Daily Frontier News
Daily Frontier News

বুড়িচংয়ে হারিয়ে যাচ্ছে পরিবেশ বান্ধব তালগাছ

বুড়িচংয়ে হারিয়ে যাচ্ছে পরিবেশ বান্ধব তালগাছ

মোঃ আবদুল্লাহ বুড়িচং।।

কুমিল্লার বুড়িচংয়ে হারিয়ে যাচ্ছে পরিবেশ বান্ধব ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষাকারী তালগাছ। এক সময় গ্রামবাংলার অধিকাংশ বসতভিটা, বাড়িতে, রাস্তায় ও মাঠে প্রচুর পরিমাণ তালগাছ দেখা যেতো।

কালের পরিক্রমায় এখন হারিয়ে যেতে বসেছে তালগাছ। এখন আর তেমন দেখা মেলে না তালগাছের।

বাবুই পাখির বাসা ও হাজার হাজার বাবুই পাখির কিছির-মিচির ডাকের মনোরম দৃশ্য আর চোখে পড়ে না। আধুনিক নগর সভ্যতার যুগে ক্রমবর্ধমান মানুষের আবাসন চাহিদা পূরণের জন্য বনভূমির গাছ কেটে সাবার করে ফেলছেন।

তার সাথে সাথে তালগাছও ক্রমান্বয়ে হারিয়ে যাচ্ছে। লক্ষ্য করলে দেখা যাবে, বজ্রপাতে প্রাণহানীর সংখ্যা আগের চেয়ে বেশ বেড়েছে। এর অন্যতম কারণ হচ্ছে তালগাছের সংখ্যা কমে আসা। তাই পরিবেশের ভারসাম্যরক্ষাসহ অন্যান্য উপকার পেতে তালগাছের চারা রোপণ ও সুরক্ষা করা ভীষণ জরুরি।

এদিকে তালগাছ কমে যাওয়ায় কমে যাচ্ছে পুষ্টি সমৃদ্ধ মৌসুমি ফল তালশাঁসের উৎপাদন। বাড়ছে বজ্রপাতের ঝুঁকি। পুষ্টি সমৃদ্ধ হওয়ার কারণে তালশাঁসের কদর বাড়ছে। বর্তমানে অনেকেই তালের আঁটি রোপণ করে তাল গাছ ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এমনকি বজ্রপাত রোধে বিভিন্ন রাস্তার ধারে তালগাছ রোপণ করছেন এলাকাবাসী ব্যাক্তিগত উদ্যোগে।

তালের পিঠা, তালের গুড়, তালের রস সব মানুষের খুব মজাদার খাবার। বিশেষ করে অতীত সময়গুলোতে গ্রাম-বাংলায় তালের পিঠা ছাড়া আত্মীয়তা কল্পনাই করা যেত না। এছাড়া তাল গাছের পাতা দিয়ে তৈরি হয় নানা রকমের হাতপাখা।

প্রায় বিলুপ্তির পথে তাল গাছ। বাজারে তাল চোখে পরার মতো ছিলো। প্রায় বাড়িতে তালের পিঠে খাওয়া হতো। বর্তমানে বাজারে পাকা তাল দেখা তেমন মেলেনা। তাছাড়া এখন গ্রামীণ জনপদে যেসব তাল গাছ দেখা যায় সেগুলোর মধ্যে কিছু কিছু গাছ লাগানো হলেও মূলত বেশিরভাগ তাল গাছ বেড়ে ওঠে প্রাকৃতিকভাবে অযত্ন-অবহেলায়। আর এসব গাছ থেকে যুগে যুগে মানুষ ভোগ করেছে সুস্বাদু ফল ও রস।

কংশনগর বাজারে তালশাঁস বিক্রেতা মোশারফ হোসেন জানান, আমি প্রতিবছরই তালের শাঁস বিক্রি করে সংসার পরিচালনা করি। এলাকাভিত্তিক তাল না পাওয়ায় উপজেলার বাহিরে বিভিন্ন এলাকা থেকে পাইকারি দরে তাল ক্রয় করে এনে শাঁস বিক্রয় করে থাকি। তিনি এলাকায় তাল পাওয়া গেলে বাহিরে যাওয়ার প্রয়োজন হত না।

সাবেক সদর আনসার কমান্ডার জয়দল হোসেন জানান, তালগাছের অনেক উপকারিতা রয়েছে। কিন্তু কালের বিবর্তনে তাল গাছ হারিয়ে যেতে বসেছে।

তিনি আরও বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষাকারী তালগাছ টিকিয়ে রাখা আমাদের সকলেরই প্রয়োজন। অতীতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় তাল গাছ দেখা গেলেও এখন আর তেমন চোখে পরে না। তালগাছ একদিকে ছায়া দেয় ও শোভাবর্ধন করে। আবার তালের শাঁসে রয়েছে অনেক পুষ্টিগুন। উপকারী তাল গাছ টিকিয়ে রখার জন্য বেশি বেশি করে তালের চারা রোপন করতে বলেন তিনি।

Daily Frontier News