Daily Frontier News
Daily Frontier News

অর্থনৈতিক কেলেঙ্কারি ফাঁস  বিজয়নগর উপজেলা চান্দুরা স’প্রা’বি এর প্রধান শিক্ষক হারুন এর বিরুদ্ধে আইন বহির্ভূত । 

 

 

শাহীন চৌধুরী বিজয়নগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া)

.                       জেলা ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিজয়নগর উপজেলা চান্দুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের (শিশু শ্রেণী থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত), প্রধান শিক্ষক , হারুন রশিদ খান এর বিরুদ্ধে অবৈধ ভাবে টিও,এটিও, ইঞ্জিনিয়ার, ডিসি, এডিসি,ঢাকায়, বইয়ের জন্য ইউএনও, মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে, অষ্টম শ্রেণীর পরীক্ষার অনুমতি, পিন নাম্বর নেওয়া সহ শিক্ষাবোর্ডে আসা-যাওয়ার বিভিন্ন খরচ, স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার-খরচ করার, এলাকার মেম্বার সহ ৩৭ জন ছাত্র-ছাত্রী’র অভিভাবকের স্বাক্ষর সংম্বলিত গুরুতর লিখিত অভিযোগ দায়ের, প্রতি ইউএনও বিজয়নগর ব্রাহ্মণবাড়িয়া ।

.                  সূত্রে জানা যায়, ১১ই মে ২০২২ইং উপজেলা নির্বাহী অফিসার মহোদয় বিজয়নগর ব্রাহ্মণবাড়িয়া বরাবর বিষয়ে চান্দুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়(শিশু শ্রেণী হইতে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত) এর প্রধান শিক্ষক মোঃ হারুন-অর-রশীদ খান এর অর্থনৈতিক কেলেঙ্কারীর অভিযোগ দায়ের । বিদ্যালয়টি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার একটি ঐতিহ্যবাহী বিদ্যালয় সমূহের অন্যতম একটি বিদ্যালয় । ২০১৮ সাল হইতে উক্ত বিদ্যালয়ে পর্যায় ক্রমে ৬ষ্ঠ ও অষ্টম শ্রেণি চালু হয়। বিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রী প্রায় ১১০০জন। (ষষ্ঠ ও অষ্টম শ্রেণীতে প্রায় ৩০০ জন)। ২০১৮ সালের শেষের দিকে (সম্ভবত অক্টোবর মাসে ২০১৮সালে)। বর্তমান প্রধান শিক্ষক মোঃ হারুনুর রশিদ খান বিদ্যালয়ে যোগদান করে বিভিন্ন অজুহাতে (যেমন নতুন ভবন মঞ্জুর করাতে টিও, এটিও,ইঞ্জিনিয়ার, ডিসি, এডিসি ও ঢাকায় প্রচুর টাকা লাগে । বই আনতে বইয়ের সভাপতি, ইউএনও ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে টাকা দিতে হয় । অষ্টম শ্রেণীর পরীক্ষার অনুমতি ও পিন নাম্বার এর জন্য ২৫/৩০ হাজার টাকা বোর্ডে দিতে হয় ।

.           ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে নিম্নবর্ণিত হারে চাঁদা আদায় করে আসছে ।
(১) শিশু ও প্রথম শ্রেণি, ভর্তির ফি ৫০/ টাকা ও শিশু শ্রেণী থেকে প্রথম শ্রেণীতে পূর্ণ ভর্তি (২) পঞ্চম শ্রেণীতে, পরীক্ষা ফি ১০০ টাকা, রেজিস্ট্রেশন ফি ১০০ টাকা, সনদপত্র ফি ২০০ টাকা (৩) ৬ষ্ঠ শ্রেণী, ভর্তি ফি ৩০০ টাকা, বই প্রদান ফি ২০০ টাকা, পরীক্ষার ফি ৩০০ টাকা, সিলেবাস ফি ২০ টাকা (৪) সপ্তম শ্রেণী, বই প্রদান ফি ২০০ টাকা, সেশন ফি ৩০০ টাকা, পরীক্ষার ফি ৩০০টাকা, সিলেবাস ফি ২০ টাকা (৫) অষ্টম শ্রেণী, বই প্রদান ফি ২০০ টাকা, সেশন ফি ৩০০ টাকা, পরীক্ষা ফি ৩০০ টাকা, রেজিস্ট্রেশন ফি ৪২০ টাকা, সনদপত্র ফি ৫০০ টাকা, সিলেবাস ফি ২০ টাকা ।

