পর্ব-১
স্বামীর ঘর ভেঙ্গে নিয়ে যায় শশুরবাড়ির লোকজন! থানা ও হবিগঞ্জ আদালতে মামলা করায় অসহায় দিন মজুরকে প্রাণে হত্যার হুমকি!
৩য় বারের মতো ২টি অবুঝ শিশু রেখে প্রবাসে যাওয়ার জন্য স্বামীকে স্ট্যাম্পে দস্তখত দেওয়ার জন্য আউশকান্দি থেকে দিন দুপুরে মূখে চেপে ধরে
সিএনজিতে তুলে কুর্শিতে নিয়ে স্বামীকে অমানুষিক নির্যাতন!
নবীগঞ্জ প্রতিনিধি ॥
১২ বছর স্বামীর সংসার করে ২ সন্তানের জননী বিদেশ যাওয়া নিয়ে স্বামীকে তার লোক নিয়ে দিন দুপুরে ঢাকা- সিলেট মহা সড়কের আউশকান্দি থেকে ৫/৬ জন মিলে জোর পূর্বক গাড়িতে তুলে বাড়িতে নিয়ে ৩শ টাকার স্ট্যাম্পে দস্তখত দেওয়ার জন্য বলে। দস্তখত না দেওয়াতে তাদের ওঠানে ফেলে
দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র দিয়ে প্রাণে হত্যার উদ্দ্যেশে বেধরক মারপিট শুরু করলে তার চিৎকারে আশপাশের লোকজন আসায় অসহায় দিন মজুর কাসেমকে প্রাণে রক্ষা পায়। মামলার বিবরন ও আহত ব্যাক্তির সূত্রে জানাযায়, নবীগঞ্জ উপজলোর ৫নং আউশকান্দি ইউনিয়নের (বেরী) গ্রামের বর্তমান বাসিন্দা দেওতৈল গ্রামের মৃত লেবু মিয়ার পুত্র কাসেম মিয়া (৩০)। সে বিগত প্রায় ১ যুগ পূর্বে বিয়ে করে কুর্শী গ্রামের মোঃ শামছু মিয়ার কন্যা সুনেছা বেগমকে। বিয়ের পর থেকেই
তাদের সংসার ভালই কাটছিল। এমন কি তাদের ৮ বছরের একটি কন্যা সন্তান চাঁদনী আক্তার ও এক বছরের সামিয়া আক্তার সহ ২টি ঔরসজাত শিশুও রয়েছে। এর মধ্যে হঠ্যাৎ করে তাদের সংসাবের প্রবাস যাওয়া নিয়ে শুরু হয় স্ত্রী ও শশুরের সাথে স্বামীর কথাকাটাটি। সৌদিআরব পাঠানোর জন্য নানান প্রলোভন দিলে আমার কথা না মেনে আমার স্ত্রী তার বাবার কথায় রাজি হয়ে আমার অনুমতি ছাড়াই তার
বাবার বাড়ি কুর্শিতে চলে যায়। আমার শশুর একজন মানব প্রাচারকারী। সে তার মেয়ে ও মেয়ে স্বামী সহ তার নাতিনদেরও জীবনের চিন্তা না করে টাকার লোভে
গোপনে কাসেমের স্ত্রী সুনেছাকে সৌদিআরব পাঠিয়ে দেন। এ ঘটনাটি ঘটেছে গত এপ্রিল মাসের ১৫ তারিখ শুক্রবার রমাজান মাসে।
মামলায় আরো উল্লেখ্য যে, স্বামী কাসেম তার স্ত্রী বিদেশ যাওয়ার খবর শুনে সাথে সাথে ঐ দিন সন্ধা বেলায় তার ঔরসজাত ২টি অবুঝ শিশুকে নিয়ে নবীগঞ্জ
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ ডালিম আহমদ এর কাছে গিয়ে কান্না জড়িত কন্ঠে বিষয়টি খুলে বলেন। তার কথা শুনে ওসি সাথে সাথে একজন পুলিশ অফিসারকে এ বিষয়টি দেখার জন্য নির্দেশ দেন। পরদিন এ ঘটনায় নবীগঞ্জ থানার একদল পুলিশ কাসেমের বউকে তার শশুর বাড়ি কুর্শি থেকে আনতে গেলে তাকে বাড়িতে পাওয়া যায় নি। এ সময় সে প্রবাসে চলে যায়। কিন্তু ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস। জর্দান ১বার ও সৌদিআরব ২বার থাকার পর সে দেশে চলে আসে। এবং স্বামী কাসেমের সাথে নানান প্রলোবন দেখিয়ে সে আবার সংসার করতে থাকে। এতে
তাদের একটি কন্যা সন্তান চাদনী বেগম জন্ম নেয়। এরপর স্বামী সন্তান রেখে প্রবাস জীবন সহ নিজের খায়েস পূরর্ণ করতে অবশেষে আবারো ৩য় বারের মতো
সৌদিআরব লুকিয়ে চলে যায়। এ দিকে স্বামী কাসেম অবুঝ দুটি সন্তানকে নিয়ে পড়েছেন মহা বিপাকে।
