Daily Frontier News
Daily Frontier News

নাসিরনগরে বন্যায় ভেসে গেছে চাষ করা পুকুরের প্রায় ১২ কোটি টাকার মাছ ।

 

মোঃ আব্দুল হান্নান, নাসিরনগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া)  সংবাদদাতাঃ-

 

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগরে বন্যায় তলিয়ে গেছে নিন্মাঞ্চলের অনেক জায়গা। তার মধ্যে জেলার নাসিরনগর অন্যতম। উপজেলার গোর্কণ ইউনিয়নের বাসিন্দা ও নাসিরনগর সরকারী ডিগ্রী কলেজের সহকারী অধ্যাপক মাঈন উদ্দিন ভূইয়া শান্ত জানায়,তার পাচটি পুকুরের মাঝে সব কয়টির মাছ বন্যার পানিতে ভেসে গেছে।

সম্প্রতি ভারি বৃষ্টি আর উজান থেকে নেমে আসা পানির কারণে সৃষ্ট বন্যায় নাসিরনগরের মেঘনা, তিতাস ধলেশ্বরী ও লঙ্গন সহ বেশ কিছু নদীর পানি ফুঁসে উঠেছে।মাঈন উদ্দিন ভূইয়ার মতো উপজেলার আরও প্রায় ৭০০ পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। মাছচাষিদের দাবি এবার বন্যায় তাদের ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১২ কোটি টাকা হবে।

মাছচাষিরা বলেন, কিছু বুঝে ওঠার আগেই বন্যার পানি সব পুকুরের মাছ ভাসিয়ে নিয়ে গেছে। তবে এখনও পুকুরের চারপাশে জালের বেড়া দিচ্ছেন অনেক চাষি, যদি কিছু মাছ রক্ষা করা যায় সেজন্য।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ভারি বৃষ্টিপাত আর উজানের ঢলে পানি বৃদ্ধি পেয়ে অধিকাংশ ইউনিয়নের নিন্মাঞ্চল তলিয়ে গেছে। এতে ওই এলাকার পুকুরে পানি ঢুকে পুকুরের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। মৎস্য অফিসের তথ্য মতে- উপজেলায় মোট পুকুরের সংখ্যা প্রায় তিন হাজার। এর মধ্যে সোমবার দুপুর পর্যন্ত উপজেলার প্রায় পাঁচ শতাধিক পুুকুরের মাছ ভেসে গেছে। তবে পানি বৃদ্ধি-বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে এ ক্ষতির পরিমাণ কয়েকগুণ বাড়তে পারে। এসব পুকুরে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ও পোনা ছিল। টাকার অঙ্কে এ ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ছয় কোটি টাকা।

আরও জানা যায়, উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নে ৫০টি, চাপরতলা ৯০টি, ধরমন্ডলে ১২০টি, গোকর্ণ ইউনিয়নের ২০টি, কুন্ডা ইউনিয়নে ৪০টি, ভলাকুট ইউনিয়নের ৯০টি, ফান্দাউকে ৩০টি, নাসিরনগরে ১২০টি, চাতলপাড়ে ৩০টি ও বুড়িশ্বরে ১২০টি পুকুরের মাছ ও পোনা ভেসে গেছে।

বুড়িশ্বর ইউনিয়নের সিংহ গ্রামের বাসিন্দা রতন সাহাজী বলেন, ‘খুব কষ্ট করে চারটা পুকুরে মাছ চাষ করছিলাম। কিন্তু সব পানির নীচে চলে গেছে। একটা মাছও ধরতে পারছি না। আমার প্রায় ছয় লাখ টাকার মাছ ভাইস্যা গেছে।’

মৎসজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পরিমল দাস বলেন, ‘বন্যার কারণে মৎস্যজীবী মানুষজন মারাত্মক ক্ষতির সম্মুক্ষীন হয়েছে। এরই মধ্যে উপজেলার নিন্মাঞ্চলের সবকটি পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। সরকারিভাবে কোনো প্রণোদনা না পেলে জেলেদের বেঁচে থাকাটা কষ্টকর হবে।’

উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা শুভ্র সরকার বলেন,পানি বৃদ্ধির যে হার সেটা যদি অব্যাহত থাকে তাহলে উপজেলার সবকটি পুকুর পানির নিচে তলিয়ে যাবে। এই পর্যন্ত ১৩টি ইউনিয়নের মাছ চাষীদের দেওয়া তথ্য মতে প্রায় ৭০০ পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। যার ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১২ কোটি টাকা। তবে এর পরিমাণ বাড়তে পারে বলে তিনি যোগ করেন।কিন্তু বেসরকারী হিসেবে উপজেলার মৎস্যখাতে এর পরিমান আরো অনেক বেশী বলে দাবী করেন মৎস্য চাষীরা।

Daily Frontier News