.               তাছাড়া বহিরাগত শিক্ষার্থীদের বেলায় ষষ্ঠ-অষ্টম শ্রেণীর ভর্তি ফি ৫০০-১৬০০/টাকা । ১ম-৫ম শ্রেণীর পরীক্ষার ফি ও সরকারি বিধিমালার দুই/তিন গুণ বেশি নিয়ে থাকে । প্রধান শিক্ষক বইয়ের কোম্পানির সাথে সমন্বয় করে প্রচুর অর্থের বিনিময়ে গাইড বই ক্রয়ের জন্য ছাত্র-ছাত্রীদের বাধ্য করে । যতদূর জানা যায় স্লিপ সহ বিভিন্ন অনুদানের টাকা সঠিক ভাবে খরচ করে না । উল্লেখিত বর্নিত বিষয়সমূহ তদন্ত সাপেক্ষে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আজ্ঞা হয় ।

.                    উল্লেখিত বিষয়ে সরেজমিনে চান্দুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ হারুন-অর-রশিদ খান এর নিকট জানতে চাইলে, দৈনিক ফ্রন্টিয়ার.নিউজ প্রতিনিধিকে জানান, উপরের নির্দেশে কোন কিছু বলা যাবে না। তিনি সাংবাদিকদের কে বক্তব্য দিতে রাজি নয় ।

.                যে সকল প্রশ্ন করার কথা ছিল, প্রধান শিক্ষক হারুন-অর-রশিদকে  ???

(১) আপনি কি সরকারি নীতিমালা মেনে লেনদেন করেছিলেন  ?  (২) আপনি শুধু পরীক্ষার ফিস লওয়ার  জন্য রেজুলেশন করা আছে,  বাকি অন্যান্য ফি আদায় করার জন্য রেজুলেশন করেন নাই কেন ? (৩) বিভিন্ন ফি আদায় করার জন্য আপনি নিজেই দায়িত্বে ছিলেন ?? না-কি অন্য কোন শিক্ষককে দায়িত্ব দিয়েছিলেন ? (৪) ছাত্র-ছাত্রীর অভিভাবকরা আপনার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে অভিযোগ দায়ের করেছেন, আপনি কি মনে করেন ? (৪) আপনার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, নাইট কাম প্রহরী কে দিয়ে আপনি সনদপত্র বিতরণ করেন  ? (৫) আপনি এই স্কুলে যোগদান করার পর থেকে অভিযোগ উঠে নাই,  এখন অভিযোগ উঠছে কেন আপনার বিরুদ্ধে  ? (৬) সাংবাদিকদের কাছে আপনি বক্তব্য দিতে রাজি নয়, আপনার খুঁটির জোর কোথায় ? (৭) আপনার স্কুলের অভিভাবক,  জনপ্রতিনিধি ও ছাত্র/ছাত্রীরা যে অভিযোগ তুলেছে, আপনি সেই অভিযোগে অভিযুক্ত, এ বিষয়ে আপনি কি মনে করেন ?  (৮) আপনার বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক কেলেঙ্কারির অভিযোগে, বেশ কিছু তথ্য উপাত্ত প্রমাণ, ভিডিও ফুটেজ আমাদের হাতে রয়েছে , আপনি এই বিষয়টিকে কিভাবে দেখছেন ? (৯) আপনার অর্থনৈতিক অনৈতিক লেনদেন, স্কুল পরিচালনা পর্ষদ, শিক্ষকমন্ডলী ও উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বৃন্দ জানে কিনা ? (১০) আপনি উর্ধ্বতন বিভিন্ন কর্তৃপক্ষের নাম ভাঙ্গিয়ে অনৈতিক টাকা-পয়সা লেনদেন করেছেন ? উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মান সম্মানহানি ঘটেছে বলে আপনি মনে করেন কি ? (১১) বিদ্যালয়ের স্লিপের টাকায় সঠিকভাবে কাজ না করে ? অসৎ উদ্দেশ্যে  আত্মসাৎ করেছেন অভিযোগ রয়েছে, এ বিষয়ে আপনি কি বলেন ? (১২) আপনার বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়টি , আপোষ মীমাংসা করার জন্য বিভিন্ন জনের নিকট দৌড়ঝাঁপ করছেন ? ইহারও তথ্য-প্রমাণ আমাদের হাতে আছে , আপনি বিষয়টি কিভাবে দেখেন ? (১৩) অভিযোগের বিষয়টি মিটমাট করার জন্য, উর্ধ্বতন  কর্তৃপক্ষের নিকট সর্বদা যোগাযোগ রাখছেন, ফোন আলাপ করছেন, বিভিন্ন শিক্ষকের সাথে ফোন আলাপ করছেন পরামর্শ করছেন ? এই বিষয়টি আপনি কিভাবে দেখছেন ???

