Daily Frontier News
Daily Frontier News

নাঙ্গলকোট উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ইউসুফ ভূঁইয়া’র জাল সার্টিফিকেটের চাঞ্চল্যকর তথ্য ফাঁস !

 

 

জামাল উদ্দিন স্বপন কুমিল্লা প্রতিনিধি :-

 

জাল সার্টিফিকেটে কলেজের গভর্ণিং কমিটির সভাপতি হতে গিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য ফাঁস হয়েছে নাঙ্গলকোট উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ ইউসুফ ভূঁইয়া’র। এলাকায় তিনি এখন হাসির পাত্রে পরিণত। অনেকেই উপহাস বলতে শুনা যাচ্ছে ”বোবা চেয়ারম্যান” ধরা পড়েছে। বোবা উপাধি জানতে চাইলে কৌতুহলীরা বলেন, ছাত্রলীগের সভাপতি থেকে একলাফে দু’দফা উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান। সরকারী সুযোগ সুবিধা সব তার। তিনি এখন শতকোটি টাকার মালিক, ক্ষমতার মধু আহরণে ঘাড়ে ও গলার থুতলিতে মাংস বেড়ে যাওয়ায় গলার স¦র অনেক অস্পষ্ট। তাই মুখে কথা না বলে হাত ও চোখের ইশারায় কুশালাদি জানতে চায় । এজন্য কৌতুহলীরা উপাধি দিয়েছে ”বোবা চেয়ারম্যান”। এখন যে প্রতিষ্ঠান থেকে এইচএসসি পাস করেছে অর্থাৎ হোমনাবাদ আদর্শ ডিগ্রী কলেজের গভণিং বডির সভাপতি হতে গিয়েই এই এমএ পাশ জাল শিক্ষা সনদের তথ্য ফাঁস !
সরকারী সার্কুলারে বলা আছে কলেজ প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডি’র সভাপতি হতে হলে প্রার্থীকে অবশ্যই ডিগ্রী পাশ হতে হবে। ভাইস চেয়ারম্যান ইউসুফ গ্রাফিক্স ডিজাইনের মাধ্যমে বন্ধ হওয়া প্রতিষ্ঠান দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয় নামে এমএ পাশ সাটিফকেট বানিয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে জমা করেন। তার দাখিলকৃত িিসর্টফিকেটের নমুনা দেখলে পরিস্কার বুঝা যায় ইহা ইউনিভার্সিটির ওয়েব সাইটে ডুকে ইমেজ থেকে ডাউনলোড করে নাম রিমুভার করে তার নাম বসিয়েছে। এলাকার সবাই জানে তিনি বই দেখে লেখার সুযোগ কোনো রকম টেনে টুনে এইচএসসি পাশ করেন। তার এমএ পাশ সার্টিফিকেট যে ভুয়া এটা নিশ্চিত জানার পরও সন্দেহ দূর করতে উক্ত কলেজের গভর্নিং বডি’র সভাপতি আওয়ামী লীগ নেতা এডভোকেট আবুল হাশেম তথ্য চেয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় আবেদন করেন। আবুল হাশেম জানেন, যেহেতু ইউসুফ তার নির্বাচনী হলফ নামায় শিক্ষাগত যোগ্যতা উল্লেখ করেছেন এইচএসসি, এখন এমএ পাশ হয় কিভাবে ? এছাড়া ২০১৪ সালেও ইউসুফ উক্ত কলেজের সভাপতির পদ চেয়েছিল কিন্ত ডিগ্রী পাশ না হওয়ায় হতে পারেনি। অতএব, এটা তার জাল সার্টিফিকেট। আবেদনের প্রেক্ষিতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কাগজ পত্র সরবরাহ করে। সেখানে দেখা যায় দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়ের ইস্যুকৃত এমএ পাশ সার্টিফিকেট। যাহার রেজিস্ট্রেশন নং ১৫-ই-১১১০২২৬৫১২ কিন্তু এ বিশ্ববিদ্যালয় অনেক অগেই বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সন্দেহ আরো বেড়ে গেল। পরবর্তীতে সার্টিফিকেটের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য তিনি দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করেন। দরখাস্তে উল্লেখ ছিল, (১) জনাব এমডি ইউসুফ ভূঁইয়া কত সালে বা কোন সেশনে ভর্তি হয়েছিল এবং কতটি পরীক্ষা দিয়েছিলেন এবং কত তারিখে তিনি ভর্তি হইয়ছিলেন। (২) প্রতি সেশনে পাশ করিয়া থাকিলে তাহার প্রমাণ পত্র।( ৩) ক্লাশে তাহার রোল নং কত ছিল (৪) ভর্তির সময় তাহার শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ কি ছিল, ইত্যাদি ইত্যাদি। দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অনেক যাচাই বাচাই করে উল্লেখিত তথ্য উপাত্তের কোনও রেকর্ডে খুঁজে না পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাদের প্যাডে লিখিতভাবে সাফ জানিয়ে দেন যে, তাদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এ সনদ ইস্যু করা হয়নি। এতে আরো নিশ্চিত প্রমাণিত হয় ইহা সম্পূর্ন জাল সার্টিফিকেট। এ খবর প্রচার হলে ভাইস চেয়ারম্যান ইউসুফ দিকবিদিক শূন্য হয়ে কলেজের গভনিং বডি’র সভাপতি এডভোকেট আবুল হাশেমকে জীবননাশের হুমকি দেন। জীবনের নিরাপত্তা ও হুমকি দাতা ভাইস চেয়ারম্যান এমডি ইউসুফ ভ’ঁইয়ার বিরুদ্ধে পল্টন মডেল থানা, ডিএমপি, ঢাকায় সাধারণ ডায়েরী করেন। যাহার নং ৬৩৩। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, জিডি’র তদন্ত চলছে। হুমকি প্রমান হলে তার বিরুদ্ধে রেগুলার মামলা হবে।
ভাইস চেয়ারম্যান এমডি ইউসুফ ভূঁইয়া’র মুঠো ফোনে জাল সার্টিফিকেটের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তার সার্টিফিকেট জাল নয়। এ কথা বলে তিনি ফোন কেটে দেন।
আইন বিশেজ্ঞরা বলেন, জাল সার্টিফিকেট প্রদর্শনের দায়ে ইউসুফ ভূঁইয়া’র বিরুদ্ধে জাল জালিয়াতির মামলা হলে তার ভাইস চেয়ারম্যান পদ চলে যাওয়া সহ জেল জরিমানা হবে।

Daily Frontier News