Daily Frontier News
Daily Frontier News

নাঙ্গলকোট থানার ওসি ফারুক হোসেনসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে পুলিশ হেডকোয়ার্টারে অভিযোগ

 

জামাল উদ্দিন স্বপন :-

কুমিল্লার নাঙ্গলকোট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফারুক হোসেন, এসআই সুমিত, এসআই ইয়ামিন সুমন ও কনষ্টেবল ইসহাকের বিরুদ্ধে পুলিশ হেডকোয়ার্টারে অভিযোগ দিয়েছেন সৈয়দ গোলাম মঈনুদ্দিন টিপু। অভিযোগকারী টিপু উপজেলার হেসাখাল ইউনিয়নের হিয়াজোড়া গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ হাবিলদার মৃত আবুল কাসেমের পুত্র। ওসি ফারুক হোসেনের নির্দেশে এসআই সুমিত কর্তৃক চা-নাস্তা খাওয়ার কথা বলে থানায় নিয়া অবরুদ্ধ করতঃ অমানসিকভাবে শারিরীক নির্যাতন করে ডান হাত ভেঙে দিয়ে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে হয়রানী করার কারণে অভিযোগ করা হয়। সৈয়দ গোলাম মঈনুদ্দিন টিপু অভিযোগে উল্লেখ করেন, এলাকায় বিভিন্ন বিষয়াদী নিয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ মনোমালিন্য ও বিরোধ চলিয়া আসিতেছে। এলাকায় তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকা লোকজন তাকে ও পরিবারকে কোনভাবে ঘায়েল করতে না পেরে ক্ষোভের বশবর্তী হয়ে টাকার বিনিময়ে অন্য লোকজনদের মাধ্যমে এবং পুলিশ প্রসাশনকে টাকার বিনিময়ে তাঁর ও পরিবারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারীদের আয়ত্বে নিয়া তাকে ও পরিবারের সদস্যদের বিভিন্নভাবে হয়রানীসহ ঘায়েল করার লক্ষ্যে বহুমূখী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। উক্ত ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে তার চাচাদের পরিচিত জনৈক মোঃ আব্দুল কাদের জসীম(৪২), পিতা-মোঃ আবুল খায়ের, মাতা-মনোয়ারা বেগম, সাং-পশ্চিম গোত্রশাল, নাঙ্গলকোট পৌরসভা, থানা-নাঙ্গলকোট, জেলা-কুমিল্লাকে তিনি কিংবা পরিবারের কোন লোকজন চিনেনা বা জানা শোনা না থাকা সত্ব্ওে তাকে তাদের পক্ষে নিয়া নামে মাত্র ঘটনা সাজিয়ে একটি মিথ্যা মামলা রুজু করিয়া মামলা রুজুর পূর্বে গত ২০/০৩/২০২২ইং তারিখ রোজ শনিবার, রাত্র অনুমান-০৯.০০ ঘটিকার সময় নাঙ্গলকোট থানার অফিসার ইনচার্জ ফারুক হোসেনের নির্দেশে এস.আই সুমিতের মাধ্যমে ওসি ফারুক হোসেনের সাথে চা পানের কথা বলে তাকে থানায় যেতে বলিয়েছে মর্মে কৌশল অবলম্বন করে রাত্র ০৯.০০ ঘটিকার সময় বাসা হতে ডেকে তাকে থানায় নিয়ে যায়। অফিসার ইনচার্জের নির্দেশে অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তি থানায় কর্মরত ব্যক্তিদের সামনে তিনি কিছু বুঝে উঠার আগেই তাকে অশ্লীল গালমন্দ করতঃ চড় থাপ্পর মেরে অমানসিকভাবে নির্যাতন করে এবং তাকে মহিলা হাজত কক্ষে নিয়া তালা মেরে আটকে রাখে। পরবর্তীতে রাত্র ১১.০০ ঘটিকার সময় এস.