.                 উক্ত অভিযোগের বিষয়ে, শিক্ষার্থী-অভিভাবক কল্পনা রানী বলেন , তিন বারে বড় স্যার ৮২০ টাকা নিয়েছে । গরিব মানুষ কষ্ট মষ্ট করে টাকা দিলাম । টাকার রশিদ দেয় নাই । সরকারি স্কুলে আমরা গরীব মানুষ, লেখাপড়া শিখামু কমের ভিতরে, তাইনে আমরারে সরকারি থেইক্কা এমনিতে পড়াইবো । আমরা গরীব মানুষ, কেন আমরা টাকা দিতে । তার জন্য প্রতিবাদ চাই, বিচার চাই ।

.               অভিভাবক দৈবকি ঋষি বলেন, আমরা গরীব মানুষ দিছি সরকারি থেকে বাঁচবার লাইগা, দুই দাগে ৮০০/টাকা নিছে । রশিদ দেয় নাই । আপনেরার ধারো বিচার চাই ।

.                  শিক্ষার্থীর অভিভাবক সুজিত চন্দ্র মোদক, কান্না জড়িত কন্ঠে খুবই আক্ষেপ করে বলেন , বড় স্যারের থাবা থেকে, প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী হয়েও রক্ষা পেল না । ভর্তির জন্য ২০০ টাকা, বইয়ের জন্য ২০০ টাকা নিছে, টাকা না দিলে বই দেয় নাই।টাকা দিছি বই দিছে  । প্রশাসনের কাছে বিচার চাই ।

.         অভিভাবক অর্চনা জানান, বই ২০০ টাকা, তারপর ১০০,তারপর ২০০,তারপর ৩২০ টাকা, মোট ৮২০ টাকা। বড় স্যার টাকা নিছে, রশিদ দেয় নাই । টাকা দিলে বই দিছে । আমরা গরীব এই ভাবে যদি টাকা দিতে হয় , আমরা ছেলে মেয়ে লেখাপড়া করাতে পারব না । সরকারের কাছে বিচার চাই ।

.        এই বিষয়ে বিজয়নগর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার, শাহনেওয়াজ পারভীন আমাদের প্রতিনিধিকে জানান, সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে ।

.              বিজয়নগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার, এ এইচ ইরফান উদ্দিন আহমেদ, দৈনিক ফ্রন্টিয়ার.নিউজ প্রতিনিধিকে বলেন , উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বিজয়নগর, শাহনেওয়াজ পারভীনকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে । তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর, বিধি মোতাবেক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে ।।
,
.                    বিজয়নগর উপজেলা সুধীমহল, জৈষ্ঠ নাগরিক, গুণীজন ও সুশীল সমাজ মনে করে, বিজয়নগর উপজেলায় যে কোনো শিক্ষক তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে, বিজয়নগর উপজেলার ভিতরে আর তাকে না রাখা’ই শ্রেয় ।

Daily Frontier News