কুমিল্লা প্রতিনিধি।।
কুমিল্লায় ব্যাঙের ছাতার মতো অবৈধ ক্লিনিক আর হাসপাতাল বাড়ছেই।
কুমিল্লায় দিনের পর দিন ব্যাঙের ছাতার মতো বেড়েই চলেছে বৈধ-অবৈধ ক্লিনিক আর বেসরকারি হাসপাতাল। এতে মানহীন চিকিৎসা ব্যবস্থার কারণে ক্লিনিক ও বেসরকারি হাসপাতাল নিয়ে মানুষের মাঝে অসন্তোষ বাড়ছে।
কুমিল্লা জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে সর্বোচ্চ দুইশ’ মিটার দূরে কুমিল্লা মেট্রোপলিটন হসপিটাল। কুমিল্লা জেনারেল হাসপাতালের সামনে এই হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা সেবা দেওয়ার বৈধ কাগজপত্র পায়নি ভ্রাম্যমাণ আদালত ও স্বাস্থ্য বিভাগ। এই হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারকে ব্যবহারের অযোগ্য বলে ঘোষণা করে সিলগালা করা হয়েছে। এ হাসপাতালে একদিন আগেও করা হয়েছে এক প্রসূতি মায়ের অস্ত্রোপচার। নবজাতক শিশুসহ ওই মাকে আবার রাখা হয়েছে অপারেশন থিয়েটারের লাগোয়া অস্বাস্থ্যকর কেবিনে।
যে হাসপাতালটিকে এত অনিয়মের অভিযোগে সিলগালা করা হলো, সেই হাসপাতালেই চিকিৎসা দিতে আসেন কুমিল্লার নামকরা চিকিৎসকরা। স্বাস্থ্য বিভাগের অভিযানে প্রতিষ্ঠানটি সিলগালা করার পাশাপাশি কর্তৃপক্ষকে দুই লাখ টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
নগরীর মেডিকন স্পেশালাইজড হাসপাতাল। হাসপাতালে নিয়মিত হয় অস্ত্রপচার। ভর্তি আছে রোগী। আছে ইমার্জেন্সি বিভাগও। গত এক বছর ধরে কুমিল্লা নগরীর বাদুরতলা এলাকার এই হাসপাতালে কার্যক্রম চলছে। কিন্তু এই হাসপাতালের কোনো কাগজপত্রই নেই। না আছে অনুমতি। শুধুমাত্র মেশিনপত্র কিনেই হাসপাতাল নাম দিয়ে এর কার্যক্রম চলমান। ডেঙ্গু পরীক্ষাসহ প্রায় সকল ধরনের স্বাস্থ্য পরীক্ষায় সরকার অনুমদিত মূল্যের তুলনায় বেশি নেওয়ার প্রমাণও পাওয়া গেছে।
সরেজমিনে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায় যে, হাসপাতালের জরুরি বিভাগে দুইটি বেড রেখেই সামনে ইমার্জেন্সি সিল লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেখানেই আছে একটি অক্সিজেন সিলিন্ডারও। তবে হাসপাতালের ফার্মেসির কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়াও হাসপাতালের যেসকল সরঞ্জাম থাকার কথা তার পর্যাপ্ত ছিল না। যে কারণে এক লাখ টাকা জরিমানা ও হাসপাতালের সকল বিভাগসহ হাসপাতাল সিলগালা করা হয়েছে।
অভিযান পরিচালনা করেন কুমিল্লা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অতীশ সরকার। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, কুমিল্লা জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার ডা. মো. মেহেদী হাসান (এমওসিএস) ও ডা. মো. আবদুল কাউয়ুম (এমও কোর্ডিনেটর)।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার মো. মেহেদী হাসান জানান, মেডিকন হাসপাতালের কোনো অনুমতিপত্র নেই। তারা অনুমতি ছাড়াই রোগী ভর্তি, পরীক্ষা ও অস্ত্রপচার করে যাচ্ছিল। এছাড়াও তারা সকল পরীক্ষার দামও বেশি রাখে।
জরুরি বিভাগের ভেতর শুধু দুইটা বেড ছাড়া আর কিছুই নেই। এমন অনিয়মের কারণে তাদের জরিমানা করা হয়েছে।
এছাড়া মেট্রোপলিটন হাসপাতালের অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ ও রোগী দেখার দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক না থাকাসহ নানান অভিযোগে হাসপাতালটিকে সিলগালা এবং দুই লাখ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে।
Copyright © 2023 Daily Frontier News | Design & Developed By: ZamZam Graphics