মোঃ আব্দুল্লাহ বুড়িচং।।
“না জেনে না বুঝে বিষ প্রয়োগ করবো না” শ্লোগানকে সামনে রেখে কুমিল্লা জেলার বুড়িচং উপজেলায় কৃষকদের জন্য চালু করা হয়েছে প্রান্তীয় কৃষি ক্লিনিক। উপসহকারি কৃষি অফিসারগণ বিভিন্ন গ্রামের একটি নির্দিষ্ট স্থানে পূর্বনির্ধারিত সময়ে উপস্থিত হয়ে প্রতি সপ্তাহে প্রদান করেন কৃষি পরামর্শ সেবা। মানুষের ডাক্তারদের মতো রঙ্গিন প্রেসক্রিপসন প্যাডে কৃষকেরা গ্রহণ করেন কৃষি পরামর্শ। প্রয়োজনে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপজেলার অফিসারদের সাথেও কথা বলা যায়। মাঝে মাঝে উপজেলা পর্যায়ের অফিসারেরা আসেন পরিদর্শনে। এভাবে পরীক্ষামূলকভাবে চলছে প্রান্তীয় কৃষি ক্লিনিকের কার্যক্রম।
বুড়িচং উত্তরপাড়া গ্রামে এমনই এক কৃষি ক্লিনিকে সেবা নিতে আসা কৃষক শাহীন মিয়া জানান, মূলত ধানের বিভিন্ন রোগ ও পোকার আক্রমণ দমনে পরামর্শ নিতে আসেন অধিকাংশ কৃষক। ধান লাগানোর পর থেকে তাই লোকজনের সংখ্যা বাড়ে। তাছাড়া শাক সবজি ও ফল গাছের নানা বিষয়ে পরামর্শ নেই। উপসহকারি কৃষি অফিসার প্রতি বৃহস্পতিবার সকাল ৯ টায় আমাদের গ্রামে বসেন।
ভারেল্লা দক্ষিণ ইউনিয়নের রামপুর গ্রামে এমনই এক ক্লিনিক পরিচালনা করেন উপসহকারি কৃষি অফিসার মোছা. সুলতানা ইয়াসমিন। তিনি জানান, কৃষক বেশি পরামর্শ নেয় ধানের নতুন নতুন জাত, সারের পরিমাণ, বিভিন্ন ফসলের রোগ বালাই দমন ইত্যাদি বিষয়ে। সাথে প্রাসঙ্গিক কোন প্রযুক্তি গুলো আমাদের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেই। ফলে নতুন প্রয্ুিক্ত সম্প্রসারণ আমাদের জন্য সহজ হয়েছে। যেমন, পরামর্শ নিতে আসা সকল কৃষকদের তেল জাতীয় ফসল সরিষা ও সূর্যমুখী চাষের ব্যাপারে বলা হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, গত বোরো মৌসুমে মাঝামাঝি মার্চ মাসে প্রান্তীয় কৃষি ক্লিনিক যাত্রা শুরু করে। বর্তমানে, প্রতিটি কৃষি বøকে একটি করে ২৭ টি ক্লিনিক চালু আছে। প্রতিদিন গড়ে ১৫-২০ জন কৃষক সেবা নেন। এখন প্রর্যন্ত ৪ হাজারের বেশি কৃষক প্রান্তীয় কৃষি ক্লিনিকের সেবা নিয়েছেন।
প্রান্তীয় কৃষি ক্লিনিক ধারণার পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নকারী অতিরিক্ত কৃষি অফিসার কৃষিবিদ বানিন রায় জানান, মূলত রোগ পোকা দমনে কৃষকদের কীটনাশক ডিলার নির্ভরতা ও অনুমান নির্ভর সার প্রয়োগ পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনতে প্রান্তীয় কৃষি ক্লিনিক কাজ করছে। ফলশ্রুতিতে বেশ কিছু পার্শ্ব সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে। যেমন, নিরাপদ ফসল উৎপাদনের মাধ্যমে কৃষক ও ভোক্তার স্বাস্থ্য সুরক্ষা, আমদানিকৃত সার ও কীটনাশকের অপচয় রোধ, সঠিক বালাই ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে উৎপাদন বৃদ্ধি। সেই সাথে সেবা নিতে আসা কৃষকের নতুন প্রযুক্তি গ্রহণে আগ্রহও বেশি থাকে, যা প্রযুক্তি সম্প্রসারণে ব্যাপক সহায়ক।
Copyright © 2025 Daily Frontier News | Design & Developed By: ZamZam Graphics