ব্রি ধান৯৮ এর বীজ গেল বুড়িচং থেকে ৭ উপজেলায়

মোঃ আব্দুল্লাহ বুড়িচং।।

আউশ মৌসুমের সাম্প্রতিকতম জাত ব্রি ধান৯৮ এর বীজ বুড়িচং থেকে দেশের ৭ উপজেলায় পাঠানো হয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিসের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ব্রি আঞ্চলিক কার্যালয় কুমিল্লা এর দেয়া দুটি প্রদর্শনীর আওতায় গত বছর প্রথমবারের মতো বুড়িচং উপজেলার জরুইন গ্রামে ব্রি ধান৯৮ চাষ করেন মো. আবুল হাসেম ও মো. রফিকুল ইসলাম। আউশ মৌসুমের মেগা জাত ব্রি ধান৪৮ থেকে ধান চিকন কিন্তু ফলন ভালো হওয়ায় বীজ সংরক্ষণের উদ্যোগ গ্রহণ করেন কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার কৃষিবিদ বানিন রায়। বায়ুরোধী পাত্রে বীজ সংরক্ষণের জন্য কৃষকদের সরবরাহ করেন পলিথিন ব্যাগ ও চটের বস্তা। দীর্ঘ ৭ মাস সংরক্ষণের পর সেই বীজ ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হয় ফেনীর দাঙনভূইয়া, ঢাকার সাভার, কুমিল্লার বরুড়া, চান্দিনা, সদর দক্ষিণ, দেবীদ্বার ও ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলায়। সংশ্লিষ্ট উপজেলা কৃষি অফিসারগণ সম্প্রসারণের উদ্দেশ্যে ব্রি ধান৯৮ এর বীজ সংগ্রহ করেন। কিছু বীজ কিনে নেয় উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের কৃষক। ২ বিঘা জমি থেকে জাতটি সম্প্রসারিত হয় অন্তত ২০০ বিঘা জমিতে।
কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার কৃষিবিদ বানিন রায় এ বিষয়ে বলেন, কঠোর লকডাউনের বিধিনিষেধের মাঝে ব্রি প্রদত্ত দুটি প্রদর্শনী বাস্তবায়নের চ্যালেঞ্জ নিয়ে বুড়িচং এ ব্রি ধান৯৮ এর যাত্রা শুরু হয়। ভালো ফলনের পর কৃষক পর্যায়ে বীজ সংরক্ষণ করাটা সবচেয়ে বড় বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। কৃষকদের আর্থিক সংকট ও ইঁদুরের উপদ্রব এই দুটি বিষয় সংরক্ষণের পথকে কঠিন করে তুলে। কৃষকদের প্রতি আমাদের ভালো দাম নিশ্চিতের অঙ্গীকার ছিল। আউশ মৌসুম শুরুর অনেক আগেই উপজেলা কৃষি অফিসের মাধ্যমে সকল বীজ বিক্রি হয়ে যায়। এখন বিভিন্ন উপজেলা থেকে জাতটির আশাতীত ফলনের খবর পাচ্ছি। ব্রি ধান৯৮ এর সম্প্রসারণে অবদান রাখতে পাড়ায় আমরা সকলেই বেশ আনন্দিত।
উপসহকারি কৃষি অফিসার মোছা. বিলকিস আক্তার জানান, জরুইন গ্রামে ইতিমধ্যে জাতটি ছড়িয়ে পড়েছে। জাত পছন্দ হওয়ায় আশেপাশের কৃষকরা ১০০ টাকা পর্যন্ত দরে বীজ নিয়ে গেছে কৃষকের কাছ থেকে। অবাক করা বিষয় হচ্ছে, কেউ কেউ বোরো মৌসুমে ইতিমধ্যে জমিতে ব্রি ধান৯৮ রোপণ করেছেন।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোছা. আফরিণা আক্তার বলেন, আগামীতে আউশ মৌসুমের মেগা ভেরাইটি ব্রি ধান৪৮ কে সড়িয়ে স্থান দখল করার সক্ষমতা রয়েছে ব্রি ধান৯৮ জাতটির। আমরা এ বছর ৫.৯৪ টন/হে. পর্যন্ত সর্বোচ্চ ফলন পেয়েছি। নমুনা শস্য কর্তন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট এর মহাপরিচালক মহোদয় উপস্থিত ছিলেন। বুড়িচং উপজেলার সকল ব্লকে জাতটিকে ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে।