মাসুদ পারভেজ
কর্ণফুলী নদী পারাপারের যাত্রীতে ভোগান্তি ও হয়রানি বন্ধে সাম্পান মাঝি এবং ইজারাদারের কঠোর নির্দেশ দিয়েছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ইশতিয়াক ইমন। সোমবার বিকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বৈরাগ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নোয়াব আলীসহ স্থানীয় ইউপি সদস্য, সাম্পান মাঝি ও ঘাটের ইজারাদাররা।
কর্ণফুলী নদীর দু’পাড়ের মানুষের নদী পাড়ি দিয়ে চট্টগ্রামের বিভিন্ন শহরে যাতায়াত। আর এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ঘাটের ইজারাদারা নেন বাড়তি ভাড়া। তার ওপর বোটে বহন করে ধারণক্ষমতার বাইরে অতিরিক্ত যাত্রী। ফলে ঝুঁকি নিয়ে সাগর পাড়ি দেন প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ। ঘাটে যাত্রীদের হয়রানি, বাড়তি ভাড়া আদায়, অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাইসহ নানা অনিয়মের অভিযোগে গত রবিবার সরেজমিনে ঘাটে পরিদর্শন করেছেন আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ইশতিয়াক ইমন।
স্থানীয়রা জানান, ঘাট দিয়ে দক্ষিণ চট্টগ্রামের আনোয়ারা, কর্ণফুলী, চন্দনাইশ, সাতকানিয়া, বাঁশখালী, পটিয়াসহ কয়েকটি উপজেলার বিদেশযাত্রী, হজ্ব যাত্রী, পশ্চিম অঞ্চলের শহরমূখী মানুষসহ মেরিন একাডেমি স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষার্থী, কাফকো, সিইউএফএল, কোরিয়ান কেইপিজেড, কর্ণফুলী টানেল ও বেসরকারি শিল্প প্রতিষ্ঠানের হাজারো চাকরিজীবীরা প্রতিদিন নদী পারাপার করেন।
পারাপারের জন্য ইঞ্জিন চালিত নৌকাগুলো চালিত হচ্ছে অদক্ষ চালক দিয়ে। নদীতে যখন পানি বাড়ে তখন ছোট নৌকা বা বোটে ৩০-৩৫ জন মানুষ নিয়ে নদী পার হওয়া যে কতটা ঝুঁকিপূর্ণ তা না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন।
নদীর পাড়ে যাত্রী ওঠানামায় রয়েছে নানা সমস্যা। ঘাটে ইজারাদারা মানুষের তুলনায় নৌকা না রাখায় দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে হয় সাধারণ যাত্রীদের। অন্য উপায় না থাকায় যাত্রীরাও চড়তে বাধ্য হন এসব বোটে। আর এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ঘাটের ইজারাদারা নেন বাড়তি ভাড়াও। তার ওপর বোটে বহন করে ধারণক্ষমতার বাইরে অতিরিক্ত যাত্রী। ফলে ঘটে নৌকা ডুবিসহ নানান দুর্ঘটনা। বর্ষা মৌসুমেও ইঞ্জিনচালিত নৌকা দিয়ে অতিরিক্ত যাত্রী পারাপার করলে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগেন যাত্রীরা।
বিদেশযাত্রীরা অভিযোগ করে বলেন, বিদেশ যাওয়ার সময় নৌকা রির্জাভ করে বাড়তি ভাড়া দিয়ে পার হতে হয় আমাদের। অনেক সময় লোকাল নৌকা করে পার হতে গেলে ঘাটের মাঝিরা মালামাল ও অতিরিক্ত ভাড়া দাবী করে হয়রানী করে। এতে করে অনেক সময় বিমান বন্দরে ঠিক সময়ে যাওয়াও সম্ভব হয় না।
বৈরাগ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নোয়াব আলী জানান, ঘাট দিয়ে যাতায়াতের যাত্রীদের হয়রানিসহ বিভিন্ন অভিযোগের ভিত্তিতে সোমবার ইউএনও মহোদয় ডেকেছেন তাদের। এসময় তিনি তাদের কঠোর ভাবে নির্দেশনা দিয়েছেন যেন যাত্রীদের হয়রানি, বোটে ঝুঁকি নিয়ে অতিরিক্ত যাত্রী বহন বন্ধের সিদ্ধান্ত হয়। কমানো হয় ঘাটের ভাড়াও।
ইউএনও মো. ইশতিয়াক ইমন বলেন, বৈঠকে কঠোর ভাবে নির্দেশ দেয়া হয়েছে যেন যাত্রীদের কোনো ধরনের হয়রানি বা অতিরিক্ত ভাড়া আদায় না করে। প্রতিটি বোটের ২০ যাত্রী বহন, ২০টাকা ভাড়া ও ঘাট ভাড়া ৫ টাকা থেকে কমিয়ে ৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করলে নেওয়া হবে কঠোর ব্যবস্থা।
Copyright © 2023 Daily Frontier News | Design & Developed By: ZamZam Graphics