নাঙ্গলকোট প্রতিনিধি কুমিল্লা
কুমিল্লার নাঙ্গলকোট ইসলামিক ফাউন্ডেশনের (ইফা) উপজেলা কর্মকর্তা (ফিল্ড সুপারভাইজার) মনিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে নিয়মিত অফিস না করা, নিয়োগ বাণিজ্যসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়, ২০০২ সালে প্রতিষ্ঠিত নাঙ্গলকোট উপজেলা মডেল পাঠাগার মসজিদ ও মক্তবভিত্তিক শিশু গণশিক্ষা কার্যক্রম ইসলামি ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ। এর দায়িত্বে থাকা ফিল্ড সুপারভাইজার মনিরুল ইসলাম ১৬তম গ্রেডে সরকারি সুযোগ-সুবিধা ভোগ করেন। তিনি প্রতি সপ্তাহে এক দিন এসে পুরো সপ্তাহের স্বাক্ষর করেন উপস্থিত হাজিরা খাতায়।
সর্বশেষ গত মঙ্গলবার উপজেলা ইসলামিক ফাউন্ডেশন অফিসে গিয়ে দেখা যায় উপস্থিতির হাজিরা খাতায় তিন দিনের স্বাক্ষর নেই তার। পরে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মনিরুল ইসলাম সপ্তায় এক দিন অফিসে এসে হাজিরা খাতায় পুরো সপ্তাহের স্বাক্ষর করেন। এভাবে তিনি মাসে চার দিন বা পাঁচ দিন অফিস করেন। বিশেষ কোনো কাজ থাকলে আরও দুয়েক দিন বাড়তি অফিস করেন। এভাবে অফিস ফাঁকি দিয়ে প্রতি মাসের বেতন-ভাতা উত্তোলন করেন তিনি।
খোঁজ নিয়ে আরও জানা যায়, পার্শ্ববর্তী লাকসাম উপজেলার খন্দকার মার্কেটে ন্যাশনাল হোমিও ফার্মেসি নামের একটি দোকান নিয়ে ব্যবসা করে আসছেন মনিরুল। অফিস ফাঁকি দিয়ে নিজ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে সময় দিচ্ছেন তিনি। পাশাপাশি একটি হারবাল কোম্পানিতেও চাকরি করেন। সেই সঙ্গে জমি ক্রয় বিক্রয়ের ব্যবসায়ের সঙ্গেও জড়িত রয়েছেন বলে জানা যায়।
উপজেলা অফিস সূত্রে আরও জানা যায়, পুরো উপজেলায় ২০৩টি মক্তবভিত্তিক শিশু গণশিক্ষা কেন্দ্র রয়েছে। যা ৮২ জন মহিলা ও ১২১ জন পুরুষ শিক্ষক দিয়ে চলছে। প্রতি শিক্ষক মাসিক বেতন ভাতা ৫ হাজার টাকা করে পাচ্ছেন। আর এ শিক্ষক নিয়োগেও রয়েছে তার ‘বাণিজ্য’।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষক বলেন, মক্তবভিত্তিক শিশু গণশিক্ষায় শিক্ষক নিয়োগে উপজেলা কর্মকর্তাকে ১০ হাজার টাকা দেওয়া লাগে। না হয় তিনি ‘নিয়োগ হবে না’ বলে টালবাহানা করেন। তাই আমরা তাকে টাকা দিয়ে কেন্দ্র আনি।
এ বিষয়ে নাঙ্গলকোট উপজেলা মডেল পাঠাগার ও ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ ফিল্ড সুপারভাইজার মনিরুল ইসলাম বলেন, প্রতিদিন অফিস করি। অফিসের পর লাকসামে হোমিও ফার্মেসিতে প্র্যাকটিস করি। নিয়োগ বাণিজ্যের বিষয়টি সম্পূর্ণ ‘মিথ্যা।’ আমাদের জেলা অফিসে কাজ থাকে, সে জন্য জেলা অফিসে যেতে হয়।
নাঙ্গলকোট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রায়হান মেহেবুব বলেন, ঘটনাটি জেনেছি। তার বিরুদ্ধে তদন্ত করে সত্যতা পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কুমিল্লা জেলা ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপ পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, মাঝেমধ্যে জেলা অফিসে একটু কাজ থাকলে বা মিটিং থাকলে আমরা তাদের ডাকাই। আর নয়তো সে ফিল্ডে কাজ করবে। গত রবিবার, সোমবার ও মঙ্গলবার জেলা অফিসে কোনো কাজ ছিল না। কি জন্য সে অফিসে আসেনি তা জানা নেই। তার বিরুদ্ধে ডকুমেন্টদারি অভিযোগ দিলে তদন্ত করে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারি।
Copyright © 2023 Daily Frontier News | Design & Developed By: ZamZam Graphics