফলাফল ঘোষণা করা হয়।
. লিখিত পরিক্ষায় মামলার বাদী গোলাম মোস্তফা ৮০ এর মধ্যে ৫১ নম্বর পান। চার নম্বর বিবাদী পান ৩৩ দশমিক ৫ নম্বর। মৌখিক পরীক্ষায় সকল প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিলেও গোলাম মোস্তফাকে কোনো নম্বর দেওয়া হয়নি। আরও দুই প্রার্থী শেখ ছায়েদুল হক এবং তোফায়েল আহমেদকেও মৌখিক পরীক্ষায় কোনো নম্বর দেওয়া হয়নি। পেশ ইমাম পদে নিয়োগ দেওয়ার জন্য যুবায়ের আহাম্মদ কে মৌখিক পরীক্ষায় ১৭ দশমিক ০৬ নম্বর দেওয়া হয়। মোট নম্বর ৫১ দশমিক ১ দেখিয়ে গত ২৭শে ফেব্রুয়ারি ফলাফর ঘোষণা করা হয়।
. ফলাফলে মোহাম্মদ আবদুল্লাহ দ্বিতীয়, হারুন রশিদকে তৃতীয় ও মোহাম্মদ শরীফ উদ্দিনকে চতুর্থ স্থান দেখানো হয়। তারা নম্বর পান যথাযক্রমে ৪৫ দলমিক ৭৫, ৪৪ দশমিক ২ ও ৪৩ দশমিক ৩ নম্বর। গোলাম মোস্তফা সঙ্গে সঙ্গে প্রতিবাদ করলে ইউএনও আমলে নেননি। জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত আবেদন করেও তিনি কোনো প্রতিকার পাননি।
. নিয়োগে সংশ্লিষ্টরা প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছেন। কারণ খাদেম, পেশ ইমাম ও মুয়াজ্জিদ পদে আবেদনের শেষ তারিখ ২৬শে ফেব্রুয়ারি ছিল। কিন্তু নিয়োগ বোর্ড অন্যায়ভাবে খাদেম পদে মো. কাশেম মিয়ার আবেদন ২৭ ফেব্রুয়ারি গ্রহন করে।
. নিয়োগ বঞ্চিত ও মামলার বাদী গোলাম মোস্তফা বলেন, মামলার ৪ নম্বর বিবাদীকে নিয়োগ দিতে ইউএনও’র নেতৃত্বে নিয়োগ বোর্ড অন্যায় ও বেআইনী ভাবে সকল উদ্যোগ নিয়েছেন। যিনি প্রথম হয়েছেন তাকে অন্যায়ভাবে প্রথম বানানো হয়েছে। আমাকে মৌখিক পরীক্ষায় কোনো নম্বর দেয়া হয়নি। অথচ ঢাকার মোহাম্মদপুরের একটি মসজিদে আমি ১৫ বছর ধরে ইমাম।
. উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহীনা নাছরিন বলেন, মোট ৩০জন পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। মৌখিক পরীক্ষায় নম্বর দেয়া হয়নি এটি ভুল ধারণা। আদালতে মামলার বিষয়টি শুনেছি। বিষয়টি নিয়ে কথা উঠায় নিয়োগ স্থগিত রেখেছি।
. জেলা প্রশাসক স্যারও নিয়োগ স্থগিত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, পরীক্ষার ফলাফলের পর আমার সঙ্গে দেখা করতে আসলে খাদেম পদে উত্তীর্ণ প্রার্থী আতাউর রহমান উপপ্রশাসনিক কর্মকর্তার ভাই বলে জানতে পেরেছি। তার পরীক্ষা দেওয়ার সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। উপপ্রশাসনিক কর্মকর্তা ভালো বলতে পারবেন। তদন্ত করলে বিষয়টি উঠে আসবে।
Copyright © 2025 Daily Frontier News | Design & Developed By: ZamZam Graphics