বিশেষ প্রতিনিধি।।
দালালের প্রলোভনে চেয়েছিলেন স্বপ্নের দেশ ইতালিতে পাড়ি জমাতে। কিন্তু মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার যুবক এমরান শিকদারের সেই স্বপ্ন পূরণ হয়নি। লিবিয়া থেকে ইতালি যাওয়ার পথে ভূমধ্যসাগরে হূদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মৃত্যু হয় এমরান শিকদারের ।
মঙ্গলবার রাতে এমরান শিকদারের বাড়িতে তার মৃত্যুর খবর এসে পৌঁছায়। ছেলের মৃত্যুর খবর শুনে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন বাবা-মা, স্ত্রী-সন্তান, আত্মীয়-স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশীরা।
নিহত এমরান শিকদার রাজৈর উপজেলার হরিদাসদী- মহেন্দ্রদি ইউনিয়নের মহেন্দ্রদি গ্রামের মোশাররফ শিকদারের ছেলে।
বৃহস্পতিবার সকালে মহেন্দ্রদি গ্রামের মৃত এমরান শিকদারের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় এক হৃদয়বিদারক দৃশ্য। এমরান শিকদারের বাবা মোশাররফ শিকদার ও তার মা এবং এমরানের স্ত্রী রোকশানা বেগম ও ছোট্ট শিশু পুত্র আব্দুর রহমান জিসান (৩) মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর থেকে নাওয়া খাওয়া বন্ধ করে দিয়ে আর্তনাদ করছেন। আত্মীয়-স্বজন ও পাড়া-প্রতিবেশীরা এসে তাদের সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। কিন্তু ছেলের শোকে বাবা মায়ের বুকফাটা কান্নায় ভারী হয়ে ওঠে মহেন্দ্রদি বাতাস। সকলের মাঝে নেমে আসে শোকের ছায়া।
নিহত এমরান শিকদারের স্ত্রী রোকসানা বেগম বলেন, মাদারীপুর সদর উপজেলার শিরখাড়া ইউনিয়নের মতিন দালাল গত ৮ মাস আগে আমার স্বামীকে দুবাই হয়ে রোমানিয়া দিয়ে স্থলপথে ইতালি পৌঁছে দিবেন বলে দুবাই নিয়ে যান। আমরা দালাল মতিনকে তখন ৬ লাখ টাকা দেই। কিছুদিন পর খোঁজ পাই মতিন আমার স্বামীকে অন্য দালালের কাছে বিক্রি করে দেয়।
এরপর আমরা জমি জমা বিক্রি করে শরিয়তপুরের আব্দুল্লাহ নামের অন্য দালালের মাধ্যমে ১২ লাখ টাকা খরচ করে লিবিয়া ভূমধ্যসাগরে হয়ে ইতালি পাঠানোর ব্যবস্থা করি। এ পর্যন্ত ধার দেনা জমি জমা বিক্রি করে ১৮ লাখ টাকা খরচ করেছি। আমার সন্তান সহ আমি এখন নিঃস্ব।
রাজৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলমগীর হোসেন জানান, পরিবারের কাছ থেকে অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Copyright © 2023 Daily Frontier News | Design & Developed By: ZamZam Graphics