বুলবুল আহমেদঃ-
গত ৫ মার্চ ২০২৩ ইংরেজি রবিবার রাত অনুমান ১টা ১৫ মিনিটের সময় ইসলামী বক্তা হযরত মাওলানা মুফতি শরীফুল ইসলাম নুরী (৩৮)। তিনি বিজয়নগর থানাধীন দৌলতবাড়ী দরবার শরীফের মাহফিল শেষে তার পরিচিত এক জনসহ মোটরসাইকেল যোগে বাড়ী ফেরার পথে ঘটনাস্থল তথা ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া থানাধীন ৪নং আখাউড়া উত্তর ইউপিস্থ রামধননগর গ্রামের রামধননগর রেলক্রসিং এর উত্তর পাশে জনৈক মোঃ মনির হোসেন এর মায়ের দোয়া নামক নার্সারীর সামনে পাকা রাস্তার উপর
পৌছামাত্র ধৃত আসামীসহ অন্যান্য অজ্ঞাতনামা আসামীরা মাওলানা ও তার সহযোগী ব্যক্তির উপর হত্যার উদ্দেশ্যে অতর্কিত ভাবে আক্রমন করে। আসামীরা মাওলানার মুখে আঘাত করলে জিহ্বা কেটে দেয় এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে কাটা রক্তাক্ত গুরুতর জখম করে। আসামীরা মাওলানার সাথে থাকা ব্যক্তিকেও এলোপাতারি মারধর করে গুরুতর জখম করে তাদের ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটিও
ভাংচুর করে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। পরবর্তীতে, আশপাশের লোকজন এসে তাদেরকে উদ্ধার করে আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ইসলামী বক্তা মাওলানা শরীফুল ইসলাম নুরীর অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে প্রথমে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে এবং পরবর্তীতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করেন।
উক্ত ঘটনায় মাওলানার চাচা মোঃ আব্দুল বাছির ভুইয়া (৫৫) বাদী হয়ে দুই জনসহ অজ্ঞাতনামা ৫/৭
জনের বিরুদ্ধে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া থানায় গত ৫ মার্চ ২০২৩ ইংরেজি তারিখে একটি হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করেন। মামলা নাম্বার
৪, ধারা- ১৪৩/ ৩৪১/ ৩২৩/ ৩২৫/ ৩২৬/ ৩০৭/ ৪২৭/৫০৬ পেনাল কোড।
চাঞ্চল্যকর এ ঘটনাটি মিডিয়ার মাধ্যমে ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ দেশব্যাপী ব্যাপক আলোচনার পাশাপাশি সমালোচনার ঝড় ওঠে। এরই প্রেক্ষিতে আসামীদেরকে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে র্যাব চাঞ্চল্যকর এই ঘটনার ছায়া তদন্ত শুরু করে এবং গোয়েন্দা তৎপরতা ব্যাপকভাবে জোরদার
করে। এক পর্যায়ে র্যাব গোয়েন্দা তথ্য ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় হত্যাচেষ্টার সাথে জড়িত আসামীদের অবস্থান সনাক্ত করতে সক্ষম হয়। এরই ধারাবাহিকতায় প্রাপ্ত গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র্যাবের একাধিক আভিযানিক দল গতকাল ৭ মার্চ ২০২৩ ইংরেজি তারিখে চট্টগ্রাম জেলা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে সন্ধ্যায় ১ জন এজাহারনামীয় আসামীসহ মোট ৪(চার) জন আসামীকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিরা হলো, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগর থানার শ্রীপুর গ্রামের মৃত হেলিম ভূইয়ার পুত্র এজহারনামীয় আসামী জাকির হোসেন জাক্কু (৪৮), একই গ্রামের হাজী আমির আলী ভূইয়ার পুত্র মাহবুবুল আল শিমুল (৩৩), একই উপজেলার চাওড়া দৌলতবাড়ী গ্রামের আব্দুর রহমানের পুত্র সুমন (৩৫) ও কুমিল্লা জেলার দেবিদ্বার থানার বিংলা বাড়ি গ্রামের মৃত শেবি মিয়ার পুত্র আমিরুল ইসলাম, তার বর্তমান টিকানা ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগর থানার চাওড়া দৌলতবাড়ী গ্রামে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে উক্ত মামলার ঘটনার সম্পর্কে জানা যায় যে, ইসলামী বক্তা
মাওলানা শরীফুল ইসলাম নুরীর উক্ত দিনের বক্তব্যের কিছু অংশ আসামীদের কাছে গ্রহণ যোগ্য মনে হয় নাই এবং সেই বক্তব্যে তার উপর তারা ক্ষিপ্ত হয়ে মাওলানার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবার সিদ্ধান্ত নেয় তারা। যার ফলশ্রুতিতে উরস থেকে ফেরার পথে আসামীরা তাদের উপর অতর্কিত হামলা করে। হামলার করে মাওলানার জিহ্বা কেটে ফেলে এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে কাটা রক্তাক্ত গুরত্বর জখম করে।
পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে গ্রেফতারকৃত আসামীদেরকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন, সিলেট র্যাব-৯ এর মিডিয়া অফিসার সিনিয়র এএসপি আফসান- আল- আলম।
Copyright © 2025 Daily Frontier News | Design & Developed By: ZamZam Graphics