Daily Frontier News
Daily Frontier News

তালায় দির্ঘ ৪১ বছর পর আকলিমা বেগম ফিরে এলো পরিবারের কাছে।

 

 

সাতক্ষীরা জেলা প্রতিনিধি।।

 

তালা উপজেলার আকলিমা বেগম(৬৫) ফিরে এসেছে নিজ পরিবারের কাছে। তিন সন্তান রেখে ১৯৮২ সালে নিখোঁজ হন তিনি ।পরিবারের সদস্যরা সে সময় অনেক চেষ্টা করেও তার কোনো সন্ধান পায়নি। পরবর্তীতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সন্ধান মেলে তার।

বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) দুপুরে নিজ পরিবারের কাছে ফিরে আসেন আকলিমা বেগম। সে সাতক্ষীরার তালা উপজেলার গঙ্গারামপুর গ্রামের মৃত ইসমাইল শেখের মেয়ে।আকলিমা তার জন্ম ভুমিতে এসেছেন পাকিস্তানি বংশধর আসরাফ আলী, সন্তানকে নিয়ে। এ সময় সেখানে সৃষ্টি হয় উৎফুল্ল পরিবেশ।

আকলিমা বেগম বলেন,সে সময় কিভাবে তিনি পাকিস্তান পৌঁছালেন প্রথমে ভারতে প্রবেশ করেন। তার পর বাইসাইকেল মটরসাইকেল বাস যোগে বিভিন্ন যানবাহনে চলতে থাকেন তিনি এক পর্যায়ে পাকিস্তানতে পৌঁচে যান।
তবে পরিবারকে ফিরে পেয়ে ভীষণ খুশি তিনি।

পারিবারিক সূত্র জানায়, বাংলাদেশে থাকাকালে স্বামীর মৃত্যুর পর মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন আকলিমা। এরপর একদিন সে অবস্থাতেই হারিয়ে যান। ফেসবুকের মাধ‍্যমে দীর্ঘ ৪১ বছর পর গত তিন মাস আগে পাকিস্তানের শিয়ালকোটের দিলওয়ালিতে খোঁজ মেলে তার আকলিমা এখন পাকিস্তানের শিয়ালকোটের দিলওয়ালিতে থাকেন। সেখানে রয়েছে তার আরেক পরিবার। দ্বিতীয় সংসারে তিনি আরও দুই ছেলে ও দুই মেয়ের জননী। পাকিস্তানের পরিবারের কাছে একলিমা মৃত্যুর আগে অন্তত একবার নিজ মাতৃভূমির জন্মস্থানে আসার ইচ্ছা পোষণ করেন। পরিবারের সদস্যরা তার সেই ভিডিওবার্তা ধারণ করে ফেসবুকে যশোরের একটি গ্রুপে পোস্ট করেন। তাদের পোস্ট করা ভিডিওটি চোখে পড়ে আকলিমা বেগমের বড় ভাই মৃত মকবুল শেখের ছেলে তালা উপজেলা সাস্থ্যকমপ্লেসের সামনের ঔষধ ব‍্যাবসায়ী মো. জাকারিয়া শেখের। ভিডিওতে একলিমার বলা নামগুলো নিজের দাদা-বাবা ও চাচাদের সাথে মিলে যাওয়ায় তিনি বিষয়টি নিয়ে বাড়িতে আলোচনা করেন। ভিডিও দেখিয়ে নিশ্চিত হন যে ভিডিওর একলিমা বেগমই তার হারিয়ে যাওয়া ফুফু। এরপর তারা পারিবারিকভাবেই ভিডিও কলে যোগাযোগ করেন একলিমার সঙ্গে।

আকলিমা বেগমের ছোট ভাই ইব্রাহিম শেখ জানান, সে সময় আমাদের অনেক অভাব ছিল। বোনের স্বামী মারা গেলে সে যেন প্রায় পাগল হয়ে গিয়েছিল।
আকলিমা বেগমের ভাইপো জাকারিয়া বলেন।অবশেষে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান দূতাবাসের সহযোগিতায় বাড়িতে ফেরানো সম্ভব হয়েছে। ফুফুর সাথে কথা বলে জানতে পারি তিনি শুরুতে পাকিস্তানের একটি শেল্টার হোমে ছিলেন। সেখানে মুহাম্মদ সিদ্দিক নামে একজনের সঙ্গে তার পরিচয় হয় এবং পরে বিয়ে করেন। মুহাম্মদ সিদ্দিক কয়েক বছর আগে মারাযায়। সেখানে তাদের পরিবারে দুটি ছেলে এবং দুটি মেয়ে রয়েছে।

তিনি আরও জানান, বাংলাদেশে আকলিমা বেগমের প্রথম ঘরের এক ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে। ছেলে হেকমত আলী কাজ করেন ঢাকার একটি কারখানায়। দুই মেয়ের মধ্যে বড় মেয়ে রমেছা বেগম এখন পার্শ্ববর্তী হরিঢালী ইউনিয়নের শলুয়া গ্রামে শ্বশুরবাড়িতে বসবাস করছেন। অন্যদিকে ছোট মেয়ে নাছিমা বেগমের শ্বশুরবাড়ি একই এলাকায়।

স্থানীয় এলাকাবাসী জানায়, ৪১ বছর পরে আকলিমা বেগমকে ফিরে পেয়ে তারা এবং তার পরিবারের সদস্যরা অনেক আনন্দিত ।

Daily Frontier News