আই সুমিত তাকে হ্যান্ডকাপ পড়িয়ে অফিসার ইনচার্জ ফারুক হোসেনের কক্ষে নিয়ে তাকে সেখানে রেখে সে চলে যায়। পরে অফিসার ইনচার্জ ফারুক হোসেনের নির্দেশে কনস্টেবল ইসহাক বাহির থেকে লাটি নিয়া আসার পর রুমের লাইট বন্ধ করে অফিসার ইনচার্জ ফারুক তাকে লাটি দিয়া এলোপাতাড়ি পিটিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে নীলাফুলা ও থেতলানো জখম করে পিঠিয়ে তার ডান হাত ভেঙ্গে দেয়। পরে এসআই ইয়ামিন সুমন তাকে পূনরায় মহিলা হাজতে নিয়ে একই লাটি দ্বারা সে তাকে এলোপাতাড়ি মারধর করে এবং ওসি ফারুক হোসেনের বডিগার্ড কনস্টবল ইসহাক তার আঙ্গুলে সুই ঢুকিয়ে দেয় এবং লাটি দিয়া পায়ের তালুতে পিটায়। তখন তিনি হাজত খানায় জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। পরবর্তীতে থানার সিসি ক্যামরায় হাজত খানার মধ্যে তার অবস্থা গুরুতর দেখে ওসি ফারুক হোসেনের নির্দেশে তারা তাকে নাঙ্গলকোট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করে এবং পূনরায় থানায় নিয়া যায়। পরের দিন সকাল বেলা এস.আই ইয়ামিন সুমন থানা হাজত থেকে তাকে হ্যান্ডকাপ পড়িয়ে বের করে থানা অভ্যন্তরে নারী ও শিশু প্রতিবন্ধী রুমে নিয়ে অবরুদ্ধ করতঃ ভয়ভীতি প্রদর্শন করিয়া তার নিকট থেকে মোটা অংকের টাকা দাবী করে আত্নীয়-স্বজনদের নিকট হইতে এনে দেয়ার জন্য বলিলে তিনি তার মায়ের মোবাইল নাম্বার ছাড়া অন্য কারো মোবাইল নাম্বার জানা নাই বলে জানালে তার মায়ের সাথে যোগাযোগ করে কোন লাভ নাই বলে তার ভগ্নিপতির মোবাইল নাম্বার দেয়ার জন্য বলে। ঘটনাক্রমে তার ভগ্নিপতি তাকে দেখার জন্য হাজত খানায় গেলে দেখে অফিসার ইনচার্জ ফারুক হোসেনের নির্দেশে এস.আই ইয়ামিন টাকা আদায়ের লক্ষ্যে তাকে কারেন্টের শর্ট লাগাইয়া ও লাঠি দিয়া অমানবিকভাবে মারধর করিয়া নির্যাতন করে। তিনি নিরুপায় হয়ে তার ভগ্নিপতি বাহিরে আছে বলে জানালে এসআই ইয়ামিন সুমন তার ভগ্নিপতিকে খোঁজার জন্য অপর একজন কনস্টবল (্ওসির বডিগার্ড) কে দায়িত্ব দেওয়ার পর উক্ত কনস্টবল ও তাকে এলোপাতাড়ি লাটি দিয়া পিটিয়ে শরীরের বিভিন্ন অংশে জখম করে। পরবর্তীতে বহুমুখী নির্যাতনের ফলেও টাকা না পেয়ে তার অপরিচিত মোঃ আব্দুল কাদের জসীম নামীয় এক ব্যক্তিকে দিয়ে বহু পূর্বের ঘটনা দেখিয়ে তার বিরুদ্ধে একটি মামলা সাজিয়ে তাকে ওই দিন বিকাল বেলা কোর্টে চালান দেয়। পরবর্তীতে তিনি ২১/০৪/২০২২ইং তারিখ কোর্ট থেকে জামিনে মুক্তি লাভ করে বাড়ীতে গেলে পরের দিন আবারও এস.আই ইয়ামিন সুমনসহ তার সঙ্গীয় আরও কয়েকজন ফোর্স নিয়ে তার বশত বাড়ী পূনরায় ঘেরাও করিয়া তাকে খোঁজাখুঁজি করে। অফিসার ইনর্চাজ বিভিন্ন লোক দিয়ে তার বাড়ী ঘর লুটপাট করিবে বলে হুমকি ধমকি প্রদান করিয়া তার পরিবারের সদস্যদেরকে নাজেহাল ও ভয়ভীতি প্রদান করে। তখন তিনি অভিযুক্ত অফিসার ও ফোর্সদের নির্যাতনের ফলে জখম হওয়ার কারণে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসাধীন ছিলেন। এমতাবস্থায় ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত বিচার বিশ্লেষন করে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন পূর্বক সুবিচার পাওয়ার প্রার্থনাসহ ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে তদন্ত পূর্বক আইনগত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পুলিশ মহাপরিদর্শের নিকট লিখিত অভিযোগ করেন তিনি।
এদিকে সৈয়দ গোলাম মঈনুদ্দিন টিপুর উপর নির্যাতনের ঘটনায় দায়ি পুলিশ ও ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী। গত ১৭ মে মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন ছিদ্দিকুর রহমান, আলী আকবর মাইজভান্ডারী, সুরুজ মিয়া, নওয়াব আলী, গোলাফ মিয়া, আবু বকরসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নারী-পুরুষ।

Daily Frontier News