অসহায় কাসেম কান্না জড়িতকান্ঠে এ প্রতিবেদককে আরো জানান, অবুঝ দুটি শিশু ও আমার আহাজারি আল্লাহ ছাড়া কেউ দেখার নেই। অবশেষে সৌদিআরব লুকিয়ে চলে যাওয়ার পর সৌদিআরব এয়ারপোর্টে ফিঙ্গারের কারণে সেখানে ৩দিন থাকার পর আবার বাংলাদেশে ফিরে আসতে হলো সুনেছা! এ খবর শুনে আমি আমার ঔরসজাত ২টি সন্তানকে নিয়ে নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে গিয়ে এর বিচার চাইলে তিনি তাদের কথা শুনে বলেন, একটি লিখিত অভিযোগ দিয়ে যান। আমরা বিষয়টি দেখতেছি। লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে ওসির নিদের্শে কুশি
ইউনিয়নের ইউপি সদস্য দিলকাছ মিয়া সহ আরো কয়েকজন লোক সাথে নিয়ে কামেস তার শশুর বাড়িতে তাকে আনতে গিয়ে তার বউকে না পেয়ে শশুর বাড়ি থেকে খালি হাতে ফিরে আসতে হলো। এ বিষয়টি নিয়ে স্বামী কাসেম কুর্শি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সৈয়দ খালেদুর রহমান, ইউপি সদস্য দিলকাছ, রাজনীতিবৃদ সহ সর্ব সাধারণকে অবগত করলে এতে তারা একটি সামাজিক বিচার পঞ্জায়েতের ব্যবস্থা করেন। অসহায়
আহত চানাচুর বিক্রেতা কাসেমকে বিচার পঞ্জায়েতে কোন কারণ ছাড়াই গত বুধবার বিকালে মেম্বার দিলকাছ ও তার শশুর শামছু মিয়ার পায়ে ধরিয়ে বাংলা বাজার একটি খেলার ফাকেঁ ক্ষমা চাওয়ান স্থানীয় চেয়ারম্যান সৈয়দ খালেদুর রহমান! এরপর চেয়ারম্যান রায় দেন যে, আগামী রবিবার ১২টার সময় কুর্শি ইউনিয়ন অফিসে এ বিষয়টি মিমাংশার জন্য বসে দেখা হবে। এরপরের দিন বৃহস্প্রতিবার (১৯ মে) বেলা ২টার দিকে শেরপুর টু নবীগঞ্জ রোডস্থ মহা সড়কের পাশ্ববর্তী মায়দুল মিয়ার একটি বাসার সামনের রাস্তা থেকে একটি সিএনজি যোগে কয়েকজন লোক আমাকে
ঘেরাও করে একটি সিএনজিতে জোরপূর্বক শামছু মিয়া, জসিম মিয়া, আলতাফ মিয়া, হেলাল মিয়া সহ আরো কয়েকজন লোক আমার মুখে চাপ দিয়ে হেলাল খাঁঁঁনের সিএনজিগাড়িতে তুলে আমাকে নিয়ে যাওয়া হয় কুর্শি আমার শশুর বাড়িতে। কিন্তু বাড়ি
যাওয়ার পরই আমাকে গাড়ি থেকে নামিয়ে তাদের ওঠানে ফেলে লাতি, কিল-ঘুষি দিয়ে শামছুর হাতে থাকা রামদা দিয়ে প্রাণে হত্যার উদ্দ্যেশে এলোপাতারি কুপালে
সে রক্তাক্ত অবস্থায় মাঠিতে লুটে পড়ে চিৎকার শুরু করে। এতে আশপাশের লোকজন কাসেমের চিৎকার শুনে এগিয়ে আসছে অল্পের জন্য সে রক্ষা পায়। রামদার কুবটি লক্ষ্যভ্রষ্ট ডান পায়ের হাটুতে পড়ার কারণে তার মাথাটি অল্পের জন্য রক্ষা পায়। এবং তার মাথায় ৫টি সেলাই ও হাটুতেও মারাক্তক জখম সহ সেলাই রয়েছে। এ সুযোগে আলফাছ মিয়া কাসেমের গলায় দা ধরে তার ব্যবহৃত একটি মোবাইল সেট ও
নগদ কিছু টাকাও নিয়ে যায়। এ সময় তাকে বেধরক মারপিট করে মামলায় এজহারভোক্ত আসামী সুনেছা বেগম, পাখি বেগম, আলফাছ মিয়া ও সামেলা বেগম সহ অন্যান্য আসামীরা। তারা তাদের ইচ্ছা মতো তাকে বেধরক ভাবে শরীরের বিভিন্ন স্থানে মারধর করায় লিলাফুলা জখমও রয়েছে। কাসেমকে তার শশুর বাড়ির লোকজন মারে আর বলে পূনঃরায় বিদেশ পাঠানোর জন্য এই ৩শ টাকার স্ট্যাম্পে দস্তখত দিতে হবে, সুনেছাকে আবার বিদেশ পাঠাতে চাই। এতে দস্তখত না দিলে সুনেছা না কি আর বিদেশ যেতে পারবেনা। স্বামী কাসেম তাদের এসব কথা শুনে আকুতি মিনতি করে বললেও তাদের মনে অবুঝ দুটি সন্তানের জন্যও একটুও দয়া মায়া হয় নাই! স্ট্যাম্পে দস্তখত না দেওয়ার কারণে
Copyright © 2025 Daily Frontier News | Design & Developed By: ZamZam Graphics