মোঃ আব্দুল হান্নানঃ-
প্রবাদে আছে,জীবে প্রেম করে যেই জন,সেই জন সেবীচে ঈশ্বর।আমি এখন বলবো এক মানবিক ডাক্তারের গল্প।তিনি হলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার ৫০ শয্যা বিশিষ্ট নাসিরনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার অভিজিৎ রায়।
যিনি ২০১৯ সালের ২৩ জুন নাসিরনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগদান করেন।তিনি নাসিরনগরে যোগদানের পর থেকেই উন্নয়নের ছোঁয়া লাগে উক্ত হাসপাতালটিতে।তিনি স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব বি,এম ফরহাদ হোসেন সংগ্রাম এমপি মহোদয়ের সহযোগিতা নিয়ে হাসপাতালের উন্নয়নের কাজে হাত দেন।তার হাতের নিপুণ ছোঁয়া ব্যপক উন্নতি সাধিত হয় অত্র হাসপাতারটিতে।যেমন,হাসপাতালের পরিবেশের উন্নয়ন,চিকিৎসার মান,প্রয়োজনীয় ডাক্তার ও নার্স,মসজিদ নির্মান,আইসিও বেড স্থাপন,গর্ভবতীদের সিজার,চক্ষু কর্ণার,রোগীদের পর্যাপ্ত ঔষধ পত্র সহ আরো অনেক কিছু।তার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ইতিমধ্যে হাসপাতালটি চট্রগ্রাম বিভাগের মাঝে বেশ সুনাম অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
রোগীদের বিপদে ডাক্তার অভিজিৎ রায়কে ঝাপিয়ে পড়ে সেবা করতেও দেখা গেছে।বলছি গত শুক্রবারের আমার চোখে দেখা একটি নির্মম ঘটনার কথা।১৬ সেপ্টেম্বর ২০২২ রোজ শুক্রবার। বেলা তখন অনুমান দুপুর দেড় ঘটিকা।আমি তখন একটি জরুরী কাজে ব্যস্ত।হঠাৎ নাসিরনগর সরকারী ডিগ্রি মহাবিদ্যালয়ের কলেজ শাখার সাধারণ সম্পাদক আবির ইসলাম বাপ্পীর ফোন।ভাই কাথায় আছেন,তাড়াতাড়ি কলেজে চলে আসেন,একজন বৃদ্ধ মহিলা কলেজের ল্যাট্রিনের পাশে অজ্ঞান হয়ে পড়ে রয়েছে।আমি বললাম আমি আসছি তুমি তাড়াতাড়ি মহিলাটিকে হাসপাতালে নিয়ে এসো।ফোন কেটে আমি রিক্সা নিয়ে দ্রুত হাসপতালে চলে আসি। দেখি বৃদ্ধ মহিলাকে বাপ্পী সহ কয়েক জন ছাত্র মিলে হাসপাতালে দোতলায় নিয়ে আসে।মহিলার অবস্থা খুবই আশংকা জনক।সাথে সাথে আমি ডাক্তার অভিজৎ রায়কে ফোন করি আর বাপ্পীকে বলি তুমি ওসি সাহেবকে বিষয়টি ফোনে জানাও।ডাক্তার অভিজিৎ রায় তখন হাসপাতাল কম্পাউন্ডের বাহিরে ছিলেন।আমার ফোন পেয়ে বললো ভাই একটু দাড়ান আমি ডাক্তার পাঠাচ্ছি।মহুর্তেই ছোট ভাই ডাক্তার তানভীর আনসারী রকি সেখানে উপস্থিত হয়ে মহিলাকে বিভিন্ন পরীক্ষা নিরিক্ষা করে ভর্তির ব্যাবস্থা করেন।আমি সাথে সাথেই মহিলার একটি ছবি তুলে আমার নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক আইডি থেকে একটি পোষ্ট করলে অন্যান্যরা আমার সেই পোষ্টটিকে তাদের নিজস্ব আইডি থেকে দ্রুত শেয়ার করতে শুরু করে।আমার পোষ্ট পেয়ে বিকেলে অজ্ঞাত ও অজ্ঞান মহিলার মেয়ে এসে হাসপাতালে হাজির হন।জানা গেছে ওই মহিলার বাড়ি গোয়াল নগর ইউনিয়নের রামপুর গ্রামে।মহিলা তার মেয়ের জামাইর বাড়ি বুড়িশ্বর থেকে ওইদিন সকাল ১০ ঘটিকার সময় ৫ হাজার টাকা নিয়ে কলেজ মোড়ে ডাক্তার আব্দুল্লাহ আল মামুনকে দেখানোর জন্য নাসিরনগরের উদ্দেশ্যে রওয়ান দিলে পথিমধ্যে অজ্ঞান পার্টির কবলে পড়েন তিনি।অজ্ঞান পার্টির লোকজন মহিলাকে ফুসলিয়ে নাসিরনগর কলেজের পেচনে নিয়ে মহিলার সাথে থাকা নগদ টাকা,কানের ও গলার অলংকার ছিনিয়ে নিয়ে মহিলাকে অজ্ঞান করে পেলে রেখে চলে যান।
আমি সে দিনও দেখেছি ডাক্তার অভিজিৎ রায়ের মানবতা।শুধু ওই ঘটনাই নয় ডাক্তার অভিজিৎ রায়ের আরো বেশ কয়েকটি মানবতার স্বাক্ষী আমি নিজেই।এমন মানবিক ডাক্তারের সর্বাঙ্গীন মঙ্গল কামনা করি।আর আমি বললো আমাদের দেশের অন্যন্য ডাক্তার নার্স,রাজনৈতিক ব্যাক্তিবর্গ আর সমাজ সেবকরা, আমরা যারা মানবিক বা সমাজ সেবা মুলক কাজের সাথে যুক্ত আমরা সবাই ইচ্ছে করলে ডাক্তার অভিজিৎ রায়ের কাছ থেকে মানবিকতা কিছুটা হলেও শিখে নিতে পারি।
বর্তমানে ও বৃদ্ধা মহিলা এখনো অত্র হাসপাতালে ডাক্তার তানভীর আনসারীর মাধ্যমে চিকিৎসাধীন রয়েছেন এবং তার অবস্থা আগের তুলনা অনেকটা উন্নতির দিকে।
Copyright © 2025 Daily Frontier News | Design & Developed By: ZamZam Graphics